1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাউপ্টশুলে থেকে প্রফেসর

সোলা হ্যুলসেভিগ/আরবি১ মার্চ ২০১৪

জার্মানিতে বিদেশি বংশোদ্ভূত প্রফেসর বা অধ্যাপকের সংখ্যা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ অবশ্য অভিবাসীদের পক্ষে প্রফেসরের পদটি হাতে পাওয়া তেমন সহজ নয়৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত আহমেত টোপ্রাক-এর পক্ষেও এই পথটি মসৃণ ছিল না৷

https://p.dw.com/p/1BHUg
Frauenstudiengänge in MINT-Fächern
ছবি: HTW Berlin/Alexander Rentsch

কিছুদিন আগে রেডিওতে আহমেত ট্রোপাকের ইন্টারভিউ শুনে এক মহিলা রেডিও স্টেশনে ফোন করে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান৷ কেন না, তাঁর সন্দেহ হচ্ছিল ব্যক্তিটি আহমেত ট্রোপাক কিনা৷ এই মহিলা হাউপ্টশুলেতে তাঁর শিক্ষিকা ছিলেন৷ সাধারণত অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া ছেলে-মেয়েরাই পড়াশোনা করে হাউপ্টশুলেতে৷

সিস্টেমে ভুল'

আহমেত তাঁর প্রাক্তন ক্লাস টিচারকে চিনতে পারেন, স্মরণ করতে পারেন তাঁর নামটাও৷ কিন্তু শিক্ষিকার সন্দেহ যায় না৷ তিনি বলেন, হয়ত সিস্টেমে ভুল হয়েছে৷

আজ সেই ‘সিস্টেমের ভুলই' ডর্টমুন্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর৷ যিনি নিজের অফিসে বসে দৃষ্টি ছড়িয়ে দিতে পারেন ক্যাম্পাসে৷ দীর্ঘ সাত বছর ধরে শিক্ষাবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন তিনি৷

আহমেত টোপ্রাকের বয়স ৪৩৷ তুলনামূলক কম বয়সি৷ অবশ্য বিদেশি বংশোদ্ভূত প্রায় ৫০০০ প্রফেসরের গড় বয়স এটা৷ একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বিদেশি বংশোদ্ভূত অধ্যাপকদের বয়স ৪০ থেকে ৫৫-এর মধ্যে৷ গণিত ও বিজ্ঞানেই তাঁদের হার বেশি৷ এক পঞ্চমাংশ ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে কর্মরত৷

প্রফেসর হতে হলে অভিবাসী আবেদনকারীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়৷ ‘‘আমাদের সমীক্ষায় এই প্রথম এই বিষয়ে বিদেশি বংশোদ্ভূতদের নিয়ে জরিপ চালিয়েছি৷'' বলেন সমীক্ষার পরিচালক আইলা নয়সেল৷

নিজেও ভাবতে পারেননি

আহমেত নিজেও ভাবতে পারেননি যে, একদিন প্রফেসর হবেন৷ তুরস্ক থেকে ১০ বছর বয়সে এক ভাইয়ের সঙ্গে জার্মানির কোলন শহরে পা রাখেন আহমেত৷ বাবা-মা ও আরো চার ভাই বোন আগে থেকেই জার্মানিতে ছিলেন৷

অন্যান্য অতিথি শ্রমিকের সন্তানদের মতো যথারীতি হাউপ্টশুলেতে ভর্তি হন আহমেত৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সেখানে কিছুটা জার্মান ভাষা শেখা হয়, কিন্তু আসল লক্ষ্য হলো এক সময় যার যার দেশে ফিরে যাওয়া৷'' আহমেতের ক্ষেত্রে তা হলো তুরস্কে৷

স্কুল শেষ করে শিক্ষানবিশের কাজ করার সুযোগ পান ফোর্ড-কারখানায়৷ যেখানে বাবাও কাজ করতেন৷ কিন্তু আহমেত তা প্রত্যাখ্যান করেন৷ এর পরিবর্তে ১৫ বছরের এই কিশোর তুরস্কে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ সেখানে গিমনাসিয়ুম বা হাইস্কুলে ভর্তি হন৷ পাশ করেন আবিট্যুর৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷ যে সময় পাশের হার ছিল মাত্র ১৮ শতাংশ৷

আঙ্কারায় ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এই উদ্যোগী তরুণ৷ কিন্তু এক সেমিস্টার পর মা-বাবার কাছে জার্মানিতে চলে আসেন আবার৷ প্রথমে বন ইউনিভার্সিটিতে যাত্রা শুরু হয়৷ তারপর রেগেন্সবুর্গে শিক্ষাবিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন৷ এরপর ওপরে ওঠা আর থেমে থাকেনি৷ শেষ করেন ডক্টরেট৷ তারপর ১০৯ জন আবেদনকারীকে পেছনে ফেলে পেয়ে যান প্রফেসরের পদ৷

সমাজকর্মী হিসাবে যাত্রা শুরু

অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তাটা সে সময় তাঁর মাথায় ছিল না৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষে প্রথমে সমাজকর্মী হিসাবে কাজ করেন আহমেত৷ এই সময় হামবুর্গের এক প্রফেসরের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর৷ তিনি তাঁকে ডক্টরেট করার পরামর্শ দেন৷

প্রফেসর আহমেত ট্রোপাক নিজের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও সংশয় সম্পর্কে খোলাখুলি কথা বলেন৷ আজ ফাতমার মতো অন্যান্য অভিবাসী ছেলে-মেয়েদের আদর্শ তিনি৷ তুর্কি মা বাবার সন্তান ফাতমা৷ মা গৃহবধূ, বাবা শ্রমিক৷ ‘সোশ্যাল ওয়ার্কে' পড়াশোনা করছেন এই তরুণী৷ ব্যাচেলরের থিসিস প্রফেসর ট্রোপাকের কাছেই করতে চান তিনি৷

‘‘আমার বিশ্বাস যে কোনো ছোটখাট ব্যাপারেই তাঁর কাছে ছুটতে পারবো৷ অন্যান্য প্রফেসরের চেয়ে তাঁর কাছে যেতে সাহসও পাবো'', জানান এই ছাত্রী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য