1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হামবুর্গে শেষ হলো সম্মেলন

৮ জুলাই ২০১৭

প্রতিবাদকারীদের অর্থহীন হিংসার তীব্র নিন্দার ক্ষেত্রে অটুট ঐক্য সত্ত্বেও জলবায়ু সংরক্ষণ ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিবাদ মেটাতে পারলেন না জি-টোয়েন্টি শীর্ষ নেতারা৷ হামবুর্গ থেকে এই সম্মেলনের মূল্যায়ন করছেন ব্যার্ন্ড রিগার্ট৷

https://p.dw.com/p/2gD6C
হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে ট্রাম্প ও ম্যার্কেল
ছবি: Getty Images/U. Michael

জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের শেষে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল পুলিশবাহিনীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন৷ গত কয়েক দিনে পুলিশকর্মীরা যে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে শীর্ষ নেতা ও তাঁদের প্রতিনিধিদলের সুরক্ষার গ্যারেন্টি দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন, সেই প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেন তিনি৷ সেইসঙ্গে দুই রাত ধরে জঙ্গি বিশ্বায়ন-বিরোধীদের হিংসা ও তাণ্ডবের তীব্র সমালোচনাও করেন ম্যার্কেল৷ তাঁর মতে, রাজনৈতিক সমালোচনার দোহাই গিয়ে তারা আসলে গণতান্ত্রিক সমাজের গণ্ডি অতিক্রম করেছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার করেন ম্যার্কেল৷

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে ঐক্যের অভাব

কড়া নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে প্রতিবাদকারীরা সম্মেলনের মূল মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে নি৷ সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে অনেক বিষয় অস্পষ্ট থেকে গেছে৷ আর্থিক বাজারের নিয়ন্ত্রণে আরও উদ্যোগ এবং সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন বন্ধ তথা কর ফাঁকি মোকাবিলার প্রশ্নে ২০টি সদস্য দেশই ঐকমত্য দেখাতে পেরেছে৷ কিন্তু অতীতের ঐতিহ্য ভুলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলার ক্ষেত্রে সেই ঐক্য দেখা গেল না৷ একদিকে ১৯টি সদস্য দেশ, অন্যদিকে সদ্য প্যারিস চুক্তি বাতিল করা মার্কিন প্রশাসন৷ হামবুর্গ শহরে এসেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের অবস্থানে অটল রইলেন৷ এমন এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে ঐক্যের অভাবের কারণে দুঃখ প্রকাশ করেন ম্যার্কেল৷ প্যারিস চুক্তির প্রতি সমর্থনের কারণে বাকি শীর্ষ নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি৷

প্রথম সাক্ষাতে ট্রাম্প ও পুটিন
হামবুর্গেই প্রথম মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প ও পুটিনছবি: Reuters/Courtesy of Bundesregierung/S. Kugler

পুটিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক

আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে হয়েও মোটেই বিচলিত নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ তিনি ম্যার্কেল-এর শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রশংসা করে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ হামবুর্গের মঞ্চকে তিনি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য ব্যবহার করেছেন৷ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্পর্কে নিজের অনীহা গোপন করেন নি ট্রাম্প৷মার্কিন ও রুশ পক্ষের কাছে তাদের দুই শীর্ষ নেতার প্রথম সাক্ষাৎ ছিল এবারের সম্মেলনের সেরা ঘটনা৷ সিরিয়ায় আংশিক অস্ত্রবিরতির বিষয়ে বোঝাপড়া হয়েছে৷ নতুন মার্কিন প্রশাসনের কাছে এটা একটা কূটনৈতিক সাফল্য৷ গত বছর অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হ্যাকিং হামলার অভিযোগের বিষয়টি ট্রাম্প উত্থাপন করলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ সংবাদ সম্মেলনে পুটিন বলেন, টেলিভিশনের ট্রাম্প ব্যক্তি ট্রাম্পের থেকে আলাদা মানুষ বলে তাঁর মনে হয়েছে৷

বাণিজ্যের প্রশ্নে অ্যামেরিকার ছাড়

মুক্ত বাণিজ্যের প্রশ্নে অ্যামেরিকাকে বাকিদের অবস্থানে টেনে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে৷ এবার সম্মেলনের সব সদস্য মিলে ন্যায্য বাণিজ্যের প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে৷ এ ক্ষেত্রে কোনো বিঘ্ন ঘটলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগের তুলনায় আরও প্রস্তুত তারা৷ বিশেষ করে চীন যেভাবে প্রতিযোগিতার পরিবেশের ক্ষতি করছে, সে বিষয়ে অনেকের ক্ষোভ আছে৷ ট্রাম্প নিজে এমন ‘অন্যায়' তুলে ধরে বহুপাক্ষিক চুক্তির বিরোধিতা করে এসেছেন৷ ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন তিনি৷ বাণিজ্যের প্রশ্নে শেষ পর্যন্ত তাঁর মত বদল করতে পারা সম্মেলনের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷

আফ্রিকার সঙ্গে নতুন সহযোগিতা

আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবারের সম্মেলনে নিজের এক ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছেন৷ জি-টোয়েন্টি আফ্রিকার সঙ্গে নতুন এক বিনিয়োগ চুক্তি করেছে৷ বেসরকারি সংস্থার সরাসরি বিনিয়োগের মাধ্যমে আফ্রিকার অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে৷ এই লক্ষ্য পূরণ হলে সেখানকার অসংখ্য মানুষ রুজিরুটির খোঁজে আর ইউরোপের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবেন না – এমনটাই আশা করা হচ্ছে৷

মতপার্থক্য নিয়ে রাখঢাক করেন নি ম্যার্কেল
মতপার্থক্য নিয়ে রাখঢাক করেন নি ম্যার্কেলছবি: Reuters/A. Schmidt

সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাব দেখছে অক্সফ্যাম

মহামারি মোকাবিলায় আরও উদ্যোগ, নারীর ক্ষমতায়নের মতো বিষয়ে জি-টোয়েন্টি আরও সক্রিয় হতে চায়৷ সেইসঙ্গে শিক্ষাও সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বড় চাবিকঠি৷ তা সত্ত্বেও সম্মেলনে নাগরিক সমাজের বেশ কয়েকটি সংগঠন সম্মিলিত সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে৷ অক্সফ্যামের প্রতিনিধি ডয়চে ভেলেকে বলেন, সামাজিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সব সদস্য দেশের সমান আন্তরিকতা নেই৷ অথচ এই সাম্যের অভাবের কারণে সমাজে বিভাজন বাড়ছে, গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে উঠছে৷

এবারের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ইভানকা ট্রাম্প একবার তাঁর বাবার প্রতিনিধিত্ব করেন৷ ম্যার্কেল অবশ্য প্রকাশ্যে এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখেন নি৷ আগামী বছর আর্জেন্টিনা জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীর সভাপতির দায়িত্ব পাচ্ছে৷

ব্যার্ন্ট রিগার্ট/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য