1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১ এপ্রিল ২০১৫

বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর কোনো ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়নি৷ তবে কারাগারে এক হাজারেরও বেশি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন৷ এদিকে, বিশ্বের যে ৫২টি দেশে এখনো মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি৷

https://p.dw.com/p/1F163
Seil mit Henkersknoten
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Endig

বুধবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, শাস্তি হিসেবে বিশ্বে ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়ার সংখ্যা বেড়েছে৷ ২০১৪ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ২,৪৬৬ - যা আগের বছরের তুলনায় শতকরা হিসেবে ২৮ ভাগ বেশি৷ মিশর ও নাইজেরিয়ায় গণবিচারে কয়েকশ মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ায় এই সংখ্যা বেড়েছে৷

তবে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সংখ্যা কমেছে৷ ২০১৩ সালে বিশ্বের ২২টি দেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে৷ শতকরা হিসেবে এক বছরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিমাণ কমেছে ২২ ভাগ৷ ২০১৪ সালে ৬০৭টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে৷

অ্যামনেস্টি বলছে চীনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার কারণে সেখানকার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হিসাব পাওয়া যায়না৷ চীন এই হিসাব প্রকাশ করে না৷

চীনের পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পাঁচটি শীর্ষ দেশ হলো ইরান, সৌদি আরব, ইরাক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সুদান৷ এইসব দেশে ২০১৪ সালে যথাক্রমে ইরানে ২৮৯, সৌদি আরবে ৯০, ইরাকে ৬১, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ ও সুদানে ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷

সন্ত্রাস দমনের নামে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে, যা আশঙ্কাজনক বলে মনে করে অ্যামনেস্টি৷ এই দেশগুলোর মধ্যে চীন, ইরান, ইরাক ও পাকিস্তান অন্যতম৷ পাকিস্তানে গতবছর সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে৷

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৯৮টি দেশ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে৷ এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও তার প্রয়োগ নেই এমন দেশের সংখ্যা ৪২টি৷ তাই বিশ্বের ১৪০টি দেশে এখন আর মৃত্যুদণ্ড নেই৷ সর্বশেষ মাদাগাস্কার মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করেছে৷

বাংলাদেশ পরিস্থিতি

বাংলাদেশ মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকা ৫২টি দেশের একটি৷ বাংলাদেশের কারাগারে এখন ১,২৪২ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন বলে জানা যায়৷

২০১৩ সালের পর বাংলাদেশে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন আইজি (প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিন৷ তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷

তবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ১৪২ জনেরও বেশি আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয় বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি৷ আর চলতি বছরে আরো অন্তত ২৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে বলে জানা গেছে৷

কারা অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এপর্যন্ত ৪২৮ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে৷ সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে এক বছরে সর্বোচ্চ ২৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷

মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা

বাংলাদেশে নরহত্যাসহ আরো কিছু গুরুতর অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী৷ কারণ আমরা মনে করি কোনো গুরুতর অপরাধের বিচারই মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে সম্ভব নয়৷ এতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় না এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়৷ প্রয়োজনে অপরাধীকে ৫০০ বছর কারাদণ্ড দেয়া যেতে পারে, তবে মৃত্যুদণ্ড নয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ড যে কোনো অপরাধের শাস্তি হতে পারে না তা আজ সারা বিশ্বে প্রমাণিত হচ্ছে৷ তাই বিশ্বে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড রহিতকারী দেশের সংখ্যা বাড়ছে৷ আমি আশা করি বাংলাদেশেও একদিন মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকবে না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য