1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আকায়েদ উল্লাহরা ঘুরে বেড়ায় ফেসবুকেও!'

১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

নিউ ইয়র্কের পোর্ট অথরিটি বাস টার্মিনালে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হন হামলাকারী৷ পরে পরিচয় উদ্ধারের পর জানা যায়, যুবকের নাম আকায়েদ উল্লাহ এবং সে বাংলাদেশের নাগরিক৷

https://p.dw.com/p/2pGLS
USA "Explosion" im New Yorker Stadtteil Manhattan
ছবি: Getty Images/B.R.Smith

আকায়েদের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা, জনসমাগমস্থলে বোমা হামলা, ধ্বংসাত্মক ডিভাইস ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ দায়ের করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা৷ অন্যদিকে, বাংলাদেশের পুলিশের পক্ষ থেকেও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ এ সব কিছুর মধ্যেই ‘আকায়েদ' ইস্যুতে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও৷

অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারিলিখেছেন, ‘‘এই আকায়েদ উল্লাহগুলো বিস্তর সংখ্যায় ঘুরে বেড়ায় ফেসবুকে! এগুলো মূলত অসভ্য এবং অর্ধ শিক্ষিত৷ কথায় কথায় ধর্মের দোহাই তুলে একে তাকে শাসায় সারাক্ষণ! একে তাকে নাস্তিক মুরতাদ ঘোষণা করে হুমকি দেয়! ....ফেসবুকের আকায়েদ উল্লাহদের শনাক্ত করুন, ধরুন, শূলে চড়ান৷ আকায়েদ উল্লাহদের উপদ্রব কমে আসবে৷ বাঁচবে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান৷''

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মেহেদি সাত্তারলিখেছেন, ‘‘আল্লাহর এই সৈনিক বাংলাদেশের বলে অসংখ্য বাঙালি খুব বিব্রত বোধ করছেন৷....আমার কিন্তু কিছুই মনে হচ্ছে না৷ কারণ আকায়েদ উল্লাহ বাংলাদেশের হলেও সে বাঙালি নয়৷ তাকে যদি জিজ্ঞেস করেন তাহলে সে নিজকে বাঙালি বলবে না; বরং বলবে, ‘আমি মুসলমান৷' শুধু আকায়েদ উল্লাহ নয়, বাংলাদেশের অন্তত ৪০ শতাংশ মানুষ নিজেদের মুসলমান হিসাবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করে৷ সুতরাং এই মুসলমানের জন্য লজ্জিত হবার কোনো কারণ নাই৷''

এর মধ্যেই বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের অবস্থান নিয়ে একধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ ম্যানহ্যাটনের এই হামলার পর এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঢিলেঢালা অভিবাসী নীতির ফলে ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, অন্য দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে৷

একই শঙ্কা থেকে হাসনাত মুর্তাজা লিখেছেন, ‘‘ট্রাম্প একটা মোক্ষম অস্ত্র পেয়ে গেল, এর ১৬ আনা সুযোগ নেবে!''

লেখক সেজান মাহমুদ লিখেছেন, ‘....কেউ আবার দয়া করে আইনি প্যাঁচ মারতে আইসেন না যে দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ৷ গুল্লি মারি আপনাদের ঐ ডিনায়েল টাইপের মানসিকতায়৷ আমি নিজে আমাদের চারপাশে বহু শিক্ষিত ‘ডিগ্রিধারীদের' সঙ্গে তর্ক করেছি যারা সুযোগ পেলে একই রকমের কাজ করতে সক্ষম৷'' তিনি আরো লেখেন, ‘‘ভেবে দেখুন এখন বাংলাদেশের কোনো ছাত্রকে স্পন্সর করাও কত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷''

তানভির বিন হাসানলিখেছেন, ‘‘...বাংলাদেশ এতদিন ট্রাম্পের ব্যান নীতির আওতায় ছিল না৷ এবার বাংলাদেশ থেকে অ্যামেরিকায় যাওয়ার আশা রাখা ভ্রাতারা প্রমাদ গোনেন৷ আর সেইসব ভ্রাতারা যারা অ্যামেরিকা থেকে দেশের জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগান, তারাও ফেরত আসার জন্যে তল্পিতল্পা গোটাতে শুরু করেন৷ তারপর বাংলাদেশটারে ধ্বংস করেন৷ যদিও ধ্বংস হতে তার আর বেশিকিছু বাকি নাই৷''

অন্যদিকে, দেশে আকায়েদের কোন ক্রিমিনাল রেকর্ড নেয় উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ৷ আকায়েদের বাবা একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা বলেও জানা গেছে৷ এরপরেও আকায়েদ কিভাবে এমন কাজে উদ্বুদ্ধ হলো, তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলছে আলোচনা৷ ফেসবুকে হক তাঁর ইংরেজি বার্তায় লেখেন, জঙ্গিবাদ উসকে দেয় এমন সব বার্তা গুগল, ইউটিউব থেকে বাদ দিয়ে দেয়া দরকার৷ মানুষের মস্তিষ্ক খুবই স্পর্শকাতর, যে কোন বিভ্রান্তিকর বার্তা যে কাউকে খারাপ পথে নিয়ে যেতে পারে৷ 

অনেকেই আবার অস্বীকার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সমস্যা চিহ্নিত করার দিকে জোর দিয়েছেন৷ সাংবাদিক সুপ্রীতি ধরলিখেছেন, ‘‘আকায়েদ – এটা কেমন নাম? বাঙালির নাম হবে বাংলা, তবেই না মন থেকে জেহাদি জোশ কমবে৷ গোড়াতেই গণ্ডগোল৷''

নিশি শারমিন লিখেছেন, ‘‘আকায়েদ উল্লাহ তোমাদেরই ভাই, যারা টেরোরিস্ট মুসলিম দেখে চুপ থাকো অথবা ওরা মুসলিম না বলে দায় এড়াতে চাও৷ তার চেয়ে বরং দায় স্বীকার করো আর নিজের সন্তানদের সুশিক্ষা দাও৷ মুসলিম বানানোর আগে মানুষ বানাও, তাহলে ভালোবেসে নিজের ধর্ম পালন করবে, ধর্মের নামে মানব হত্যা করে কাল্পনিক জান্নাতে যাবার কুচেষ্টা করবে না৷''

এ মাসেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশি নাইমুর জাকারিয়া৷ এর আগে ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যে উড়োজাহাজ উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশি রাজীব করিম৷ অন্যদিকে বোমা হামলার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশি কাজী রেজওয়ানুল আহসান ৩০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন৷

সংকলন: রেশমী নন্দী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

আপনাদের কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান