1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অ্যাসাইলাম কেলেঙ্কারি

২৫ মে ২০১৮

অভিবাসন আর অ্যাসাইলামের কথা উঠলেই আজকাল জার্মানরা মাথা গরম করে বসেন৷ এই পরিস্থিতিতে ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু কার্যালয় ‘বাম্ফ’-এর কেলেঙ্কারি গোলমাল আরো বাড়িয়েছে, বলে ডয়চে ভেলের ইয়েন্স টুরাউয়ের ধারণা৷

https://p.dw.com/p/2yIt2
জার্মানির অভিবাসন সংস্থার প্রধান ইউটা কর্ড্টছবি: picture-alliance/dpa/B. von Jutrcenka

অথচ পরিসংখ্যান বলছে যে, উদ্বাস্তু পরিস্থিতি ধীরে ধীরে থিতিয়ে আসছে৷ দু'বছর আগে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনের ৬২ শতাংশ মঞ্জুর হতো; ২০১৭-র প্রথম কয়েক মাসে তা নেমে দাঁড়ায় মাত্র ৩২ শতাংশে৷ দু'বছর আগে কর্তৃপক্ষ বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুদের আগমনে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন – আজ তাদের কর্মীসংখ্যা বেড়েছে, উদ্বাতুদের ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া আরো অনেক দক্ষ ও সংগঠিত হয়েছে৷

পপুলিস্টদের পালে হাওয়া

ঠিক এই সময়েই অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কিছু কিছু শাখার চরম ব্যর্থতার খবর জার্মানিকে টলিয়ে দিল৷ বিশেষ করে ব্রেমেনে দৃশ্যত অপরাধমূলক কার্যকলাপ ঘটেছে: এক কথায়, ব্রেমেনে যত রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে, তা আর কোথাও নয়৷ একটি বিভাগীয় কার্যালয়ের প্রধান দৃশ্যত জ্ঞানত জুয়াচুরি করেছেন: এমন সব মামলার দায়িত্ব নিয়েছেন, যা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না – ফলে প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে৷

উদ্বাস্তুদের আগমন যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু কার্যালয় ‘বাম্ফ’-এর ব্রেমেন শাখার কর্মীরা দৃশ্যত কাজের চাপ সামলাতে না পেরে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের প্রায় বিনা পরীক্ষাতেই অ্যাসাইলাম দিয়েছেন৷ পরে গাফিলতি ঢাকার চেষ্টা করলে পরও, সংশ্লিষ্ট কেলেঙ্কারি জার্মানির যাবতীয় দক্ষিণপন্থি পপুলিস্ট ও বহিরাগত বিদ্বেষিদের নতুন ইন্ধন জুটিয়েছে৷

‘বাম্ফ’-এর মতো একটি সরকারি বিভাগ, সারা দেশে যাদের প্রায় ১০০টি কার্যালয় ও বেশ কয়েক হাজার কর্মী আছে – সেখানে ভুল তো অবশ্যই হতে পারে, বিশেষ করে যদি তাদের ওপর হঠাৎ কোনো বড় চাপ আসে, ২০১৫ সালের উদ্বাস্তু সংকটের সময় যেমন এসেছিল৷ কিন্তু ‘বাম্ফ’-এর আরো সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল, কেননা অধিকাংশ জার্মান রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানের প্রক্রিয়াটিকে অত্যন্ত জটিল ও দুর্বোধ্য বলে মনে করেন৷ ‘বাম্ফ’-এর কোনো অফিসে সন্দেহজনক কিছু ঘটছে, বলে যদি তারা আঁচ পান, তবে তাদের সন্দেহ বাতিক চরমে যে চরমে উঠবে, তা স্বাভাবিক৷ তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ব্রেমেন অফিসকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া বিরত করা হয়েছে – সন্দিগ্ন দেশবাসীদের প্রতি একটি সঠিক সংকেত৷

সংসদের বিরোধীদলগুলির মধ্যে এফডিপি ও এএফডি একটি সংসদীয় তদন্ত কমিটির ধুয়ো তুলেছে – যদিও তাতে কোনো লাভ হবে না৷ বিশেষ করে এএফডি এই কমিটিকে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের উদ্বাস্তু নীতির সমালোচনা করার কাজে লাগাবে, কেননা এএফডি সব ধরণের অভিবাসনের বিরোধী; রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানের প্রক্রিয়া কাজ করল কি না করল, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই৷

ইয়েন্স টুরাউ
ইয়েন্স টুরাউ, ডয়তে ভেলে

উদ্বাস্তুদের ‘উকিল’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং

নতুন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিএসইউ দলের হর্স্ট জেহোফারকে এবার দেখাতে হবে যে, পরিস্থিতি মাত্রা ছাড়ানোর আগেই তিনি এই কেলেঙ্কারির মোকাবিলা করতে সক্ষম৷ সিএসইউ প্রধান ও বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি গত তিন বছর ধরে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের উদ্বাস্তু নীতির তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন৷ এখন তিনি নিজেই ফেডারাল অভিবাসন ও উদ্বাস্তু দপ্তরের – এবং সেখানে যে অগুনতি সৎ ও পরিশ্রমী কর্মীরা কাজ করেন, তাদের সর্বেসর্বা৷ স্বভাবতই ঐ কর্মীরা তাদের দপ্তরের সুনাম নিয়ে চিন্তিত৷

শুধু ‘বাম্ফ’-এর সৎ কর্মচারীদের জন্যই নয়, এক হিসেবে জেহোফারকে উদ্বাস্তুদের হয়েও ওকালতি করতে হবে – বিশেষ করে সেই সব উদ্বাস্তু, যারা বৈধ ও ন্যায্যভাবে জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের অধিকার পেয়েছেন৷ ব্রেমেন কেলেঙ্কারিতে একদিকে যেমন তদন্ত চলবে, অন্যদিকে তেমন খেয়াল রাখতে হবে, যাতে যাবতীয় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে নির্বিচারে দোষী সাব্যস্ত না করা হয়৷

ইয়েন্স টুরাউ/এসি