1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হেলিকপ্টার থেকে বিদ্যুতের তার মেরামতি

২৭ জুন ২০১৭

মাঠেঘাটে ধাতব কাঠামোর উপর বিদ্যুতের লাইন আমাদের চেনা দৃশ্য৷ জার্মানির মতো শিল্পোন্নত দেশে বিশাল আকারে এমন লাইন দেখা যায়৷ সেই লাইন মেরামত করতে কাজ করেন দক্ষ হেলিকপ্টার পাইলট ও মিস্ত্রী৷

https://p.dw.com/p/2fRcW
BdT Deutschland Sternenhimmel und Hochspannungsleitung
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte

চরম উত্তেজনার মধ্যে শেষ প্রস্তুতি চলছে৷ এই দুই ব্যক্তি হেলিকপ্টার থেকে বিদ্যুতের তার মেরামত করবেন৷ শুধুমাত্র অতি দক্ষ পাইলট ও মিস্ত্রীরা এমন বিপজ্জনক কাজ করতে পারেন৷ কারণ হেলিকপ্টারকে তারের খুব কাছাকাছি অবস্থান নিতে হয়৷

জার্মানির বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক প্রায় ১৭ লক্ষ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে৷ বজ্রপাত অথবা ঝড়ের কারণে গাছের ধাক্কায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারের ক্ষতি হয়৷ তখন আকাশ থেকে মেরামতির প্রয়োজন পড়ে৷ হেলিকপ্টার পাইলট ক্রিস্টিয়ান ট্যুরোক বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় সমস্যা তখন দেখা দেয়, যখন হেলিকপ্টারটিকে ২০ সেন্টিমিটার ব্যাসের মধ্যে লাইনের কাছে স্থির রাখতে হয়৷ নির্দিষ্ট উচ্চতাও বজায় রাখতে হয়, যাতে মিস্ত্রী পিছনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ভালোভাবে কাজ সারতে পারেন৷’’

আজ তাঁরা পশু সুরক্ষার কাজে মন দিচ্ছেন৷ কারণ প্রায়ই পাখিরা সরু তার দেখতে পায় না৷ তাই সেখানে দৃশ্যমান কিছু চিহ্ন ঝুলিয়ে পাখিদের সতর্ক করে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে৷ বিশেষজ্ঞ মিস্ত্রী ক্রিস্টায়ান ইয়োহান বলেন, ‘‘পাখিদের সুরক্ষার জন্য প্রতি ২৫ মিটার অন্তর সবচেয়ে উপরের তারে বিশেষ ইউনিট রয়েছে৷ সাদা-কালো রংয়ের চিহ্ন ও তার নড়াচড়া পাখিরা স্পষ্ট দেখতে পেয়ে সতর্ক হতে পারে এবং ঠিক সময় তার এড়িয়ে উড়ে যেতে পারে৷’’

কাজ শুরুর আগে মিস্ত্রী টেলিফোনে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রকে গোটা প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়ে দেন৷ প্রত্যেকটি পদক্ষেপ নিপুণভাবে পরিকল্পনা করতে হয়, কারণ আদর্শ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার প্রয়োজন না পড়লেই ভালো৷

কনট্রোল সেন্টারে ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুতের লাইনের উপর নজর রাখা হয়৷ কোনো সমস্যা টের পেলেই প্রযুক্তিবিদদের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে হয়৷ ক্ষতিগ্রস্ত তারে বিদ্যুৎ বন্ধ করে অন্য লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ পাঠাতে হয়, যাতে দ্রুত মেরামতির কাজ করা যায়৷

হেলিকপ্টার ব্যবহারের সুবিধা হলো, এতে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করতে হয় না৷ দমকা বাতাস সত্ত্বেও কাজ বন্ধ থাকে না৷ এ ক্ষেত্রে টিমের মধ্যে নিখুঁত সমন্বয় অপরিহার্য৷ ১২০টি জায়গায় সাদা-কালো চিহ্ন লাগাতে হবে৷ হেলিকপ্টারের কয়েক মিটার নীচেই ৪ লক্ষ ভোল্ট ক্ষমতার বিদ্যুতের লাইন রয়েছে৷

পাইলটকে নিখুঁতভাবে শূন্যে হেলিকপ্টার স্থির রাখতে হয়৷ খুবই কঠিন কাজ সেটি৷ কারণ এত নীচে ওড়ার সময় হেলিকপ্টারের পাখা থেকে সৃষ্ট বাতাস জমিতে ধাক্কা খেয়ে আবার উঠে আসে৷

ক্ল্যাম্প-অন অ্যামমিটারের সাহায্যে মিস্ত্রী গ্রাউন্ড ওয়্যার ও হেলিকপ্টারের মধ্যে ভোল্টেজের ভারসাম্য রাখছেন, যাতে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হবার আশঙ্কা না থাকে৷ তবে আসল বিপদ হলো সেই তার৷ হেলিকপ্টারের কোনো অংশ তাতে আটকে গেলে সেটি ভেঙে পড়তে পারে৷

মিস্ত্রীকে যত দ্রুত সম্ভব কাজ করতে হয়৷ তারপর স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়ে৷ চিহ্ন লাগানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে৷ ক্রিস্টিয়ান ট্যুরোক বলেন, ‘‘এই কাজের সময় ঘাবড়ে গেলে বা আতঙ্কিত হলে চলবে না৷ এমনকি মিস্ত্রীর কাজের সময় অ্যামমিটার সরিয়ে নিতে হলে, ব্যবধান কম থাকলে অথবা দমকা বাতাস এলেও মাথা ঠান্ডা রেখে স্বাভাবিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে৷’’

এই টিমের জন্য পরের চ্যালেঞ্জ অবশ্যই আসবে৷ কারণ গোটা ইউরোপে খুব কম সংখ্যক মানুষ এই কাজ করতে পারেন৷