1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আওয়ামী লীগে চলছে শুদ্ধি অভিযান

সমীর কুমার দে ঢাকা
২২ জুলাই ২০১৭

অতি উৎসাহী নেতাদের নিয়ে বিব্রত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড৷ সর্বশেষ বরগুনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করায় বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িকভাবে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2h0lE
প্রতীকী ছবিছবি: DW

গত মে মাস থেকেই শুদ্ধি অভিযান চলছে আওয়ামী লীগে৷ প্রত্যেকটি জেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠিয়ে দলে অনুপ্রবেশকারী নেতাদের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা এটা দেখভাল করছেন৷ তবে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রে কোন তালিকা আসেনি৷

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আমরা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছি৷ কারণ এসব অতিউৎসাহী নেতাদের কারণে দল অনেক সময় বিব্রত অবস্থায় পড়ে৷ সর্বশেষ, আমরা বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করেছি৷ জেলাগুলো থেকে তালিকা আসার পর অনুপ্রবেশকারী নেতা ও অতিউৎসাহী এবং যাদের কারণে দল অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷'' 

Hossain 22.07.2017.mp3 - MP3-Stereo

এই অতিউৎসাহী নেতাদের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও৷ গত শুক্রবার গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভায় অংশ নিতে যাওয়া নেতারা ইউএনও গাজী তারিক সালমনের প্রসঙ্গ তোলেন৷ এ সময় মামলার বাদী অ্যাডভোকেট সাজু সম্পর্কে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা নেতাদের বলেন, ‘‘তাঁর বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিন৷''

বঙ্গবন্ধুর আলোচিত ছবিটি দেখে প্রধানমন্ত্রী বিস্মিত হয়ে বলেন, ‘‘ক্লাস ফাইভের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এই কর্মকর্তা সুন্দর একটি কাজ করেছেন৷ এবং সেখানে যে ছবিটি আঁকা হয়েছে, তাতে বিকৃত করার মতো কিছু করা হয়নি৷ ছবিটি রীতিমতো পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য৷ এই কর্মকর্তাও পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য৷''

এদিকে, বরিশালের যে ঘটনা নিয়ে এত আলোচনা সেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী তারিক সালমন শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বরিশালের আগৈলঝাড়ার ইউএনও থাকাকালে কয়েকটি কঠোর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের কারণে ‘নাখোশ মহল বিশেষের ইন্ধনে' তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে ছবি দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্র তিনি ছাপিয়েছেন সেটা বিকৃত ছবি৷ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ওবায়েদ উল্লাহ সাজু এই মামলার বাদী৷ গত বুধবার এ মামলায় বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে আবেদন নাকচ করে তাঁকে হাজতে পাঠানো হয়৷ দু'ঘণ্টা পর আবার জামিন দেন একই বিচারক৷

Hanif 22.07.2017.mp3 - MP3-Stereo

অন্যদিকে, এই বিচারক নিজেই সার্কিট হাউজে সাত মাস থাকার পরও ভাড়া পরিশোধ করেননি৷ টাকা পরিশোধের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিচারককে চিঠি পাঠানো হলেও তিনি ইতিবাচক সাড়া দেননি৷ জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, চীফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক আলী হোসাইন সাত মাস সার্কিট হাউসে বাস করেছেন৷ এর মধ্যে ভাড়া দিয়েছেন কেবল পাঁচ দিনের৷ তিনি দীর্ঘদিন এখানে বাস করায় তাঁর কাছে ৯৩ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া পড়ে৷ এর জন্য তাকে চিঠিও দেয়া হয়েছিল৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘একটা দল অনেক দিন ক্ষমতায় থাকলে তাদের মধ্যে অতিউৎসাহী বা চাটুকর তৈরি হতে পারে৷ কিন্তু আশঙ্কার কথা হল স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাও প্রশাসনে কি পরিমান ভূমিকা রাখছেন৷ কারণ একজন ইউএনও'র বিরুদ্ধে মামলা হল আর বিচারক তাঁকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলেন৷ এটা কোন কথা হতে পারে না৷ মামলা হলেইতো একজন অপরাধী হয়ে যেতে পারেন না৷ এরতো তদন্ত হতে হবে৷''