1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিলিস্তিনের উন্নয়নে ইসরায়েলের উদ্যোগ

২২ মে ২০১৭

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার সৌদি আরব থেকে ইসরায়েল যাচ্ছেন৷ তার আগে তাঁকে ‘আস্থা গড়ার মতো কিছু’ উপহার দিতে ইসরায়েলের কাছে অনুরোধ রেখেছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/2dMA8
Auslandreise US-Präsident Trump in Saudi-Arabien - Rede
সৌদি আরবে মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন ট্রাম্পছবি: Getty Images/AFP/M. Ngan

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অনুরোধে সাড়া দিয়ে রবিবার ফিলিস্তিনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ফিলিস্তিনিদের ক্রসিং পারাপারের সময়সীমা বৃদ্ধিমূলক কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা৷

দেশটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ট্রাম্প মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ তার আগে ইসরায়েলের কাছে তিনি তাঁকে ‘কনফিডেন্স-বিল্ডিং মেজার্স’ অর্থাৎ আস্থা গড়ার মতো কিছু উপহার দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন৷ তার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ যেমন, পশ্চিম তীরের দক্ষিণ দিকে ফিলিস্তিনি শিল্পাঞ্চলের প্রসার বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে অবস্থিত অন্যতম ব্যস্ত ক্রসিং ‘শার এফরাইম’ দিয়ে পারাপারের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে৷ ফলে যে ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলে কাজের অনুমতি আছে, তাঁরা এখন থেকে দিনের যে কোনো সময় ঐ ক্রসিং পার হতে পারবেন৷

ইসরায়েলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকা পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকায় বসতি গড়তে ফিলিস্তিনের অনুমতি দেয়া হতে পারে বলেও জানা গেছে৷ এর আগে ঐ এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য অনুমতি পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের দৈনিক হারেৎস৷

সোমবার বিকেলে ট্রাম্পের জেরুসালেমে পৌঁছানোর কথা৷ এরপর তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন৷

প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প পূর্ব জেরুসালেমে অবস্থিত ‘ওয়েস্টার্ন ওয়াল’ পরিদর্শনে যাবেন৷ এ নিয়ে ক'দিন ধরেই বিতর্ক চলছে৷ কারণ, পূর্ব জেরুসালেম ইসরায়েলের মধ্যে পড়ে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে চাননি মার্কিন কর্মকর্তারা৷

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীর দখল করে৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনও তার অনুমোদন দেয়নি৷

পরবর্তীতে পূর্ব জেরুসালেমকে যুক্ত করে ইসরায়েলর পুরো জেরুসালেম শহরটি তাদের রাজধানী বলে দাবি করে৷ এদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ দেশের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে৷

ট্রাম্পের অসংগতিমূলক বক্তব্য

নির্বাচনি প্রচারণার সময় ট্রাম্প সৌদি আরব, ইসলাম ও মুসলমানদের সমালোচনা করে কট্টর বক্তব্য দিলেও রবিবার মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নরম সুর দেখা গেছে৷ ২০১৬ সালের মার্চে ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার পর ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘স্পষ্ট করে বললে, মুসলমানদের নিয়ে আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমাদের দেশে আসা মুসলমানদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে৷’’ তবে রবিবারের বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছেন ‘আরব, মুসলিম ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিরীহ মানুষ’৷

Trump urges leaders to confront extremism

নারীদের দাস হিসেবে গণ্য করায় এবং সমকামীদের হত্যা করায় প্রচারণার সময় সৌদি আরবের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প৷ এমনকি টুইন টাওয়ারে হামলার পেছনে সৌদিরা দায়ী বলেও মন্তব্য করেছিলেন৷ তবে এবার সৌদি আরব সফরে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি সবসময় আপনাদের (সৌদি) দয়ার কথা শুনেছি, আপনাদের দেশের চমৎকারিত্বের কথা শুনেছি৷ কিন্তু আসলে শব্দ দিয়ে এই পবিত্র ভূমির বিশালতার কথা প্রকাশ করা যাবে না৷’’

নির্বাচনি প্রচারণার সময় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনের জন্য দান গ্রহণ করায় হিলারি ক্লিন্টনের সমালোচনা করেছিলেন ট্রাম্প৷ তবে এবার জানা গেল, ট্রাম্প কন্যা ও হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা ইভানকা ট্রাম্প প্রস্তাবিত ‘ওমেন এন্ট্রেপ্রেনিউর্স ফান্ড’-এ ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার অঙ্গীকার করেছে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত৷

মুসলিম বিশ্বের নেতাদের উদ্দেশে আবেগপূর্ণ বক্তব্য

রবিবার সৌদি আরবে ট্রাম্প প্রায় ৫০টি মুসলিমপ্রধান দেশের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন৷ এর আগে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে শনিবার সৌদি আরব পৌঁছেন৷

সন্ত্রাসী তথা জঙ্গিদের ‘সরে যেতে বাধ্য করতে’ আরব ও ইসলামিক নেতাদের প্রতি আবেগঘন আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প৷ এক্ষেত্রে সবাইকে এক হতে এবং ইসলামি জঙ্গিদের পরাজিত করতে যার যার দায়িত্ব পালনের অনুরোধ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে৷ তবে শান্তির যাত্রা শুরু হয় এইখানে, এই প্রাচীন ভূমিতে, এই পবিত্র ভূমিত৷’’

মুসলিম বিশ্বের নেতাদের ট্রাম্প বলেন, ‘‘সুন্দরতর ভবিষ্যৎ তখনই সম্ভব যখন আপনারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের চলে যেতে বাধ্য করতে পারবেন৷’’

পুরো বক্তব্যে তিনি ‘ব়্যাডিক্যাল ইসলামিক টেররিজম’ শব্দটি একবারও ব্যবহার করেননি৷ নির্বাচনি প্রচারণার সময় তিনি এর বহুল ব্যবহার করেছিলেন৷

জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...