1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গির্জা কেলেঙ্কারি – পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানালেন ম্যার্কেল

১৮ মার্চ ২০১০

জার্মানির ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানালেন চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ শীর্ষ ক্যাথলিক নেতা সলিচও এবিষয়ে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/MViS
জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

অপরাধ দেখেও না দেখার ভান করা, ক্ষমতা থাকলেও সেই অপরাধের জন্য শাস্তি না দেওয়া এবং ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা – একেও কি অপরাধ বলা যায়? সাধারণ মানুষ হিসেবে এবিষয়ে মনে কিছুটা দ্বন্দ্ব জাগতে পারে, কিন্তু ধর্ম, নৈতিকতা বা জীবনধারণ সম্পর্কে যাঁরা সমাজকে শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তাঁরাই যদি অপরাধ করেন বা নীরব থেকে নিজেদের নিষ্ক্রিয়তা প্রদর্শন করেন, তাহলে সাধারণ মানুষের মনে তীব্র ক্ষোভ জন্মানো স্বাভাবিক৷ সেইসঙ্গে বিশ্বাসের মূলে আঘাত, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্র বা প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারানোর মত বোধও জেগে উঠতে পারে৷

এই মুহূর্তে ইউরোপের কিছু দেশের মত জার্মানিতেও এমন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে নানাভাবে৷ একের পর এক রোমান ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনার কথা জানা যাচ্ছে৷ সেইসঙ্গে দেখা যাচ্ছে নিষ্ক্রিয়তার নানা উদাহরণ৷ ধর্মীয় নেতারা প্রায়ই দায়সারাভাবে সেই সব মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছেন, যাঁরা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাজক বা শিক্ষকদের বিকৃত যৌন বাসনার শিকার হয়েছেন৷ কিন্তু এমন নিপীড়ন শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ নয় – এমন যুক্তি দেখিয়ে বিষয়টিকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন৷ ঘটনাগুলির নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের কড়া শাস্তির বিষয়েও তাঁদের যথেষ্ট আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না৷ এমনকি গণতান্ত্রিক কাঠামোয় অপরাধ দমনে রাষ্ট্রের একচেটিয়া অধিকারের বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলছে ধর্মীয় মহলের একাংশ৷ রোমান ক্যাথলিক ধর্মের শীর্ষ ব্যক্তি – অর্থাৎ পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টও এতদিন বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করলেও বা জার্মানির ক্যাথলিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেও নীরব ছিলেন৷ জার্মান পোপের এই নীরবতার ফলে ক্ষোভ আরও বেড়ে গেছে৷ প্রবল চাপের মুখে তিনি বুধবার মুখ খুললেন৷ তবে তিনি শুধু আয়ারল্যান্ডে ক্যাথলিক গির্জার কেলেঙ্কারির সম্পর্কেই বক্তব্য রাখলেন৷ তিনি বললেন, ‘‘আপনারা জানেন, গত কয়েক মাসে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির ফলে আয়ারল্যান্ডের ক্যাথলিক গির্জা বিশাল সমস্যায় পড়েছে৷ গভীর দুশ্চিন্তা থেকে আমি এই মর্মান্তিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি চিঠি লিখেছি৷''

শুধু পোপ নয়, চাপের মুখে পড়েছেন জার্মানির খ্রীস্টীয় গণতন্ত্রী দলের নেত্রী ও চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও৷ তিনি অবশ্য বুধবার মুখ খুলেছেন৷ সংসদে ম্যার্কেল জার্মানিতে ক্যাথলিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়নের সব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন৷ কোন রাখঢাক না করে তিনি প্রকৃত সত্য উন্মোচনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন৷ এই উদ্দেশ্যে জার্মান সরকার আগামী ২৩শে এপ্রিল এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করছে৷ আগামী সপ্তাহে মন্ত্রীসভা এক সামগ্রিক কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন আইন মন্ত্রী সাবিনে লয়টহয়সার শ্নারেনরব্যার্গার৷ জার্মানির ক্যাথলিক বিশপ সংগঠনের প্রধান রোব্যার্ট সলিচ সংসদের সব দলের কাছে নিপীড়নের সব ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন৷ দোষীদের শাস্তির সঙ্গে সঙ্গে যারা এই জঘন্য ঘটনার শিকার হয়েছে, তাদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিও শোনা যাচ্ছে৷

প্রতিবেদক : সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