1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোরআন পোড়ানো: বিক্ষুব্ধ আফগানরা

১০ সেপ্টেম্বর ২০১০

মার্কিন মুলুকে টেরি জোনসের কোরআন পোড়ানোর ঘোষণার প্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে প্রবল বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ সেদেশের উত্তর-পূর্ব অংশের একটি ন্যাটো স্থাপনার কাছে বিক্ষোভকালে সেখানে ৩ বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/P9S5
আফগানিস্তানে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ (ফাইল ফটো)ছবি: AP

উল্লেখ্য, কোরআন পোড়ানোর বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার তীব্র নিন্দা জানানোর পরপরই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস সেই টেরি জোনসকে বোঝানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, টেরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডাভ ওয়ার্ল্ড আউটরিচ সেন্টার' নামের একটি চার্চের প্রধান৷ তাঁর এই কোরআন পোড়ানোর ঘোষণার পর থেকেই সারা বিশ্বে তুমুল নিন্দা, সমালোচনা আর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷

যদিও জোনস পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত বদলে কোরআন পোড়ানোর বিষয়টি মুলতুবি রেখেছেন৷ কারণ হিসেব তিনি যা জানিয়েছিলেন তা হচ্ছে- গ্রাউন্ড জিরোর কাছে আর মসজিদ নির্মিত হবে না৷ মুসলিম নেতাদের সাথে তাঁর নাকি এমনতরো একটি চুক্তি হয়েছে৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, তীর জ্যা থেকে মুক্ত হয়ে গেছে৷ কোরআন পোড়ানোর ঘোষণাটি মুহূর্তেই সারা পৃথিবীতে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল৷ ইন্টারপোল মুসলিম দেশগুলোতে দাঙ্গার আশঙ্কা করছিল৷ আর শুক্রবার আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় এনিয়ে এবারে রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু হল৷

Jones Koran-Verbrennung NO FLASH
কোরআন পোড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন টেরি জোনসছবি: ap

শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের পাশাপাশি মার্কিন পতাকাও পুড়িয়েছে৷ আফগানিস্তানের বাদাখশানের প্রদেশের রাজধানী ফৈজাবাদে ১৫০০ বিক্ষোভকারীর এক মিছিল রাস্তায় নেমেছিল বলেও সেখানকার পুলিশ প্রধান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন৷ এদিকে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এক ঈদের শুভেচ্ছাবার্তায় বলেছেন, ‘আমরা শুনেছি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন পবিত্র কোরান পোড়ানোর হুমকি দিয়েছিলো, এখন যদিও জানতে পেরেছি যে তারা কাজটা আর করছে না, কিন্তু এমনটি তাদের স্বপ্নেও ভাবা উচিত নয়৷ 'তিনি আরো বলেন, ‘কোরআন পুড়িয়ে তারা এর কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷ কারণ তা দেড় বিলিয়ন মানুষের অন্তরে প্রোথিত রয়েছে৷ কোরআনের অপমান হলে সেটি ইসলাম এবং মুসলমানের অপমান হয়ে দাঁড়ায়৷'

এদিকে জানা গেছে, আফগানিস্তানের ফৈজাবাদ শহরে প্রায় ১৫০০ জনের একটি বিক্ষোভ মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা ইঁট-পাথর ছুঁড়ে, ন্যাটো স্থাপনার দেয়াল বেয়ে ওঠার চেষ্টা করার সময় সেখানকার নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের থামাতে গুলি ছোঁড়ে, এর ফলে ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন৷ এছাড়া আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তা নেমে এসেছিল৷ গত সপ্তাহে কাবুলের রাস্তাতে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ করেছে৷ এই শুক্রবারে আফগানিস্তানের নিমরুজ প্রদেশের রাজধানী কুনারের খাস কুনার জেলায়, বাঘলান, কুন্দুজ এবং বলখ প্রদেশে বিক্ষোভ হয়েছে৷ বিক্ষোভ হয়েছে কাবুলের উত্তরের নানগারহার, পারওয়ান প্রদেশেও৷

অখ্যাত এক মার্কিন নাগরিক টেরি জোনসের কোরান পোড়ানোর এই উস্কানিমূলক ঘোষণার প্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্ব যে রীতিমতো আহত, এটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সারা আফগানিস্তান জুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভে৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়