1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের ঐতিহাসিক বৈঠক

২৭ এপ্রিল ২০১৮

ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হলেন উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ নেতা৷ কোরীয় উপদ্বীপে স্থায়ী শান্তি ও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে লক্ষ্যে তাঁরা এক ঘোষণাপত্রে সাক্ষর করেছেন৷ তাঁদের ব্যক্তিগত আবেগ-উষ্ণতা বৈঠকের ইতিবাচক আবহ সৃষ্টি করেছে৷

https://p.dw.com/p/2wlZJ
কোরীয় সীমান্তে কিম জং উন ও মুন জে ইন
ছবি: Reuters

দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাৎ অতি সাধারণ ঘটনা৷ কিন্তু শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন যখন সীমান্তে মিলিত হয়ে সহাস্যে করমর্দন করলেন, তা অবশ্যই এক ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ কারণ, প্রায় ৬৫ বছর আগে কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধ শেষ হবার পর উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতা দক্ষিণ কোরিয়ায় পা রাখেননি৷ ২০০০ ও ২০১৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্টরা পিয়ং ইয়ংয়ে শীর্ষ বৈঠকে গিয়েছিলেন মাত্র৷ সৌজন্য হিসেবে শুক্রবার দুই নেতাই একসঙ্গে সীমান্তের এপার-ওপার – দুইদিকেই দাঁড়িয়ে হাসিমুখে ক্যামেরার দিকে তাকালেন৷ তারপর সীমান্তের দক্ষিণে পানমুনজম গ্রামে ‘শান্তি নিবাস' ভবনে শীর্ষ বৈঠকের জন্য তাঁরা এগিয়ে গেলেন৷

কিম বলেন, দক্ষিণের ভূখণ্ডে পা রেখে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন৷ ইতিহাসের নতুন পর্বের সূচনার সংকেত দিতেই তিনি এসেছেন, বলেন তিনি৷ দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা মুন বলেন, তাঁরা দুজনে সাহসি এক বোঝাপড়ায় পৌঁছতে পারবেন বলে আশা করছেন, যা গোটা কোরিয়ার সব মানুষের জন্য এক উপহার হবে৷ প্রাথমিক আলোচনায় কিম কিছুটা রসিকতার লোভ সামলাতে পারেননি৷ তিনি শুনেছেন যে, মুন নাকি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে ভোরে উঠতে বাধ্য হতেন৷ তাই এখন থেকে তাঁর ঘুমে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কিম৷

আলোচনার শেষে দুই নেতা এক স্থায়ী শান্তি চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন৷ সেইসঙ্গে গোটা কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে চান তাঁরা৷ ‘পানমুনজং ঘোষণাপত্র’ নামের যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত আলোচনার কাঠামোর উল্লেখ রয়েছে৷ তারই আওতায় চলতি বছরের হেমন্তকালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পিয়ং ইয়ং সফর করবেন৷ টেলিফোনেও দুই নেতার সরাসরি যোগাযোগ থাকবে৷ উল্লেখ্য, কিম জং উন কিন্তু এ দিন একবারও পরমাণু নিরস্ত্রিকরণের উল্লেখ করেন নি৷

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে কিছুকাল আগে পর্যন্তও দুই রাষ্ট্রের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল৷ ষষ্ঠ পরমাণু বিস্ফোরণ ও দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল৷ কিম জং উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বাকযুদ্ধের পারদও চড়ছিল৷

তারপর দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিক উপলক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন সংলাপের সুযোগ সফলভাবে কাজে লাগাতে পেরেছিলেন৷ দুই নেতার ঐতিহাসিক বৈঠকের পর কিম জং উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পও আরেক ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হবেন, এমন সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ তিনি শুক্রবারের ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকের পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন৷

প্রতীকী সাক্ষাৎ, করমর্দন, ব্যক্তিগত উষ্ণতার পর কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি আনতে দুই নেতা উদ্যোগ নিতে চান৷ কিন্তু নিজস্ব স্বার্থ বজায় রেখে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন কাজ৷ উত্তর কোরিয়া গত সপ্তাহে একতরফাভাবে পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা করলেও সে দেশ সহজে তার অস্ত্রভাণ্ডার নিষ্ক্রিয় করে দিতে চাইবে না৷ দক্ষিণ কোরিয়া এই মর্মে প্রত্যাশার মাত্রাও কম রাখছে৷ উত্তর কোরিয়া এ বিষয়ে আদৌ আলোচনা করার আগে নিরাপত্তার গ্যারান্টি চাইছে৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য