1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাসিখুশি থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০

মুখ ভার করে থাকার চেয়ে হাসিখুশি থাকুন৷ হৃদরোগের ভয় বেশ কমে যাবে৷ হৃদযন্ত্রের সাথে আবেগের এমনই সম্পর্ক নিয়ে এটিই প্রথম পর্যবেক্ষণ দাবি করে বিজ্ঞানীরা জানালেন এই খবর৷

https://p.dw.com/p/M710
ফাইল ছবিছবি: DW-TV

‘ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল'-এ প্রকাশিত নিবন্ধে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের কারিনা ডেভিডসন লিখেছেন, ‘‘এই বিষয়ে এখন নিবিড়ভাবে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে৷ এর মাধ্যমে যদি আমাদের পর্যবেক্ষণ সত্য প্রমাণিত হয়, তবে আমাদেরকে বিশেষভাবে নির্ধারণ করতে হবে যে, পরিস্থিতি উন্নয়নে রোগী কিংবা চিকিৎসকের জন্য কী করণীয়৷''

ডেভিডসন এবং তাঁর গবেষক দলের সদস্যরা দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্যানাডার একটি স্বাস্থ্য সমীক্ষা কেন্দ্রে এক হাজার সাত শ' ঊনচল্লিশ জন নারী-পুরুষের উপর এই বিষয়ে গবেষণা চালান৷ এসময় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা হৃদরোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির উপর হতাশা, শত্রুতা, উত্তেজনার মতো নেতিবাচক আবেগ এবং সুখ, আনন্দ, উল্লাস, আগ্রহ এবং পরিতৃপ্তির মতো ইতিবাচক আবেগ-অনুভূতির প্রভাব বিশেষভাবে নিরূপণ করতেন৷

প্রত্যেক সূচকে ২২ শতাংশ ঝুঁকি হ্রাস

গবেষকরা এসব ইতিবাচক আবেগ-অনুভূতিগুলোকে শূন্য থেকে পাঁচ পর্যন্ত সূচকে চিহ্নিত করেছিলেন৷ তাঁরা লক্ষ্য করেছেন যে, প্রত্যেক সূচকের জন্য হৃদরোগের ঝুঁকি ২২ শতাংশ হারে কমে গেছে৷ গবেষক দলের প্রধান ডেভিডসন জানান, তাঁর গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, ইতিবাচক আবেগ-অনুভূতিগুলো বৃদ্ধির মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘যাদের আদৌ ইতিবাচক প্রভাবক তথা আবেগ নেই তারা অল্প ইতিবাচক আবেগ সম্পন্ন ব্যক্তিদের চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং দ্বিতীয় সারির ব্যক্তিরা মধ্যম মাত্রার ইতিবাচক আবেগ সম্পন্ন ব্যক্তিদের চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছে৷''

Grafik Herzkranzgefäße Kreislaufsystem
ফাইল ছবিছবি: picture alliance/OKAPIA KG

হৃদরোগের সাথে বুদ্ধিমত্তা এবং আয়ের সম্পর্ক

এতদিন যাবত ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, বংশগত ধারাবাহিকতা এবং উচ্চ রক্তচাপকে হৃদরোগের জন্য প্রধানত দায়ী করা হতো৷ কিন্তু এই গবেষণায় বুদ্ধিমত্তা এবং আয়ের পরিমাণের সাথেও হৃদরোগের ঝুঁকির সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়েছে৷ এমনকি গত সপ্তাহে প্রকাশিত গবেষণার ফলাফলে হৃদরোগের জন্য ধূমপানের পরেই প্রভাবক হিসেবে বুদ্ধিমত্তার স্থান বলে দেখা গেছে৷ ডেভিডসন এবং তাঁর সহযোগী গবেষকরা মনে করছেন যে, হাসি-খুশি ব্যক্তিরা বেশি সময় ধরে বিশ্রাম নিতে পারে বলেই সম্ভবত তারা দ্রুত যে কোন কষ্টকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে পারে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে৷

ব্রিটিশ গবেষকদেরও একই মত

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনও এই গবেষণা ফলাফলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে জানিয়েছে যে, তারাও এই ধরণের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে৷ প্রসঙ্গত, ইউরোপ এবং আমেরিকাসহ বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশসমূহে সর্বাধিক নারী-পুরুষের মৃত্যুর জন্য হৃদরোগ দায়ী৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ সালে সারাবিশ্বে ৩২ শতাংশ মৃত্যু ঘটেছে ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের কারণে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী