1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঝড়বাদলের মধ্যেও দৌড়ঝাঁপ চলল

২২ আগস্ট ২০০৯

বার্লিনে বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে এই প্রথম বৃষ্টিবাদল৷ তবুও প্রতিযোগিতা যথারীতি চলেছে৷ এবং স্টেডিয়াম মাতালেন যিনি, তিনি গতকাল মাঠেই নামেননি৷

https://p.dw.com/p/JGDl
একটি ভুলে জার্মানির সুযোগ নষ্টছবি: picture-alliance/ dpa

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের এ্যালিসন ফেলিক্স ২২.০২ সেকেন্ডে ২০০ মিটার দৌড়ে মহিলাদের সোনা জিতলেন৷ কিন্তু আরো বড় কথা, পর পর তিনটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে এই খেতাবটি আর কোনো মহিলা জয় করেননি৷ দ্বিতীয় হয়েছেন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, জামাইকার ভেরোনিকা ক্যাম্পবেল-ব্রাউন৷ পুরুষদের ৪০০ মিটারে ব্যাপারটা হল ঠিক উল্টো৷ অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের লা-শন মেরিট হারিয়েছেন দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জেরেমি ওয়ারিনার’কে৷ ওয়ারিনারও আবার যুক্তরাষ্ট্রের৷

কামেল কি তাঁর বাবা বিলি কনচেল্লা’কে ধরতে চলেছেন?

১,৫০০ মিটারে সবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাহরেনের ইউসুফ সাদ কামেল তাঁর বাবা বিলি কনচেল্লার মতো ৮০০ মিটার জেতার পথে আর এক পা এগিয়েছেন ফাইনালের জন্য কোয়ালিফাই করে৷ অপরদিকে ৮০০ মিটারে খেতাব পাবার ফেবারিট, সুদানের আবুবাকের কাকি অন্য এক প্রতিযোগীর জুতোর কাঁটায় হোঁচট খেয়ে থুবড়ে পড়লেন৷ এ-ধরণের ট্র্যাজেডি এ্যাথলেটিক্সের ইতিহাস জুড়ে৷

রিলেতে দু’দুবার ফস্কা গেরো!

শনিবার পুরুষদের চারবার একশো মিটারের রিলের জন্য জামাইকাকে কোয়ালিফাই করতে হল ইউসোইন বোল্ট এবং আসাফা পাওয়েল ছাড়াই৷ কাজেই কোয়ালিফাইং লিস্টে জামাইকার স্থান হল সপ্তম৷ সেক্ষেত্রে দ্রুততম সময় করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু পরে ব্রিটিশ দলের প্রতিবাদে তাদের ডিসকোয়ালিফাই করা হয়, কেননা শন ক্রফোর্ড থেকে ডার্ভিস প্যাটনের কাছে তৃতীয়বার ব্যাটন হস্তান্তর ঘটেছে বিশ মিটার বক্সের বাইরে৷ - আর জার্মান দলের কপালে যা ঘটেছে, তা এখনও দুর্বোধ্য: বায়োমেট্রিক ছবি তুলে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, কার দোষে দ্বিতীয়বার ব্যাটন দেওয়ার সময় সেটা এক হাত থেকে আরেক হাতে গেল না - মার্কুস ব্রোয়েনিং, না আলেক্সান্ডার কোজেনকোভ, কে সেই দুর্ভাগা৷

কিন্তু বোল্ট ছাড়া বার্লিন, কিংবা এ্যাথলেটিক্স চলে না

বোল্টের ২৩তম জন্মদিন বলে শুক্রবার তাঁর ছিল ছুটি৷ তবুও তিনি মাঠে আসেন, স্ট্যান্ড থেকে স্ট্যান্ডে গিয়ে শত শত অটোগ্রাফ দেন৷ এদিন খোদ মাইক পাওয়েলকেও বলতে শোনা যায়, বোল্টের এ্যাথলেটিসিজমের কোনো তুলনা হয় না৷ বোল্ট নাকি এ-ভাবেই রেকর্ডের পর রেকর্ড করে চলবে - যদি না সে বোর হয়ে যায়, বলেছেন পাওয়েল, যিনি বব বিমনের সেই সুবিখ্যাত লং জাম্পের রেকর্ড ভাঙেন ১৮ বছর আগে৷ এবং পাওয়েলের রেকর্ড আজও বজায় আছে৷

ইতিহাসের ছায়া

১৯৩৬ সালের বার্লিন অলিম্পিকে খোদ হিটলারকে বসে দেখতে হয়, কৃষ্ণাঙ্গ জেসে ওয়েন্স কিভাবে ১০০ গজের দৌড়ে জিতলেন৷ এর পর জার্মানির লুৎস লং-এর লং জাম্পে সোনা জিতে হিটলারকে ঠান্ডা করার কথা৷ কিন্তু লং দেখা গেল ঐ ওয়েন্সকেই কোয়ালিফাইং-এ বিপদে পড়তে দেখে পরামর্শ দিচ্ছেন, তাঁর দৌড়টা আরো বাড়াবার জন্য৷ সেই পরামর্শের কল্যাণেই ওয়েন্স শুধু কোয়ালিফাই নয়, সোনাও জেতেন৷ রূপো পান লং৷ হিটলারকে রেগে-মেগে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়৷ এবং দেখা যায়, ওয়েন্স আর লং কিভাবে পরষ্পরের কাঁধে হাত দিয়ে মাঠ ছাড়ছেন৷

লুৎস লং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইটালিতে প্রাণ হারান৷ ওয়েন্স পরলোকগমন করেন ১৯৮০ সালে৷ দুই পরিবারের মধ্যে বন্ধুত্ব কিন্তু আজো৷ শনিবার বার্লিনে লং জাম্পের পদকগুলি বিজয়ীদের গলায় পরিয়ে দেবেন ওয়েন্সের পৌত্রী এবং লং-এর পুত্র৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী, সম্পাদনা: হোসাইন আবদুল হাই