1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হিমালয়ের উপর হাইটেক উড়াল

৩ মার্চ ২০১৬

মাউন্ট এভারেস্ট মানুষকে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে৷ তার টানে অনেকেই বিশাল ঝুঁকি নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে পড়েন৷ এবার জার্মান বিজ্ঞানীরা আকাশপথে এক অভিনব অভিযান চালিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এই পর্বত সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করেছেন৷

https://p.dw.com/p/1I5N6
Bildergalerie Extrem-Sportart
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Mohai

‘পৃথিবীর ছাদ' বলে পরিচিত অঞ্চলে মোটরচালিত গ্লাইডার চালিয়ে যাওয়া সত্যি সাহসি আইডিয়া৷ ডানার নীচে দু'টি অংশে ক্যামেরা রাখার যথেষ্ট জায়গা রয়েছে৷ বিমানটি ভালোই উড়তে পারে৷ পেটার ডামান-এর তাই গর্ব ও আনন্দের শেষ নেই৷ ইঞ্জিনিয়ার ও পাইলট প্রোফেসর পেটার ডামান বলেন, ‘‘হিমালয় অভিযানের লক্ষ্য ছিল এক ঢিলে দুই পাখি মারা৷ একদিকে শক্তিশালী বিমানের প্রয়োজন ছিল৷ সেই বিমানকে আবার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাপের যন্ত্র ও ক্যামেরাও বহন করতে হবে৷ আমাদের কাছে সেটা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ৷ এটা ছিল আমাদের কাছে এক অনন্য সুযোগ, কারণ আমরা এভাবে এমন উড়ালের জন্য প্রয়োজনীয় গতিপথ ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারলাম৷''

বিমানে ছিল এই অভিযানের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এক থ্রিডি ক্যামেরা সিস্টেম, যা স্যাটেলাইটের চেয়েও নিখুঁতভাবে পরিমাপ করতে পারে৷ জার্মান এয়ারোস্পেস সেন্টার ডিএলআর-এর ইয়র্গ ব্রাউখলে সেটি তৈরি করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা এমন এক এরিয়াল ক্যামেরা সিস্টেম, যা খুব কঠিন পরিবেশেও কাজ করে৷ এর মধ্যে সরাসরি ছবির নিখুঁত অবস্থান নির্ণয় করতে ন্যাভিগেশন সিস্টেম রয়েছে৷ চারটি ক্যামেরা হেড রয়েছে, যার মধ্যে দু'টি নীচের দিকে চেয়ে রয়েছে – একটি ডানে, অন্যটি বামে৷ উঁচু অবস্থানেও কাজ করতে পারে, উচ্চ মানের এমন এক কম্পিউটার সিস্টেমও আছে৷ তাতে এক্সটার্নাল হার্ড ডিস্ক রয়েছে, যাতে বিমান অবতরণের পরই তা খুলে নেওয়া যায়৷''

একটি ম্যারাথন উড়ালের পর টিম এসে পৌঁছেছে৷ হিমালয়ের উপর দিয়ে ওড়ার জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল৷ গ্লাইডারের টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন ৮,০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত কাজ করে৷ অর্থাৎ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করার ক্ষমতা তার নেই৷ আরও উপরে উঠতে পাইলটদের উষ্ণ বায়ুর প্রবাহ কাজে লাগাতে হয়েছে৷ সেইসঙ্গে বিমানের গ্লাইডিং ক্ষমতারও সদ্ব্যবহার করতে হয়েছে৷ পাইলট ইয়োনা কাইমার বলেন, ‘‘এই উচ্চতায় পৌঁছনো ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জ৷ ইঞ্জিন চালু থাকা সত্ত্বেও বাতাসের প্রবাহ শনাক্ত করে তা কাজে লাগাতে হয়েছে৷ হিমালয় পর্বতের শৃঙ্গগুলির কাছে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতির বাতাস বইতে থাকে৷ দুই পাইলটের প্রত্যেকের জন্য দু'টি করে অক্সিজেনের ট্যাংক রাখতে হয়েছে, সঙ্গে ব্যাকআপ সিস্টেমও ছিল৷ সেই উচ্চতায় তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে গিয়েছে৷ তাই মানানসই গরম জামাকাপড় ও অন্তর্বাসও পরতে হয়েছে৷''

হিমালয়ে প্রথম উড়াল এই টিমের জন্য খুবই সফল হয়েছে৷ আদর্শ পরিবেশ পেলে অসাধারণ ছবি তোলারও সুযোগ পাওয়া যায়৷ পাইলটরা এমন অভিজ্ঞতা কোনোদিন ভুলতে পারবেন না৷ এই উড়ালের ফলে অভূতপূর্ব থ্রিডি মডেল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে৷ ফলে এবার আরও নিখুঁতভাবে ধস বা তুষার ধসের পূর্বাভাষ দেওয়া সম্ভব হবে৷ অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো যাবে৷ প্রোফেসর পেটার ডামান বলেন, ‘‘প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এই অভিযানের ফলাফল দেখে খুবই সন্তুষ্ট৷ আমাদের জন্য এ একেবারে নতুন ও ভালো জ্ঞান, এমন উড়াল থেকে যা পাওয়া যায়৷ এমন টিমের সঙ্গে, এমন সিস্টেম তৈরি করে, তা ওড়ার উপযোগী করে তুলে আমরা খুবই সমৃদ্ধ হয়েছি৷ এ সবের ফলে অসাধারণ পরিমাপ করা সম্ভব হয়েছে৷''

মাউন্ট এভারেস্ট সার্ভে করা সত্যি বিমান চলাচলের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য৷ সেইসঙ্গে সর্বাধুনিক ডিজিটাল সরঞ্জামের দৌড়ও দেখা গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান