1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোলোনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস’

মারিনা জোয়ারদার১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

‘ফাখহোখশুলে কোলোন’ বা কোলোনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস’ জার্মানিতে এই ধরনের বৃহত্তম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷

https://p.dw.com/p/GtTu
কোলোনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস’ -এর ওয়েবসাইট৷ছবি: FH Köln

অন্যান্য ফাখহোখশুলেগুলোতে পড়াশোনার বিষয় যেমন ৮-১০ টি বিষয়ে সীমাবদ্ধ – সেই তুলনায় ফাখহোখশুলে কোলোনে আছে ৪৫ টি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ৷ দেশী বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী সব মিলিয়ে ফাখহোখশুলে কোলোনে আছে ১৮ হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷ ৯৩ টি বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩০০০ হাজার বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে এখানে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন ৪৫০ জন প্রফেসর৷

ফাখহোখশুলে কোলোনে গ্র্যাজুয়েশন, ডিপ্লোমা এবং মাস্টার্স করার ব্যবস্হা আছে৷ এর আগেও আপনাদের জানিয়ে দিয়েছি গ্র্যাজুয়েশন এবং ডিপ্লোম কোর্সগুলো সাধারণত ৮ থেকে ১০ সেমিস্টার অর্থাৎ ৪ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সময় নেয়৷ এখানে মনে রাখতে হবে, জার্মানিতে ‘ডিপ্লোম' হল এক ধরণের ডিগ্রি, যা মাস্টার্সের আগের পর্যায়ে পাওয়া যায় – অর্থাৎ জার্মান ‘ডিপ্লোম' আর ইংরাজি ‘ডিপ্লোমা' এক নয়৷ গ্র্যাজুয়েশন এবং ডিপ্লোমের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই যে গ্র্যাজুয়েশন সাধারণত ৪ বছরের কোর্স এবং এই কোর্সটি শেষ হয় ফাইনাল পরীক্ষা এবং একটি থিসিস পেপার জমা দিয়ে৷ ডিপ্লোম ৫ বছরের কোর্স এখানে পরীক্ষার সংখ্যা তুলনমূলকভাবে বেশী এবং সবশেষে এখানেও একটি থিসিস পেপার জমা দিতে হয়৷ এই ৫ বছরের মধ্যে কিন্তু মাস্টার্স পড়ছে না৷ জার্মানির পড়াশোনার ধারা অনুযায়ী একজন গ্র্যাজুয়েট এবং একজন ডিপ্লোমাধারী মধ্যে তুলনা করতে গেলে ডিপ্লোমার ওপর প্রাধান্য দেয়া হবে বেশী৷

ফাখহোখশুলে কোলোন বিজ্ঞান ভিত্তিক বিষয়ে পড়াশোনা এবং গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে বেশী৷ পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার জন্য সারা জার্মানির ৮০ হাজার কোম্পানির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, মিডিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার ব্যবস্হা বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই করে দেয়৷

চলুন, এবার দেখা যাক কি কি বিষয় নিয়ে ফাখহোখশুলে কোলোন পড়ার সুযোগ দিচ্ছে৷ অটোমোশন সিস্টেম, ইলেকট্রনিক্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটিং, আন্তর্জাতিক ব্যবসা, মানবিক এবং বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয় এবং মিডিয়া তো আছেই৷ বলা যেতে পারে, বিজ্ঞান ভিত্তিক বিষয়ের জন্য ফাখহোখশুলে কোলোন বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে৷ এসব বিষয় গুলোতে গ্র্যাজুয়েশন, ডিপ্লোমা এবং মাস্টার্স করা সম্ভব৷

আমরা কথা বলেছি ফাখহোখশুলে কোলোনের একজন ছাত্র মাহমুদ খানের সাথে৷ ২৯ বছর বয়স্ক মাহমুদ খান ফাখহোখশুলে কোলোনে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন৷

