1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে প্রথম সমকামী বিবাহ

২ অক্টোবর ২০১৭

জার্মানিতে সমকামী পুরুষ ও মহিলারা এতদিন তাদের সম্পর্ক রেজিস্ট্রি করতে পারতেন বটে, কিন্তু নারী-পুরুষের বিবাহের যাবতীয় আইনগত অধিকার পেতেন না৷ রবিবার থেকে জার্মানিতে সমকামী বিবাহ সম্ভব ও বৈধ৷

https://p.dw.com/p/2l5eV
ছবি: Reuters/A. Schmidt

বার্লিনের দুই সরকারি কর্মচারি – কার্ল ক্রাইলে ও বোডো মেন্ডে রবিবার জার্মানির প্রথম সমকামী দম্পতি হিসেবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন৷ এর পটভূমিতে রয়েছে গত জুন মাসে জার্মান সংসদের ভোট, যার মাধ্যমে সমকামীদের বিবাহ ও দত্তক নেওয়া বৈধ করা হয়৷ বার্লিনের মেয়র মিশায়েল ম্যুলার নবদম্পতিকে অভিনন্দন জানান ও তাঁদের বিবাহকে একটি ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন৷

‘‘সকলের জন্য বিবাহ পূর্ণাঙ্গ আইনগত ও সামাজিক সাম্যের পথে একটি মাইলফলক,’’ বলেন ম্যুলার৷ এর পাশাপাশি যেসব সমকামী পুরুষ ও মহিলা সমানাধিকারের জন্য বহু বছর ধরে সংগ্রাম করে আসছেন, তাঁদের প্রশংসাও করেন তিনি৷

২০০১ সাল থেকেই সমকামী যুগলরা সিভিল ম্যারেজের মতো তাদের সিভিল পার্টনারশিপ রেজিস্ট্রি করতে পারতেন৷ সংসদে ভোটের পর এবার তারা পূর্ণ বৈবাহিক সমতা পেলেন৷ এর ফলে নারী-পুরুষের সিভিল ম্যারেজ ও সমকামীদের সিভিল পার্টনারশিপের মধ্যে ব্যবধানের অন্ত ঘটল৷ সমকামী যুগলরা যে সন্তান দত্তক নিতে পারতেন না, বিশেষ করে সেই বাধাটি দূর হলো৷

কার্ল ক্রাইলে-র বয়সএখন ৫৯ বছর৷ বোডো মেন্ডে-র ৬০৷ দু'জনের প্রথম আলাপ ১৯৭৯ সালে সাবেক পশ্চিম বার্লিনে৷ তখন থেকেই তাঁরা জার্মানিতে সমকামীদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে আসছেন৷ ‘‘এটি একটি আবেগপূর্ণ মুহূর্ত যার প্রতীকী গুরুত্ব অসীম,’’ বলেন ক্রাইলে৷ ‘‘বিবাহ শব্দটিতে উত্তরণ প্রমাণ করে যে, জার্মান রাষ্ট্র আমাদের বাস্তবিক সমান বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে৷’’

সাংবিধানিক বাধা

গত জুন মাসে পরিস্থিতি হঠাৎ পাল্টে যায়, যখন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সমকামী বিবাহ প্রসঙ্গে তাঁর দলের বিধায়কদের নিজেদের বিবেক অনুযায়ী ভোট দেবার সুযোগ দেন৷ ম্যার্কেল স্বয়ং সমকামী বিবাহের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও, সাংসদদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বিলটির সপক্ষে ভোট দেন৷ ফলে জার্মানি ইউরোপে চতুর্দশ ও বিশ্বের ২৩তম দেশ হিসেবে সমকামী বিবাহকে বৈধ করে৷

Same-sex marriage in force

‘‘আমার মতে, এই বিল এতদিন দেরি করানো ও (ম্যার্কেলের) পক্ষে তার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়াটা অশোভন হয়েছে,’’ বলে মন্তব্য করেন সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সাংসদ ও সমকামী বিষয়ক কমিশনার ইওহানেস কার্স৷ কার্স এএফপি সংসাদ সংস্থাকে বলেন যে, লিঙ্গ অথবা যৌন প্রবণতার কারণে বৈষম্যের বিরুদ্ধে পূর্ণ সুরক্ষার জন্য এখনও সংবিধান সংশোধন করার প্রয়োজন রয়েছে৷ ‘‘সে সব ধীরে ধীরে করতে হবে৷ আসল কথা হলো, আমরা বিবাহের ক্ষেত্রে দুয়ার খুলে দিয়েছি, যা সংকেত হিসেবে কাজ করবে,’’ বলেন কার্স৷

জার্মান সমাজ সমকামী বিবাহকে মেনে নিয়েছে

জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, ৭৫ শতাংশ জার্মান সমকামী বিবাহের পক্ষে৷

২০১৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জার্মানিতে প্রায় ৯৪,০০০ সমকামী যুগল একত্রে বাস করেন৷ তাঁদের মধ্যে ৪৩,০০০ নিজেদের সম্পর্ককে ‘সিভিল পার্টনারশিপ’ হিসেবে রেজিস্ট্রি করেছেন৷

জার্মানির সমকামী পুরুষ ও মহিলা সমিতি এলএসভিডি-র বার্লিন শাখার প্রধান ইয়র্গ স্টাইন্যার্ট বলেন যে, বিবাহ করতে পারার ফলে সমকামী দম্পতিরা নানা ধরণের সুযোগযুবিধা পাবেন, দত্তক নেওয়ার অধিকার যার মধ্যে অন্যতম৷ সমকামী দম্পতির দত্তক নেওয়ার প্রথম ঘটনা আগামী চৌঠা অক্টোবর বার্লিনে ঘটতে চলেছে বলে তিনি জানান৷

বার্লিনের কিছু কিছু শহরে রবিবারও রেজিস্ট্রি অফিস খোলা রাখা হয়, যাতে দেশের প্রথম সমকামী দম্পতিরা তাদের বিবাহ উদযাপন করতে পারেন৷ উত্তরের হামবুর্গ শহর ও বার্লিনের শ্যোনেব্যার্গ এলাকা ছিল তার মধ্যে অন্যতম৷ অপরদিকে দৃশ্যত বিভিন্ন রেজিস্ট্রি অফিসের সফ্টওয়্যারে পুরুষ ও পুরুষ বা মহিলা ও মহিলার বিবাহের বিকল্পটি না থাকায়, গোড়ায় দম্পতিদের একজনের লিঙ্গ ভুল দেখাতে হয়েছে৷ তবে সফ্টওয়্যারের গলদ ঠিক করা হচ্ছে বলে প্রকাশ৷

এসি/এসিবি (ডিপিএ, এপি, এএফপি)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...