1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডিএনএ-র মধ্যে ডাটা স্টোরেজ

২৮ মার্চ ২০১৭

দুনিয়া জুড়ে ডিজিটাল তথ্যের প্লাবন৷ কিন্তু এই পাহাড়প্রমাণ তথ্য সংরক্ষণ করা হবে কীভাবে? ক্যালিফোর্নিয়ার দুই তরুণ গবেষক ডিএনএ-র মধ্যে ডাটা ধরে রাখার পদ্ধতি নিয়ে একটি স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠা করেছেন৷

https://p.dw.com/p/2a49M
DNS DNA Illustration Desoxyribonukleinsäure Stränge
ছবি: picture-alliance/OKAPIA/N. Lange

তথ্য সংরক্ষণের অভিনব উপায়

ইউএসবি স্টিক, হার্ড ডিস্ক অথবা কমপিউটার টেপ – ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব ডিজিটাল ডাটা স্টোর করার জন্য আমাদের কয়েকশ' কোটি স্টোরেজ মিডিয়া লাগবে৷

৩৩ বছর বয়সি মাইক্রোবায়োলজিস্ট হিউনজুন পার্ক বলেন, ‘‘কিন্তু ডিএনএ-তে স্টোর করলে, আমাদের প্রত্যেকের শরীরে যে পরিমাণ ডিএনএ আছে, তাতে ঐ সমস্ত তথ্য স্টোর করা যেতে পারে৷''

ঠিক সেটাই করতে চান নাথানিয়েল রকে আর হিউনজুন পার্ক: ভবিষ্যতে তারা বিপুল পরিমাণ ডাটা স্টোর করতে চান ডিএনএ-তে৷ সেটা যে ঠিক কিভাবে করবেন, তা তারা বলতে রাজি নন – শুধু এটুকু যে, এনজাইমের সাহায্যে তারা ডিএনএ-র ‘স্ট্র্যান্ড' বা ফিতেগুলোর একক উপাদানগুলোকে অন্যভাবে সাজাতে চান, যাতে সেই নতুন সিকোয়েন্সের একটা বিশেষ অর্থ দাঁড়ায়৷

টিউবের মধ্যে রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা

ক্যাটালগ টেকনোলজিস-এর মলিকিউলার বায়োলজিস্ট নাথানিয়েল রকে বলেন, ‘‘এই টিউবটাতে রবার্ট ফ্রস্টের একটি কবিতা আছে, যার নাম ‘দ্য রোড নট টেকেন'৷ ঠিক এক কিলোবাইট তথ্য৷''

সলিউশনটায় নাকি ঐ কবিতার লক্ষ লক্ষ কপি আছে৷ সেটা কীভাবে হয়, তা জানালেন রকে৷ বললেন, ‘‘কবিতার প্রথম লাইনটি হলো, ‘টু রোডস ডাইভার্জড ইন দ্য ইয়েলো উড'৷ প্রত্যেকটি অক্ষর, এমনকি দু'টি অক্ষরের মধ্যে স্পেস বা ফাঁকা জায়গাটার জন্য একটি আট ঘরের নম্বর আছে৷ আমরা সেই নম্বরটাকে ডিএনএ-তে এনকোড করি৷ কাজেই আমরা জিরো আর ওয়ান-এর এই পঙক্তিগুলোকে এ-জি-সি-টি-এ-র পঙক্তিতে বদলে নিই৷ আপাতত আমরা এই ‘ম্যাপিং' করার সফটওয়্যার তৈরি করছি৷ তারপর আমরা সত্যিই ডিএনএ-টা তৈরি করি৷''

প্রশ্ন হলো, ডিএনএ কি সত্যিই এই তথ্য বহণ করছে? ‘‘হ্যাঁ, ডিএনএ সেই তথ্য বহণ করছে'', বললেন রকে৷ ‘‘কাজেই আমরা ওটাকে স্টোর করতে চাই৷ কিন্তু সেই তথ্য যদি আবার ফেরৎ পেতে চান, মানে ‘রিট্রিভ' করতে চান? সেটা কীভাবে করবেন? তখন সেটাকে সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠাতে হবে৷ অবশ্য নিজের সিকোয়েন্সার থাকলে নিজেই করা যায়৷ সিকোয়েন্সিংয়ের সময় আবার পুরোটা এ, জি, সি, টি ইত্যাদিতে ডিকোড হয়ে যায়৷ ঠিকমতো এনকোড করা হয়ে থাকলে, গোড়ায় যে ডিএনএ-র পঙক্তিটা ছিল, শেষেও সেই ডিএনএ-র পঙক্তিটা পাওয়া যাবে৷''

ম্যামথের জেনোম

এই পদ্ধতির নাকি অনেক সুবিধা আছে৷ রকে জানালেন, ‘‘স্টোরেজ ক্যাপাসিটি, স্বল্প পরিসরে বিপুল পরিমাণ তথ্য স্টোর করা যায়৷ এছাড়া নির্ভরযোগ্যতা: ডিএনএ হিমায়িত করে রাখলে তা বহুদিন টেকে, চাই কি হাজার হাজার বছর! তাই আমরা বরফে জমে থাকা পশমি ম্যামথের জেনোম ৬০ হাজার বছর পরেও সিকোয়েন্স করতে পারি৷ তৃতীয়ত, বহণযোগ্যতা, কেননা, ডিএনএ কপি করাটা সত্যিই খুব সহজ৷''

কিন্তু এখনও পর্যন্ত এসবই কল্পনাবিলাস৷ নিজেদের গবেষণা থেকে এরা দু'জন তাদের বায়োটেক স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ প্রত্যেক সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়কদের বোঝাতে হয়, কাজ কতটা এগিয়েছে৷ রকের কথায়, ‘‘... ভালো খবর হলো, আমরা আমাদের প্রথম কিলোবাইট এনকোড করেছি৷''

সাফল্য বৈকি – যদিও মাইক্রোসফ্টের মতো প্রতিযোগীরা ইতিমধ্যেই এর চেয়ে বেশি ডাটা স্টোর করতে পেরেছে৷ কিন্তু মাইক্রোসফটের পদ্ধতিটা খুবই ব্যয়সাপেক্ষ বলে এই তরুণ বিজ্ঞানীদের ধারণা, কেননা, ঐ পদ্ধতিতে প্রতিবার একক উপাদানগুলি থেকে নতুন করে ডিএনএ সৃষ্টি করতে হয়৷ রুবিক'স কিউব করতে গিয়ে যদি প্রতিবার নতুন নতুন কিউব ঢুকিয়ে নকশাটা তৈরি করতে হতো, তাহলে যেমন হতো৷

রকে জানালেন, ‘‘আমাদের পদ্ধতিটা আলাদা: আমরা এক পর্যায়ে প্রিফ্যাব্রিকেটেড ডিএনএ তৈরি করি৷ সে সব ডিএনএ-ই এক এবং অর্থহীন৷ পরে আমরা এনজাইম ব্যবহার করে সেই ডিএনএ-কে আমরা যে মেসেজ এনকোড করতে চাই, সেই মেসেজে পরিণত করি৷''

এই পন্থা অনেক বেশি সস্তা, কিন্তু আগে বিনিয়োগকারীদের সেটা বোঝাতে হবে, কেননা, সান ফ্রান্সিস্কোতে বাস করে গবেষণা করাটা খুব সস্তা নয়!

গ্রিট হফমান/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য