মাহমুদ প্রথমে ভর্তি হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিন্তু সেখান থেকে তিনি চলে আসেন ফাখহোখশুলে কোলোন৷ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞানের ওপর জোর দেয়া হয় বেশী৷ ব্যবহারিক দিকটির দিকে নজর একেবারেই দেয়া হয় বলা যায়৷ বলা হয় বাড়ীতে নিজে নিজে করতে যা প্রায় অসম্ভব৷ কম্পিউটিং সায়েন্স বিষয়ে সাহায্যের প্রয়োজন হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ ফাখহোখশুলে কোলোনে ব্যবহারিক দিকটির ওপর জোর দেয়া হয় বেশী সেকারণেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে এখানে ভর্তি হয়েছেন৷ এখানে গ্রুপ ওয়ার্কের মাধ্যমে তিনি তার প্রজেক্টগুলো শেষ করছেন৷

গ্রুপ ওয়ার্ক পড়াশোনার ক্ষেত্রে খুবই জরুরী৷ ক্লাসে কি পড়ানো হল তা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায় প্রতিদিনই গ্রুপ স্টাডিতে বসে৷ তাতে করে পড়া অনেক এগিয়ে যায়৷ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে৷ গ্রুপ স্টাডির সুবিধা প্রসঙ্গে মাহমুদ খান জানান অধ্যাপকরা প্রায়ই ছোট ছোট প্রজেক্ট দিয়ে থাকেন এবং সেই সব প্রজেক্ট শেষ করার জন্যও সময় বেধে দেন৷ তা সাধারণত ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে৷ এই সময়ের মধ্যেই তা শেষ করতে হয় এবং তা ক্লাসে প্রেজেন্ট করতে হয়৷ প্রতিটি গ্রুপে সাধারণত ৩-৪ জন ছাত্র-ছাত্রী থেকে৷ সবাইকেই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে হয়৷ প্রতিটি সেমিস্টারে অন্তত ৭-৮ টি ছোট ছোট প্রজেক্ট শেষ করতে হয়৷

এর আগেও আমরা জানিয়েছি জার্মানিতে পড়াশোনার মাধ্যম হচ্ছে জার্মান ভাষা৷ তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইংরেজী ভাষাটি ব্যবহার করা হয়৷ মাহমুদ খানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি কোন ভাষায় পড়াশোনা করছেন, বিদেশী একটি ভাষায় পড়াশোনা করতে কতটা অসুবিধা হয়েছিল৷ তিনি জানান প্রথম প্রথম বেশ অসুবিধা হয়েছিল এরপর তিনি এক বছরের একটি কোর্স করেন৷ ধীরে ধীরে ভাষাটিকে তিনি আয়ত্ব করেন৷ এখন কোন সমস্যাই নেই৷

মাহমুদ খান পুরোপুরি নয় – আংশিক বৃত্তি ও কিছুটা ঋণ পেয়েছেন জার্মান সরকারের কাছ থেকে যা ‘বাফোগ' নামে পরিচিত এবং একই সাথে তিনি কাজও করছেন৷ এভাবেই চালাচ্ছেন তার পড়াশোনার খরচ৷ তিনি বলেন পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করা যায় কিন্তু পড়ার চাপ এত বেশী থাকে যে সব সময় কাজ করাও যায় না৷ তারপরেও তিনি কাজ করেন৷ প্রতি সেমিস্টার ফি হচ্ছে ১৫০ ইউরো অর্থাত্ প্রায় ৮ হাজার ১০০ রুপি বা ১১ হাজার ৭০০ টাকা৷ এই খরচটুকু তিনি নিজেই বহন করেন৷ এছাড়াও তিনি জার্মান সরকারের কাছ থেকে আংশিক বৃত্তি পেয়েছেন Bafoeg নামক বৃত্তি প্রদানকারী সংগঠন থেকে৷


ফাখহোখশুলে কোলোনে আবেদন পত্র পাঠানোর ঠিকানা


University of Applied Sciences Cologne

C/O uni-assist e৷V৷

Helmholtzstr 2-9

D- 10587 Berlin

GERMANY