1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল এর ভাষণ

আবদুস সাত্তার২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭

জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রথমবারের মত ভাষণ দিলেন এবং প্রশংসা অর্জন করলেন৷ ভাষণে তিনি জাতিসংঘের সংস্কারের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে জার্মানির স্থায়ী আসন লাভের দাবি জানালেন আবারো৷ এ ছাড়া, তাঁর ভাষণে

https://p.dw.com/p/DPiU
ছবি: AP

আরো স্থান পায় ইরান ও বিশ্বের জলবায়ু পরিস্থিতি৷

জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া তাঁর প্রথম ভাষণে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘের সংস্কারের কথা উল্লেখ করলেন এবং নিরাপত্তা পরিষদে জার্মানির স্থায়ী আসন লাভের দাবি আবারো জানালেন৷ তিনি বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান কাঠামো আজকের বিশ্ব পরিস্থিতির সাথে খাপ খায় না একেবারেই ৷ তাই বাস্তবতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই ৷ জার্মানি বিগত বছরগুলোতে এই বিতর্কে তার নীতি-অবস্থানের কথা জানিয়েছে জোরদারভাবে৷ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি স্থায়ী আসন গ্রহণের মাধ্যমে জাতিসংঘে আরো বেশি দায়িত্ব গ্রহণে জার্মানি প্রস্তুত৷

কিন্তু জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল এর এই প্রস্তুতিতে বাধ সেধেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া তাঁর ভাষণে৷ তিনি সেই ভাষণে জাপানের স্থায়ী আসনের পক্ষে মত প্রকাশ করেন৷

উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি স্থায়ী আসন লাভের প্রচেষ্টা করেছিলেন তদানীন্তন জার্মান চ্যান্সেলার গ্যারহার্ড শ্রোয়েডারও৷ কিন্তু চার বছর আগে তাঁর সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়৷ একজন কুটনীতিক বলেন, সে সময় এ ব্যাপারে শ্রোয়েডার এর সফল হওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না৷ কারণ তিনি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইরাক যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলেন৷ আর একজন বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন লাভের জন্য জার্মানিকে হয়তো আরো অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে৷ সম্ভবত সে সময় পর্যন্ত ম্যার্কেল আর জার্মানির চ্যান্সেলার থাকবেন না৷ বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরাও জাতিসংঘের আধুনিকীকরণের আহ্বান জানিয়েছেন৷

জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া তাঁর প্রথম ভাষণে ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি প্রশ্নে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন৷ এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিশ্বব্যপী জলবায়ু নীতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন৷

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এর আমন্ত্রণে জার্মান চ্যান্সেলার একটি নৈশ ভোজে যোগ দেন৷ তাতে বিশ্বের শীর্ষ রাজনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন৷ উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশও৷ তাঁর সফরের দ্বিতীয় দিনে ম্যার্কেল একটি দুর্লভ সম্মান লাভ করেন৷ The Appeal of Conscience Foundation তাঁকে ভূষিত করেন World Statesman-বিশ্ব রাজনীতিবিদ এর সম্মানে৷ আন্তধর্মীয় এই ফাউন্ডেশন বিচক্ষণতা ও সাহসিকতার জন্য এই খেতাবটি দিয়ে থাকে৷ নিউ ইয়র্কের Rabbi Arthur Schneider ফাউন্ডেশনটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ ধর্মীয় সহনশীলতা এবং মানবাধিকারের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন৷

ম্যার্কেলকে সম্মান জানাতে ফাউন্ডেশন যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাতে প্রশংসাসূক বক্তব্য রাখেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিন্জার যিনি তাঁর বাবা মা এর সাথে শিশু বয়সে নাত্ সীদের ভয়ে জার্মানি ত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন৷ ম্যার্কেল ভবিষ্যতেও চরমদক্ষিণপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন৷ তাঁর আগে এই সম্মান লাভ করেন তাঁর পূর্বসুরী গ্যারহার্ড শ্রোয়েডার৷

এদিকে, নিউ ইয়র্ক থেকে দেশে ফিরে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের প্রতি আহ্বার জানিয়েছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ওপর আরো সহিংসতা পরিত্যাগের জন্য৷ আজ জার্মান মন্ত্রীসভায় তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রেঙ্গুনের সামরিক সরকার মিয়ানমারে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যত গড়ে তোলার পথে কোন বাধা সৃষ্টি করবে না৷ মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে জার্মান সরকারের উপ-মুখপাত্র Thomas Steg এ কথা বলেন৷ বার্লিনে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে জার্মান পররাষ্ট্র দফতরে তলব করে তাঁর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জার্মানির ক্ষোভের কথা জানানো হয়৷