1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ট্রিপল এফ’ মডেল

২২ ডিসেম্বর ২০১২

বন, ফল আর মাছ – অর্থাৎ ফরেস্ট, ফ্রুট আর ফিশ – এই তিন ‘এফ’-এর কারণে প্রকল্পের নাম ‘ট্রিপল এফ’ মডেল৷ জলবায়ু প্রভাবের হাত থেকে বরগুনার উপকূলবাসীদের বাঁচাতে চলছে এই প্রকল্প৷ তবে এর ফলে জীবিকাও নির্বাহ হচ্ছে অনেকের৷

https://p.dw.com/p/177mI
Cyclone Sidr affected Bangladeshi woman carries a pot of water to her tent at the devastated Komdamtola village in Bagerhat district, 25 November 2007. Bangladesh stepped up its military-led relief effort as aid poured into the cyclone-hit country and logistical difficulties eased, officials said. More than 3,400 people have been confirmed dead and the government estimates that 280,000 people have been left homeless by cyclone Sidr which smashed into the southern coast on November 15, prompting a massive aid operation. AFP PHOTO/Jewel SAMAD (Photo credit should read JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images)
ছবি: Jewel Samad/AFP/Getty Images

সরকার ও ইউএনডিপি'র যৌথ উদ্যোগে ২০০৯ সাল থেকে চলছে এই প্রকল্প৷ এর আওতায় বরগুনার সোনাতোলা গ্রামের ৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে সরকারি খাস জমি দেয়া হয়েছে৷ সেখানে তাঁরা পুকুর কেটে মাছ চাষ করছেন৷ আর পুকুর পাড়ে লাগিয়েছেন হরেক রকমের গাছ৷ এর ফলে সাগরের পানি আর সহজে জনবসতি এলাকায় ঢুকতে পারছে না৷ এতে করে চাষের জমি লবণাক্ত হওয়ার হাত থেকেও পাচ্ছে মুক্তি৷ অথচ এই প্রকল্প শুরুর আগে লবণাক্ততার কারণে সোনাতোলা গ্রামের বাসিন্দারা চাষাবাদের যোগ্য জমিগুলোতে কোনো কিছু ফলাতে পারতো না৷

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের পানি বেড়ে যাওয়ায় উপকূলবাসীরা হারাচ্ছেন জমি৷ সঙ্গে রয়েছে নদী শুকিয়ে যাওয়া আর মাঝেমধ্যে সাইক্লোনের ছোবল৷ সাম্প্রতিক সময়ে ‘সিডর' আর ‘আইলা' তারই উদাহরণ৷

Cyclone Sidr was the strongest named cyclone in the Bay of Bengal. The storm eventually made landfall in Bangladesh on mid November, 2007. The storm caused large-scale evacuations here. 3,447 deaths were blamed on the storm. International groups pledged US$95 million to repair the damage, which was estimated at $1.7 billion (2007 USD). Copyright: DW
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের পানি বেড়ে যাওয়ায় উপকূলবাসীরা হারাচ্ছেন জমিছবি: DW

এসব কারণে শস্য উৎপাদন ইতিমধ্যে কমে গেছে প্রায় ৩০ শতাংশ৷ আর সাগরের পানি ঢোকা বন্ধ করতে না পারলে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১৬ শতাংশ উপকূল এলাকা ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এর ফলে এই সময়ের মধ্যে উপকূলের প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র, আর গৃহহীন হয়ে পড়তে পারে৷

জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে ইউএনডিপি আর সরকার ‘ট্রিপল এফ' পদ্ধতিতে কাজ করে যাচ্ছে৷ ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে সাড়ে তিনশো মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে৷ এর আওতায় সরকার উপকূলীয় এলাকায় একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে৷ সাগরের পানির ঢুকে পড়া বন্ধ করা আর জনগণকে ঝড় ঝঞ্জার হাত থেকে রক্ষা করতে এই বাঁধ দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া, সাইক্লোন থেকে মুক্তি পেতে বেশি করে ম্যানগ্রোভ বন গড়ে তোলা হচ্ছে৷ অর্থাৎ লাগানো হচ্ছে গোলপাতা আর কেওড়া গাছও৷

যেসব ভূমিহীন পরিবারকে খাস জমি দেয়া হচ্ছে তারা বার্তা সংস্থা আইপিএস-কে বলেছেন, প্রকল্প শুরু হওয়ার আগে তাদের জীবিকা নির্বাহের সুযোগগুলো হারিয়ে যাচ্ছিল৷ এই প্রকল্পের কারণে তাঁরা এখন সাবলম্বী হয়ে উঠেছেন৷

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই সঙ্গে মাছ, সবজি আর ফলের চাষ করে অবস্থা বদলে গেছে এসব ভূমিহীন মানুষদের৷ এই ৮০টি পরিবারের একেকটির বাৎসরিক আয় এখন প্রায় লক্ষাধিক টাকার বেশি৷

সোনাতলা গ্রামের কৃষক হাসান ঘরামি বলছেন, তার অবস্থা এখন অনেক বদলেছে৷ প্রকল্পের আওতায় কাজ করে তাঁর নতুন ঘর হয়েছে৷ এছাড়া দিয়েছেন বোনের বিয়ে৷

প্রকল্প ব্যবস্থাপক ড. পরমেশ নন্দি জানিয়েছেন, উপকূলবর্তী লবণাক্ত এই জায়গাটিতে একটা সময় কোনো ফসলই ফলতো না৷ ‘ট্রিপল এফ' মডেল বাস্তবায়নের জন্য তাই বেছে নেয়া হয়েছে চারটি জেলার এমন পরিত্যাক্ত সব জায়গা৷

প্রকল্পের সফলতার খবর পৌঁছে গেছে বিশ্বের কাছেও৷ তাইতো ভারতের ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া' সম্প্রতি প্রকল্পটিকে দিয়েছে ‘আর্থ কেয়ার অ্যাওয়ার্ড'৷

জেডএইচ/ডিজি (আইপিএস)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য