1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জিএম খেলোয়াড়

২৩ জুলাই ২০১২

লন্ডন অলিম্পিকে পদক জিততে কেউ হয়ত নিষিদ্ধ ওষুধ সেবনের ঝুঁকি নিতে পারেন৷ কেউবা, নিজের শরীরে কৃত্রিম ডিএনএ ঢুকিয়ে দিতে পারেন৷ কেননা, নিষিদ্ধ ওষুধ খেয়ে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও পরিবর্তিত ডিএনএ ধরার কোনো উপায় এখনো বের হয়নি৷

https://p.dw.com/p/15dDw
ছবি: Fotolia/Sven Bähren

নিষিদ্ধ ওষুধ সেবনের বিষয়টা পরিচিত ‘ডোপিং' নামে৷ এই ওষুধের কারণে শরীরের মাংসপেশিগুলো আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে৷ এছাড়া পেশিতে রক্তকোষের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত অক্সিজেন উৎপাদন হয়ে থাকে৷ ফলে সব মিলিয়ে খেলার সময় একজন ক্রীড়াবিদ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চনমনে থাকেন৷ যার প্রভাব পড়ে খেলায়৷ এতে পদক জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷

ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যখন দেখা গেছে যে, কোনো খেলোয়াড় পদক জিতেছেন ঠিকই, কিন্তু ডোপিং পরীক্ষার পর তাঁর পদক কেড়ে নিতে হয়েছে৷ সাবেক পূর্ব জার্মানিতে ডোপিং-এর বেশ প্রচলন ছিল৷

Symbolbild Model DNA Molekül
পরিবর্তিত ডিএনএ ধরা বেশ কঠিনছবি: AP

ডোপিং থেকে বাঁচার অনেক উপায় বের করেছেন খেলোয়াড়রা৷ কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে পরীক্ষণ পদ্ধতি আরও নিখুঁত হচ্ছে৷ ফলে খেলোয়াড়রা এখন এমন কিছু আবিষ্কার করতে ব্যস্ত যেটাতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম৷

এমনই এক পদ্ধতি হতে পারে কৃত্রিম ডিএনএ'র ব্যবহার৷ পরীক্ষাগারে তৈরি ডিএনএ বাহক ভাইরাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকিয়ে দেয়া যায়৷ অন্তত তত্ত্বীয়ভাবে এটা সম্ভব বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন৷ তাঁরা এটাও বলছেন যে, এভাবে কোনো খেলোয়াড় ডিএনএ'র সাহায্য নিলে পরীক্ষা করে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার কোনো উপায় এখনো বের হয়নি৷

নতুন এই পদ্ধতির নাম ‘জিন ডোপিং'৷ এ বিষয়ের এক বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি মিয়া৷ বিভিন্ন অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় ডোপিং-এর ব্যবহার নিয়ে তাঁর অনেক লেখা রয়েছে৷ মিয়া বলছেন, ‘‘জিন ডোপিং শনাক্তকরণের কোনো উপায় এখনো বের করা যায়নি৷ এ জন্য আরও কয়েক বছর লাগতে পারে৷ ফলে লন্ডন অলিম্পিকে যদি ‘জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড' কোনো খেলোয়াড় ১০০ মিটার স্প্রিন্টে জয়ী হয়, তাহলে আমরা তাঁকে অপরাধী প্রমাণ করতে পারব না৷''

যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক ডন ক্যাটলিন বলছেন, ‘‘কৃত্রিম ডিএনএ-র ব্যবহার একজন খেলোয়াড়কে শক্তিশালী করতে পারে৷ তত্ত্বীয়ভাবে এটা সম্ভব৷ হয়তো কোনো খেলোয়াড় এটা এখনই ব্যবহার করছেন, যেটা আমরা জানি না৷'' কৃত্রিম ডিএনএ শরীরে ঢোকানো ঝুঁকির হলেও অনেক ক্রীড়াবিদ সাফল্য পেতে এই ঝুঁকি নিতে রাজি হবেন বলে মনে করেন ক্যাটলিন৷

‘স্পোর্টস জেনোমিকস'-এর এক বিশেষজ্ঞ অ্যালুন উইলিয়ামস বলছেন, জিন ডোপিং শনাক্ত করার উপায় এখনো বের হয় নি৷ সাধারণ ডোপিং পরীক্ষার জন্য খেলোয়াড়দের রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনাই যথেষ্ট৷ কিন্তু জিন ডোপিং পরীক্ষা করতে হলে প্রতিটি পেশি পরীক্ষা করে দেখতে হবে, যেটা অবাস্তব৷

Gen-Doping Manipulation von Myostatin Flash-Galerie
‘জিন ডোপিং' প্রথমে ইঁদুরের উপর প্রয়োগ করা হয়েছিলছবি: Johns Hopkins University, Baltimore

তবে এটাকে সম্ভব করতে কাজ চলছে৷ ‘ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সি' -বা ওয়াদা ২০০৩ সালে জিন ডোপিং-কে নিষিদ্ধের তালিকায় যোগ করেছে৷ এবং তখন থেকেই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বিশ্বের বড় বড় সব চিকিৎসককে একটা শনাক্তকরণ উপায় বের করার কাজে নিয়োগ দিয়েছে৷

এদিকে ডোপিং নিয়ে এত কথা হলেও আরেক দল বিজ্ঞানী বলছেন, ভবিষ্যতে নিষিদ্ধ ওষুধ, জিন ডোপিং বা প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া খেলাধুলায় আর রেকর্ডের দেখা পাওয়া নাও যেতে পারে৷ তারা বলছেন, বিভিন্ন ইভেন্টে এখন যে রেকর্ডগুলো রয়েছে সেগুলো মানুষের সর্বোচ্চ ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে৷

প্যারিসের ‘ইনসেপ স্পোর্টস ইনস্টিটিউট'-এর বিশেষজ্ঞ জিওফ্রে বের্থেলট ১৮৯৬ থেকে অলিম্পিকের বিভিন্ন রেকর্ড নিয়ে গবেষণা করেছেন৷ তিনি অংক কষে বলেছেন, স্বাভাবিক সক্ষমতায় মানুষের পক্ষে যেটা করা সম্ভব তার প্রায় ৯৯ শতাংশ করা হয়ে গেছে৷ ২০২৭ সালের পর প্রায় ৭৫টির মতো ইভেন্টে আর রেকর্ড করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে মন্তব্য করেন এই গবেষক৷

পেনসিলভেনিয়ার ব্লুমসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজা নুবারি বলছেন, মানুষের স্বাভাবিক ক্ষমতা অনুযায়ী, সবচেয়ে কম ৯.৪০ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড় শেষ করা সম্ভব৷ যেটার বর্তমান রেকর্ড জ্যামাইকার উসাইন বোল্টের৷ তিনি ৯.৫৮ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেছেন৷

বিজ্ঞানীদের এসব কথাবার্তার একটা প্রমাণ হচ্ছে, গত ২১ বছর ধরে পুরুষদের লং জাম্পের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি৷ পোলভোল্টের রেকর্ডও অটুট আছে গত ১৮ বছর ধরে৷

তবে এসবের পরও বিজ্ঞানীরা স্বীকার করেছেন, যদি কোনো অসামান্য প্রতিভার অধিকারী খেলোয়াড়ের জন্ম হয় তাহলে সেক্ষেত্রে কোনো হিসেবই কাজে আসবে না৷

জেডএইচ / ডিজি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য