1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরানি পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে

২০ আগস্ট ২০১৬

ইরানে দিন দিন বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব৷ নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে বেশি৷ অথচ চিকিৎসা নিতে গিয়ে সামাজিক কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার বেড়াজালে পিছপা হচ্ছেন অনেকে৷

https://p.dw.com/p/1Jk7a
ছবি: cdn.fararu.com

মোহাম্মদ এবং তার স্ত্রী বেশ কয়েক বছর ধরে দ্বিতীয় সন্তানের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷ অবশেষে তারা তেহরানের এক ফার্টিলিটি ক্লিনিকে গেলেন৷ সিদ্ধান্ত নিলেন ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ এর৷ ৪৫ বছরের মোহাম্মদ বললেন, ‘‘কিছু মানুষ এটা মানতেই পারে না যে তাদের স্ত্রী অন্য কারো শুক্রানু দেহে বহন করবে, কেননা, তারা মনে করে, যে সন্তানটি জন্ম নেবে সে তার বংশধর হবে না, কারণ তার দেহে রক্ত ও জিন অন্য মানুষের৷''

কিন্তু মোহাম্মদের ক্ষেত্রে ডাক্তার তার শুক্রানুই ব্যবহার করেছে৷ তবে তার পরিবার একথা বিশ্বাস না-ও করতে পারে, কেননা, তার এক চাচাতো ভাইয়ের ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছিল৷ আইভিএফ এর মাধ্যমে জন্ম হয়েছিল তার৷ কিন্তু সে যখন বড় হয়ে উঠতে থাকল, তার প্রতি পরিবারের সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেল৷

মোহাম্মদ বললেন, এ কারণে অনেকেই বন্ধ্যাত্ব সত্ত্বেও এ পথে হাঁটতে চায় না, কেননা তারা ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে৷ ইরানে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির প্রতি মানুষের প্রচুর আস্থা৷ এছাড়া সেখানে এমন কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি আছে যা মধ্যপ্রাচ্যের আর কোথাও নেই৷ কিন্তু প্রজনন চিকিৎসা এখনো সংবেদনশীল ইস্যু৷

সামাজিক কুসংস্কার, সেই সাথে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়গুলোতে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়ার রীতি এখনো প্রচলিত সেখানে৷ সেই ধর্মীয় নেতারা মনে করেন, অন্য পুরুষের শুক্রানু নারী দেহে প্রবেশ করানো অবৈধ ও অনৈতিক, কেননা, সেটা তার স্বামীর শুক্রানু নয়৷ অথচ অন্য মেয়ের ডিম্বানু ব্যবহার এর চেয়ে কম সমালোচিত৷ অবশ্য এ জন্য ক্ষণস্থায়ী বিবাহের নির্দেশ দিয়ে থাকেন কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা৷ নারী দেহে অস্ত্রোপচারের পর সেই বিয়ে বিচ্ছেদে পরিণত হয়৷ কিছু কিছু ইমাম বলে থাকেন, একটি ডিম্বানু যখন ল্যাবে থাকে এবং অন্য একটি শুক্রানুর সঙ্গে নিষিক্ত করে জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয়, সেটাতে কোন বাধা নেই৷

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১২ সালে ইরানে শতকরা ২০ ভাগ দম্পতি চেষ্টা করেও সন্তান নিতে পারেননি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পুরো বিশ্বে বন্ধ্যাত্বের হার ৫ থেকে ৮ শতাংশ৷ ইরানে বর্তমানে ৩০ লাখ দম্পতি প্রজননে ব্যর্থ৷ অথচ সেখানে বছরে মাত্র ৪০ হাজার আইভিএফ চিকিৎসা দেয়া যায়৷ এ ধরনের একটি ক্লিনিকের চিকিৎসক জানালেন, পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের হারটা নারীদের চেয়ে অনেক বেশি৷ তিনি ২৫ বছর ধরে এই চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত৷ তিনি জানালেন, পুরুষের শুক্রানুর ধরণ ও মাত্রা দিন দিন খারাপ হচ্ছে৷ আর নারীদের ক্ষেত্রে অনেক আগেই শুরু হয়ে যাচ্ছে মেনোপজ৷

এটি ছাড়া অন্য দুটি ক্লিনিকের চিকিৎসকরাও একই কথা জানিয়েছেন৷ তেহরান ভীষণ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, যেখানে ৫০ লাখ মানুষের বাস৷ বিশুদ্ধ পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং কারাখানার দূষিত বায়ু ও রাসায়নিক পদার্থের কারণে বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

এপিবি/এসিবি (এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান