1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাত, পা কাটা গেলে - গজিয়ে নিলেই তো হয়!

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১

এ’কথা বলতে পারে যে জীব, সেই স্যালামান্ডার বা ‘আগ্নেয়গোধা’ একটি গিরগিটি সদৃশ উভচর জীব৷ তাকে নিয়েই গবেষণা চলেছে জার্মানির হ্যানোভারে৷

https://p.dw.com/p/10QSz
‘আগ্নেয়গোধা’ছবি: picture alliance/dpa

আগ্নেয়গোধা বলতে বোঝায় ফায়ার স্যালামান্ডার৷ তার এক অতি গোবেচারা ভালোমানুষের মতো দেখতে মেক্সিকান জ্ঞাতি আছে, ইনি হলেন মোল স্যালামান্ডার বা ছুছুন্দরী স্যালামান্ডার, মেক্সিকান নাম জলজ এ্যাক্সোলটল৷

নামে কিবা এসে যায়! কিন্তু এই জীবটি এমনি অত্যাশ্চর্য, যে দেখবেন নাম মনে রাখতে কোনো অসুবিধাই হচ্ছে না৷ কেননা এর পা কিংবা ল্যাজ খোয়া গেলে এর কিছুই আসে যায় না৷ হারানো প্রত্যঙ্গটির জায়গায় একটা নতুন প্রত্যঙ্গ গজায়৷ কোনো কাটাছেঁড়ার দাগ থাকে না৷ এমন কি হৃৎপিণ্ড, মেরুদণ্ড কিংবা মাথার ঘিলুতে চোট পেলেও তা' একই ভাবে সারিয়ে নিতে পারে এ্যাক্সোলটল৷

কাট্রিন রাইমার্স-ফাধলাউই হলেন হ্যানোভার মেডিকাল কলেজের মলিকিউলার বায়োলজিস্ট৷ তিনি বলেন, এ্যাম্বিস্টোমা মেক্সিকানুম, অর্থাৎ এ্যাক্সোলটল'এর নাকি কোনোদিন পক্ষাঘাত হয় না৷ এই গিরগিটি এবং ছুঁচো সদৃশ জীবটি একটা গোটা মেডিকাল কলেজকে শুধু তাকে নিয়ে গবেষণা করার জন্য একটা বিভাগ খুলতে বাধ্য করেছে৷ সেখানে যেমন প্লাস্টিক সার্জন'রা আছেন, যেমন নিরাময় ভেষজ শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞরা আছেন, তেমন আছে ৭০ থেকে ৮০টা মোল স্যালামান্ডার৷

বড় ন্যাওটা এই মোল স্যালামান্ডারগুলি, বললেন ক্রিস্টিনা আলমেলিং, যিনি তাদের বংশবৃদ্ধির দায়িত্বে৷ খাবার সময় তাদের হাত-পা তোলা দেখলে মনে হবে যেন হাত নাড়ছে৷ অথচ এমন নিরীহ জীবটারই অস্তিত্ব মুক্ত প্রকৃতিতে প্রায় লোপ পেতে বসেছে৷ অন্যদিকে রয়েছে তাদের ঐ নিজেকে মেরামত করে নেওয়ার আশ্চর্য ক্ষমতা, যা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের ক্ষত সারাতে সাহায্য করতে পারে, বললেন শল্যচিকিৎসক বিয়র্ন মেঙ্গার৷

Operation, Chirurgie
স্যালামান্ডারদের শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে নাছবি: AP

হ্যানোভারের গবেষকরা দেখেছেন, স্যালামান্ডারের ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়৷ এর পরে ক্ষত সারার প্রক্রিয়াটা বুঝতে গিয়ে তারা এ্যালোক্সে বলে একটি এনজাইমের খোঁজ পেয়েছেন৷ সেল কালচার করে দেখা গেছে, এই এনজাইমটি ত্বকের কোষগুলোর প্রজননের ক্ষমতা লক্ষণীয়ভাবে বাড়িয়ে দেয়৷ এখন ভাবা হচ্ছে মানুষদের জন্য এই এনজাইমবাহী একটি লোশন সৃষ্টির কথা - যদিও তা'তে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে৷

গবেষকদের ধারণা যে, এ্যাক্সোলটল যা করে, সে ক্ষমতা মানবের জিনেও কোথাও না কোথাও লুকিয়ে আছে৷ নয়তো মায়ের পেটে বাচ্চারা কোনো রকম দাগ না রেখেই তাদের আঘাত সারায় কি করে?

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়