1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাফিক জ্যাম থেকে অর্থ আয়

২৯ আগস্ট ২০১১

ট্রাফিক জ্যাম৷ ঢাকাবাসীর অনেক সমস্যার মধ্যে এটাও একটা অন্যতম বড় সমস্যা৷ ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় বসবাসকারীদের কাছেও ট্রাফিক জ্যাম একটা ভয়ের কারণ৷ কিন্তু এটাই আবার অনেকের জীবিকার প্রধান উৎস৷

https://p.dw.com/p/12P0i
জাকার্তার ট্রাফিক জ্যামছবি: AP

ট্রাফিক জ্যামের কারণে প্রতি বছর জাকার্তার ক্ষতি হচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার৷ কিন্তু এই সমস্যাকে কাজে লাগিয়েই ব্যবসার উপায় খুঁজে বের করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ইন্দোনেশীয় তরুণ নাদিম মাকারিম৷

২৭ বছর বয়সি এমবিএ ডিগ্রিধারী মাকারিম ‘জিও-জেক' নামের একটি কোম্পানি গড়ে তুলেছেন৷ যার কাজ হচ্ছে মোটর সাইকেলে করে যাত্রীদের জাকার্তার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া৷

জাকার্তায় অবশ্য অনেক আগে থেকেই এ ধরনের মোটর সাইকেল পরিবহনের চল ছিল৷ যানজটে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের কাছে এটা একটা প্রিয় বাহন৷ কিন্তু এতদিন ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ মোটর সাইকেল কিনে নিজেই সেটা চালাতো৷ এধরনের চালকরা স্থানীয়ভাবে ‘ওজেক' নামে পরিচিত৷

মাকারিম যেটা করেছেন সেটা হচ্ছে ব্যবসাটাকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া৷ এর ফলে যাত্রীরা যেমন উপকৃত হচ্ছে তেমনি আয় বেড়েছে চালকদেরও৷

যেমন বেছে বেছে ভাল চালকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে মাকারিমের কোম্পানিতে৷ ফলে নিরাপত্তার বিষয়ে যাত্রীরা নিশ্চিন্ত হতে পারছে৷ এছাড়া রয়েছে টেলিফোন সেবা৷ যে কেউ ফোন করে অল্প সময়ের মধ্য যে কোনো জায়গা থেকেই মোটর সাইকেল পেতে পারে৷ কেননা চালকরা জাকার্তার সব অংশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে৷ এবং কোম্পানির সঙ্গে তারা মোবাইল ফোনে সবসময় যুক্ত থাকে৷

UN-Klimakonferenz Bangkok ist zu Ende
ছবি: picture-alliance/ dpa

কোম্পানির জন্য মাকারিম একটা কল সেন্টারও খুলেছেন৷ ফলে রাস্তায় যাত্রীদের কোনো সমস্যা হলে তারা কল সেন্টারে ফোন করে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন৷ এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট ঠিকানায় কীভাবে যেতে হবে সেটাও যাত্রী ইচ্ছে করলে কল সেন্টার থেকে জেনে নিতে পারেন৷

এসব সুবিধা ছাড়াও রয়েছে হেলমেট ও বিমা সুবিধা৷ মাকারিমের কোম্পানির মোটর সাইকেলে উঠলে যাত্রীদের হেলমেট দেয়া হয়৷

প্রায় ২০০ চালক কাজ করছেন মাকারিমের জিও-জেক কোম্পানিতে৷ প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে জিও-জেক যাত্রীদের যে সুবিধা দিতে পারছে অন্যরা সেটা পারছে না৷ তাই দিন দিন বাড়ছে মাকারিমের ব্যবসা৷

মাকারিম বলছেন আগামী পাঁচ-দশ বছরে জাকার্তার ট্রাফিক জ্যাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ তাই তিনি আশা করছেন এই সময়টা তিনি ব্যবসা করতে পারবেন৷ তিনি বলছেন ছোট হওয়ার কারণে যেসব রাস্তায় ব্যক্তিগত কার বা গাড়ি যেতে পারেনা সেখানে অনায়াসে চলে যায় মোটর সাইকেল৷

মাকারিম বলছেন সব মানুষই চায় সময়মতো মিটিং'এ পৌঁছতে, কাজ শেষ করে ঘরে ফিরে সন্তান বা স্ত্রী'র সঙ্গে যতটা সম্ভব বেশি সময় কাটাতে৷ কিন্তু জ্যামের কারণে সেটা সম্ভব হয়না৷

জাকার্তার ট্রাফিক জ্যাম সমস্যা নিয়ে খুশি ওজেক চালক হারমানতো৷ কেননা এটা তার রুটি-রুজির জোগাড় করে দিচ্ছে৷ ২১ বছর বয়সি এই চালক বলছেন যখন জ্যাম বাড়ে তখন তিনি বেশি খুশি হন৷ হারমানতো আগে একটা মোবাইল ফোন বিক্রির দোকানে কাজ করতো৷ কিন্তু ওটার চেয়ে এখনকার কাজটা তার বেশি পছন্দের৷

উল্লেখ্য, একেকজন ওজেক চালক মোটর সাইকেল চালিয়ে দিনে প্রায় ১৪ ডলার বা এক হাজার টাকার মতো আয় করে থাকেন৷ যেটা দিয়ে মোটামুটি ভালভাবেই দিন চলে যায়৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম