1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুই মাসে ৫০ শিশু হত্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ মার্চ ২০১৬

ঢাকায় আবারো দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশের মানুষ স্তম্ভিত৷ সোমবার এই দুই ভাই-বোন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন পরিবারের সদস্যদের হাতে, পারিবারিক কলহের জেরে৷ এ ঘটনায় তাদের মাকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ৷

https://p.dw.com/p/1I7QP
Symbolbild Kindesmissbrauch
ছবি: picture alliance / ZB

[No title]

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার এক প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বাংদেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে৷

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অপরাধীরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিষ্পাপ শিশুদের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে৷ এছাড়া সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়, বেকারত্ব, অনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা, সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাব, অনলাইন প্রযুক্তির কু-প্রভাব, পর্নোগ্রাফির প্রসার, অনৈতিক জীবনযাপন, মানবপাচার, বিরোধ বা শত্রুতা, ব্যক্তি স্বার্থপরতা, লোভ, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমাগত শিশু হত্যাকাণ্ডের কারণ৷'

মানবাধিকার এই সংস্থা আরো মনে করে, ‘শিশুহত্যার মতো ঘৃণিত অপরাধে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় শিশু হত্যার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে৷' তাদের হিসাব মতে, গত এক বছরে ২৯২টি শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে৷ আর গত চার বছরে সারাদেশে এক হাজার ৮৫টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়এছে সংস্থাটি৷

শিশু হত্যার এই ক্রমবর্ধমান হারের সঙ্গে আরো উদ্বেগজনক বিষয় হলো যে, মূলত পরিবারের সদস্য, আত্মীয় এবং পরিচিতদের হাতেই অধিকাংশ শিশু হত্যা বা নৃশংসতার শিকার হচ্ছে৷

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোটে এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত একবছরে শিশু হত্যা ও শিশুর প্রতি সহিংসতা যেভাবে বেড়েছে তাতে আমাদের মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও মানবিকতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘এখন ঘরেই শিশুরা নিরাপদ নয়৷ বাবা-মায়ের হাতেই শিশুদের জীবন দিতে হচ্ছে৷ মূল্যবোধের এরচেয়ে আর চরম অবক্ষয় কী হতে পারে!''

তিনি আরো বলেন, ‘‘শিশুরা অসহায়৷ তারা প্রতিবাদ করতে পারে না৷ তারা এখন লোভ- লালসা এবং প্রতিশোধের শিকারে পরিণত হচ্ছে৷ তারা কোনো স্বার্থের সঙ্গে জড়ির না থাকলে স্বার্থেরই বলি হচ্ছে তারা৷''

এলিনা খান বলেন, ‘‘দেশে শিশু নির্যাতনবিরোধী কঠোর আইন আছে৷ কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এই আইনে কাজ হবে না৷ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শিশুদের গুরুত্ব দেয় না৷ শিশুদের প্রতি যে অপরাধ করা হয়, তা সহজে আমলে নিতে চায় না তারা৷ তাই শিশুদের বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দেয়া হলে আমরা ভয়াবহ বির্যয়ের মুখে পড়ব৷''

তাঁর মতে, ‘‘পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে শিশুরা কোথায় নিরাপত্তা পাবে তাই বোঝা মুশকিল৷ তাই রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তিকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে৷ শিশুদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে৷''

আশ্চর্যের বিষয় হলো, ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রত্যেক এলাকার থানাগুলোতে শিশুদের জন্য ‘হেল্প ডেস্ক' থাকার বিধান আছে৷ কিন্তু বাস্তবে আইনে থাকলেও তা কাজে নেই৷ যেমন এলিনা খানের কথায়, ‘‘কাগজে কলমে আছে, কিন্তু তা কার্যকর নেই৷'' তাই ‘‘এখন থেকেই জরুরি ভিত্তিতে শিশু-বান্ধব পরিবেশ তৈরির কাজ শুরু করা দরকার৷ নয়ত পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান