1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশুর কনট্যাক্ট লেন্স

Sanjiv Burman২ আগস্ট ২০১৩

শুধু মানুষ নয়, বেশি বয়সে অনেক পশুর চোখেও ছানি পড়ে৷ এক জার্মান গবেষক তাদের জন্য কনট্যাক্ট লেন্স তৈরি শুরু করেছেন৷ অ্যামেরিকায় তার যথেষ্ট কদর থাকলেও ইউরোপে ব্যবসা এখনো জমে ওঠে নি৷

https://p.dw.com/p/19InE
ছবি: Fotolia/GAP artwork

ব্যবসার এমন আইডিয়ার কথা শুনলে সবার ভুরু কপালে উঠে যায়৷ ক্রিস্টিনে ক্রাইনার পশুদের জন্য কনট্যাক্ট লেন্স তৈরি করেন৷ পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে মিলে তিনি এই লেন্স তৈরি করেন৷ মূলত কুকুর ও বিড়ালদের চোখে ছানি পড়লে তা কাজে লাগে৷

অপারেশনের খরচ এক থেকে দেড় হাজার ইউরো৷ অনেক পশুপ্রেমীই সানন্দে তা দিতে রাজি৷ ক্রাইনার বললেন, ‘‘কিছুটা প্ররোচনা দিতে আমি বলি, ধরুন দাদি বা নানির চোখে ছানি পড়েছে৷ আবার বাড়ির কুকুরেরও ছানি হয়েছে৷ এখন কার অপারেশন করানো হবে? অ্যামেরিকায় কিন্তু সহজেই কুকুরের পাল্লা ভারি হয়৷ কারণ দাদি-নানি তো মারা যাবেনই! আসলে অ্যামেরিকার বাজারে আমরাই সেরা৷ ইউরোপের তুলনায় সেখানে পশুপাখির অপারেশন অনেক বেশি প্রচলিত৷''

Grauer Star
ছবি: picture-alliance/dpa

ক্রিস্টিনে ক্রাইনার-এর পক্ষে ইউরোপের বাজারে ব্যবসা করা কঠিন৷ অন্যদিকে এশিয়ায় কিন্তু চাহিদা বাড়ছে৷ তাঁর সংস্থায় ৫১ জন কর্মী কাজ করেন৷ এই নিয়ে চারটি কোম্পানি খুললেন তিনি৷ মুনাফা করলেও দুটি বিক্রি করে দিয়েছেন৷

শুরুতে মানুষের জন্যই কনট্যাক্ট লেন্স তৈরি করতেন ক্রিস্টিনে৷ ৬০ বছর বয়স্ক রসায়ন বিশেষজ্ঞ গবেষণার জগত থেকে এসেছেন৷ ব্যবসা বুঝতেন না৷ সম্বল ছিল ২৫,০০০ মার্ক৷ ক্রাইনার বললেন, ‘‘হাতে টাকা ছিল খুব কম৷ শুরুটা ছিল ভীষণ কঠিন এক সময়৷ তবে সে সময়ে কিন্তু ব্যাংকে সহজেই ঋণ পাওয়া যেত৷ যদিও ব্যবসায় মুনাফা হচ্ছিল না, তা সত্ত্বেও আমি কিন্তু ঋণ পেয়েছিলাম৷''

বার্লিনের উপকণ্ঠে হেনিংসডর্ফ শহরে কোম্পানির সদর দপ্তর৷ সরকারি সাহায্যের টানে প্রায় ২০ বছর আগে তিনি এই শহরে এসেছিলেন৷ রাজধানীর কাছে থাকাও তাঁর জন্য জরুরি৷ বিনিয়োগকারীর খোঁজে তিনি বার্লিনে বায়ো-প্রযুক্তি সংক্রান্ত এক সম্মেলনে গিয়েছেন৷

সেখানে প্রথমে বিনিয়োগকারীদের তেমন আগ্রহ দেখতে পান নি তিনি৷ কারণ ক্রিস্টিনের কোম্পানি তাঁদের কাছে বড়ই ছোট৷ টার্নওভার বা লেনদেন ৫০ লক্ষ ইউরোর মতো৷ ক্রাইনার বললেন, ‘‘অঙ্কটা ১ কোটি ইউরো হলে তখনই ভাবনা-চিন্তা করতে হয়৷ পণ্যের উন্নতির কাজে মন দিলে একটা সময়ে নিজের টাকায় আর কুলায় না৷ তখন একজন বিনিয়োগকারী পেলে বড় সুবিধা হয়৷''

অফিসে ফিরে কর্মীদের সঙ্গে মিটিং-এ বসেন তিনি৷ আইটি খাতে খরচ বাড়ছে৷ ক্রিস্টিনে-র মতে, অঙ্কটা বড্ড বেশি৷ তিনি বলেন, যদি আমার মনে হয়, তারা এমন সব কাজের তালিকা তৈরি করেছে, যা তাদের নিজেদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, তখন আমি কী করবো? তিনি চান, কর্মীরা কোম্পানির প্রতি দায়িত্ব দেখান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা দুজন বেশ খুঁতখুঁতে৷ তবে সবাই সেটা বেশ মেনে নেয়৷''

ক্রিস্টিনে চান, সবাই খোলামেলাভাবে নিজেদের মনের কথা বলুক৷ তিনি বললেন, ‘‘আমি যদি সহকর্মীদের সত্যি কোম্পানির কাজকর্মে আরও জড়িয়ে ফেলি, তাদের যদি বোঝাতে পারি যে সাফল্য বা ব্যর্থতা যাই আসুক না কেন, তারাও কোম্পানির অংশ – তখন তাদের কাজের মান বেড়ে যায়, অফিসে আসার ইচ্ছাও বেড়ে যায়৷ ভেবে দেখুন, সকালে অফিসে এসে কারো যদি মনে হয় – ‘বাজে অফিস, কখন যে ৫টা বাজবে!' – সে অবস্থায় তাদের কাজের মানও ভালো হতে পারে না৷''

ক্রিস্টিনে ক্রাইনার দিনে প্রায় ১০ ঘণ্টা কাজ করেন৷ নিজের জন্য সময় থাকে না বললেই চলে৷ কবিতার বদলে তাঁকে টেকনিক্যাল লেখা পড়তে হয়৷ গবেষণার ক্ষেত্রে সব অগ্রগতি তাঁর দখদর্পণে থাকা চাই৷ তাঁর আগামী কাজ হচ্ছে চোখের কৃত্রিম তারার জন্য রং তৈরি করা৷

এসবি/ডিজি