1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যত ‘বড়' হই, ততই নিষ্ঠুর হই?

আশীষ চক্রবর্ত্তী১৮ জানুয়ারি ২০১৬

শিশুর হাসি দেখে মন ভালো হয় না – এমন মানুষ কি আছে? অবশ্য আজকাল শিশুর হাসি মন দিয়ে দেখে ক'জন! শিশুর কান্নাই বা কে দেখে? সব জায়গায় দুর্বলের ওপর চলে সবলের অত্যাচার৷ শিশুরা সবচেয়ে ‘দুর্বল', তাই অত্যাচারও বেশি সইতে হয় তাদের৷

https://p.dw.com/p/1HeOG
Symbolbild Kindesmisshandlung Bestrafung familiäre Gewalt
ছবি: picture alliance/ANP/R. Koole

শিশু-অত্যাচার বা নির্যাতনের সামাজিক নাম ‘শাসন'৷ সমাজে প্রায় সবাই শিশুর ‘শাসক'৷ মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, পাড়ার পান-বিড়ির দোকানদার, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা সবাই শাসক৷ এই শাসকদের প্রায় সবাই-ই মনে করেন, সবচেয়ে মোক্ষম এবং কার্যকর শাসন হলো ‘প্রহার'৷ সেই প্রহারের ‘স্বাদ' পেতে জন্মের পর বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয় না শিশুদের৷ বেশির ভাগ শিশু কথা বলা বা হাঁটা শেখার আগেই চড়-থাপ্পর খেতে শুরু করে নিজের ঘরে৷

খেতে না চাইলে মা-এর থাপ্পর, বাড়িতে নালিশ এলে বাবার পিটুনি – এ সব একসময় গায়ে সয়ে যায়৷ স্কুলে লেখাপড়া শুরু মানেই শিক্ষকদের ‘শাসন' শুরু৷ শাসনের জন্য সেখানে আবার নানা ধরনের ‘হাতিয়ার' চাই৷ বেত, স্কেল, ডাস্টার, পেন্সিল – যাঁর যা পছন্দ৷ পড়া না পারলে মার, ক্লাসে দুষ্টুমি করলে মার, স্কুল ফাঁকি দিলে মার....শুধু মার...৷

Deutsche Welle DW Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

‘কর্পোরাল পানিশমেন্ট', অর্থাৎ শিশুদের এই মেরে ‘শাস্তি' দেয়ার বিষয়টি নিয়ে যখন কথা বলি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা শুধু স্কুলের বিষয়গুলোই তুলে আনি৷ কিন্তু শিশুদের ‘শায়েস্তা' করার সুযোগ পেলে কে ছাড়ে?

বাড়িতে নিজের সন্তানের বয়সি শিশু গৃহকর্মীকে শাস্তি দিতে চিরুনি, বটি, খুন্তি যা হাতের কাছে পান, তা দিয়েই পেটান গৃহকর্ত্রী৷ কর্তাও এগিয়ে এলে শুধু দারিদ্র্যের কারণে মায়ের কোল ছেড়ে আসা শিশুটির হাসপাতালে ঠাঁই নিতে দেরি হয় না৷

বাবা-মায়ের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ওই বয়সেই যাঁদের ঘর ছাড়তে হয়, কল-কারখানায়, রাস্তাঘাটে অস্তিত্ব রক্ষার কী অসম্ভব লড়াইটা তাদের করতে হয়, রাজন, রাকিবরা জীবন দিয়ে কিছুটা হয়ত বুঝিয়ে গেছে৷

আসলে কি আমরা বুঝতে পেরেছি? বুঝতে চাই আসলে? কতটা বুঝতে চাই? কার বেলায় বুঝতে চাই? কার বেলায় চোখ-মুখ বন্ধ রেখে, বিবেকে তালা মেরে রাখি? কেউ নিজের সন্তানকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি, কিন্তু সন্তানের চোখের সামনেই আরেক শিশুকে পেটাই৷ ঘরে শিশু সন্তান রেখে বঙ্গবন্ধুর শিশুপুত্র রাসেল থেকে সিলেটের অতি সাধারণ পরিবারের শিশু সন্তান রাজন, কিংবা খুলনার রাকিবকে হত্যা করে ধরা না পর্যন্ত তো এ সমাজেরই কিছু মানুষ আস্ফালনই করে! অথচ সব অত্যাচারীর, সব শিশু হত্যাকারীরই একটা শৈশব ছিল৷ কবি গোলাম মোস্তফা তো তাদের জন্যও লিখেছিলেন, ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুর অন্তরে৷' শৈশব ধীরে ধীরে দূরে সরে আর মানুষ কি তবে নিষ্ঠুর হতে থাকে?

লেখকের সঙ্গে কি আপনি একমত? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান