1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নীলঠুঁটো গুয়ানকে বাঁচাতে

৮ মার্চ ২০১৭

কলম্বিয়ার নীল ঠোঁটের ঝুঁটি-তোলা গুয়ান একটি বিরল পাখি৷ ‘প্রো-এভিজ’ নামের একটি পরিবেশ সংরক্ষণ গোষ্ঠী এই এলাকার মানুষদের সাহায্য করে গুয়ান পাখি রক্ষার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/2YpoU
Globalideas Teaser – ohne Logo – Hokkohuhn
ছবি: DW/M. Altenhenne

এক বিরল পাখির প্রাণ রক্ষার উপায়

খোঁজ চলেছে কলম্বিয়ার বিরলতম পাখিটির, যার নাম গুয়ান, নীল ঠোঁটের ঝুঁটি-তোলা গুয়ান৷ এই বিরল প্রজাতির পাখি আর মাত্র ৩০০ থেকে ৫০০টি বেঁচে আছে, যাদের শুধু এই এলাকায় পাওয়া যায়৷

প্রকৃতি সংরক্ষণকারীদের কপাল ভালো, তারা একটি ‘ক্র্যাক্স অ্যালবার্টি’ পাখি খুঁজে পেয়েছেন৷ এটা পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম৷ কলম্বিয়ার আদি বাসিন্দাদের কাছে এই ‘ক্রেস্টেড গুয়ান’ ছিল এক কিংবদন্তির প্রাণী, সোনার পাতে খোদাই করা তার নানা প্রতিকৃতি পাওয়া গেছে৷

প্রোএভিজ-এর লুইস রুবেলিও বললেন, ‘‘নীলঠুঁটো ঝুঁটিওয়ালা গুয়ান পাখি শুধু এখানে পাওয়া যায়; তাই প্রো-এভিজ এই জমিটা কিনে নিয়েছে আর এলাকাটা সুরক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ এই প্রজাতির পাখিরা বিশেষ করে জঙ্গল কাটার ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে৷ সেই সঙ্গে আছে অবাধ শিকার৷ যার ফলে, এই পাখিদের সংখ্যা এমনভাবে কমছে যে, প্রজাতিটা বিলুপ্ত হওয়ার মুখে৷’’

বন কেটে বসত

সংরক্ষিত এলাকার বাইরে যথেচ্ছ জঙ্গল কাটা চলেছে৷ মাগদালেনা মেদিও এলাকায় দিনে আধ হেক্টর জঙ্গল উধাও হচ্ছে, বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান৷ স্থানীয় বাসিন্দারা কাঠ কাটা আর পশুপালন থেকে জীবনধারণ করেন, প্রকৃতির উপর যার ফলশ্রুতি শুভ নয়৷

আগে যেখানে নানা ধরনের গাছ ও জীবজন্তুতে ভরা ঘন জঙ্গল ছিল, আজ সেখানে শুধু গরু চরানোর মাঠ৷ ভূমির ক্ষয় হচ্ছে, কাজেই কৃষিক্ষেত্র ক্রমেই আদিম বনানীর উপর ভাগ বসাচ্ছে৷

পুয়ের্তো পিঞ্জন গ্রামটি একেবারে সংরক্ষিত এলাকার লাগোয়া৷ এখানেও মানুষ প্রধানত পশুপালন করে দিন গুজরান করেন৷ গ্রামের একটি মহিলা সমিতি রোজগারের অন্য পন্থার খোঁজ করছে৷ এক ধরনের তালের বিচি থেকে তৈরি পুঁতির মালা বিক্রি করতে চান তারা৷

মহিলা উদ্যোগ সমিতির আলেহান্দ্রা কাস্তেলন বললেন, ‘‘এই প্রকল্পটি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, এ থেকে আমাদের কিছু বাড়তি রোজগার হয়৷ এ পর্যন্ত সব কিছু নির্ভর করত পশুপালনের ওপর, কিন্তু তার ফলে আমরা জঙ্গলের ক্ষতি করি, জীবজন্তুর ক্ষতি করি৷ আমরা অন্য পথে যেতে চাই, প্রকৃতিকে শোষণ বন্ধ করতে চাই৷’’

মহিলারা সংরক্ষিত এলাকায় সেই সব গাছ লাগান, যেসবের বিচি থেকে মালা বা অন্যান্য গয়নাগাঁটি তৈরি করা যায়৷ সংরক্ষণবাদী ও স্থানীয় বাসিন্দারা একসঙ্গে কাজ করেন: প্রো-এভিজ মহিলাদের সাহায্য করে, সারা দেশে তাদের তৈরি পুঁতির মালা ইত্যাদি টুরিস্টদের কাছে বিক্রি করতে৷

পর্যটনের সুফল

পর্যটন থেকে নতুন আশার আলো ফুটেছে: নতুন ধরনের কটেজ তৈরি করে পক্ষীপ্রেমীদের কলম্বিয়ার এই প্রত্যন্ত প্রদেশে আসতে উদ্বুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চলেছে৷

প্রো-এভিজ-এর পরিচালক আলন্সো কোয়েভিদো বলেন, ‘‘সংরক্ষিত এলাকার রক্ষণাবেক্ষণ আর অর্থায়নের জন্য আমাদের পন্থা হলো ইকো-টুরিজম, বিশেষ করে বার্ড ওয়াচিং বা পাখি দেখা৷ এই পন্থায় আমরা সংরক্ষিত এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য স্থায়ীভাবে অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই, যাতে এই এলাকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও বজায় থাকে৷’’

অরণ্যরক্ষীরা শুধু পাখিদেরই দেখাশোনা করেন না; নাইট মাঙ্কি নামের এই নিশাচর বানর পরিবারটিও এই সংরক্ষিত এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে৷ আশিটিরও বেশি সরীসৃপ ও উভয়চর প্রজাতি এলাকাটির প্রাণীবৈচিত্র্যের অঙ্গ৷ এখানে যেন পৃথিবীটা আজও অক্ষত, আজও সুন্দর – কিন্তু আর কতদিন?