1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর কোরিয়া যেতে চাইলে দেশেই মোবাইল রেখে যান

৪ সেপ্টেম্বর ২০১১

উত্তর কোরিয়া - নামটি শুনলেই প্রথমে সে দেশের নেতা কিম জং ইলের কথা মনে পড়ে৷ যার একটি ব্যক্তিগত ট্রেন রয়েছে এবং যেটাতে করে তিনি বিদেশ ভ্রমণে বের হন৷ আর মনে পড়ে সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশের কথা৷

https://p.dw.com/p/12SaQ
কিম জং ইলছবি: dapd

কখনো কী শুনেছেন, কেউ সেখানে গেছে বেড়াতে? এবার সেই দেশটি চাইছে তাদের দেশে পর্যটক নিয়ে যেতে৷

বহুদিন থেকেই উত্তর কোরিয়ার উপর নানারকম নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ কারণ দেশটির কাছে পরমাণু অস্ত্র আর ব্যলিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে বলে মনে করে তারা৷ এ কারণে দেশটি বেশ দরিদ্র৷ সেখানে নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো আর রয়েছে বিদ্যুতের অভাব৷

এসব ছাড়াও উত্তর কোরিয়ায় রয়েছে দেশ পরিচালনায় সরকারের কড়া নীতি৷ গণমাধ্যমের উপর রয়েছে কঠোর নিয়ন্ত্রণ৷ ফলে সেখানকার খবরাখবর বা মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কে বিশ্ববাসীর তেমন একটা কিছু জানা নেই৷

এমন একটা দেশ এবার চাইছে বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে৷ সেখান থেকে যদি কিছু অর্থ পাওয়া যায় তাহলে সেটা দেশের জন্য ভালই হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাই ‘তাইপুং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ' নামের একটি কোম্পানি রাসন প্রদেশের সরকারের সঙ্গে মিলে একটি প্রমোদতরী চালু করেছে৷ এই জাহাজটি রাসন প্রদেশের বন্দর নগরী রাজিন থেকে পর্যটকদের সুন্দর শহর মাউন্ট কুমগ্যাঙ'এ নিয়ে যায়৷ রাসন প্রদেশটি রাশিয়া ও চীনের সীমান্তে অবস্থিত৷ আর মাউন্ট কুমগ্যাঙ এলাকাটি বিখ্যাত রাজনৈতিক কারণে৷ কেননা সেখানে ২০০৮ সালে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক পর্যটক৷

যাই হোক, বিশ্ববাসীকে জাহাজ ভ্রমণ সম্পর্কে জানাতে প্রায় একশো জন সাংবাদিক ও চীনের কয়েকটি ট্যুরিজম কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্প্রতি একটি ট্যুরের আয়োজন করেছিল কর্তৃপক্ষ৷

NO FLASH Russland Nordkorea Kim Jong Il Besuch August 2011
কিম জং ইলের ব্যক্তিগত ট্রেনছবি: dapd

সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হুয়াং চোল নাম৷ তিনি বলেন রাজ্যের উন্নয়নে তারা তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার পরিকল্পনা করছেন, যার মধ্যে একটি হচ্ছে পর্যটন৷ আর বাকি দুটি হলো কার্গো ব্যবসা ও সামুদ্রিক খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ৷

এদিকে তাইপুং কোম্পানির এক কর্মকর্তা পার্ক চোল সু বলছেন, ইউরোপ থেকে পর্যটক আকর্ষণে তারা সেখানকার ট্যুরিজম কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের জন্যও ট্যুরের ব্যবস্থা করবেন৷ আগামী মাসেই সেটা হতে পারে বলে জানান তিনি৷ সু বলেন এভাবে যদি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয় তাহলে আগামী বছর তারা নতুন জাহাজের ব্যবস্থা করবেন৷ উল্লেখ্য, বর্তমানে যে জাহাজটি ব্যবহৃত হচ্ছে সেটি প্রায় ৩৯ বছরের পুরনো৷

উত্তর কোরিয়ায় পর্যটকরা নতুন ধরণের অভিজ্ঞতা পাবেন সেটা বলে দেয়া যায়৷ কেননা সেখানে পৌঁছানোর পরপরই পর্যটকদের নিজস্ব মোবাইল ফোন সেটটি রেখে দেয়া হবে৷ ফলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে সেদেশের টেলিফোন ব্যবহার করতে হবে, যেটা ব্যয়বহুল৷ তার চেয়ে বড় কথা সহজেই লাইন পাওয়া যাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ এছাড়া নেই ইন্টারনেট কানেকশন৷ তবে এ মাসের মধ্যেই সে সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে জানা গেছে৷ তবে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনীয়তা নেই এমন সাইটগুলো বন্ধ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

এছাড়া কোনো পর্যটক যদি উত্তর কোরিয়ার মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে আগ্রহী হন তাহলে তাঁকে হতাশ হতে হবে৷ কারণ শুধুমাত্র গাইডের সাহায্য নিয়েই সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলা যাবে৷ কেনাকাটা করতে গেলেও গাইডকে সঙ্গে নিতে হবে৷

প্রশ্ন হচ্ছে, পর্যটকরা টাকা খরচ করে এমন পরিবেশে কেন যাবেন? উত্তরে চীনের এক ব্যবসায়ী বললেন এমন অনেক পর্যটক আছেন যাঁরা সাধারণত ব্যতিক্রমী জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করেন৷ এটাকেও তাঁরা এক ধরণের অ্যাডভেঞ্চার মনে করেন৷ এসব পর্যটকের জন্য উত্তর কোরিয়া হবে আদর্শ জায়গা৷ কেননা বিশ্বের খুব কম মানুষেরই উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে ধারণা রয়েছে৷ এবং খুব কম মানুষই সেখানে গেছেন৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়