1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ বান্ধব গ্রাম জার্মানির ফেল্ডহাইম

২৯ ডিসেম্বর ২০১১

মাত্র ৩৭টি বাড়ি এবং কিছু খামার বাড়ি নিয়ে গড়ে ওঠা জার্মানির ছোট্ট গ্রাম ফেল্ডহাইম৷ গ্রামবাসীর সংখ্যা মাত্র ১৪৫৷ কিন্তু এই ছোট্ট শহরটিই আজ পরিবেশ বান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

https://p.dw.com/p/13bRE
ছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানির পূর্বাঞ্চলের প্রধান সড়কের দুই পাশ ধরে গড়ে উঠেছে ফেল্ডহাইম৷ সেই গ্রামের মানুষগুলো এখন সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীল৷ ফলে বিশ্বের কাছে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি নির্ভর একটি গ্রাম হিসেবে নমুনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি৷ এমনকি এল সালভাডর, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিকরাও এসে বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছেন ফেল্ডহাইম গ্রাম থেকে৷ ফলে জার্মানি যে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে তারই অগ্রগতির প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে ফেল্ডহাইম গ্রামের সাফল্যকে৷

গত জুন মাসেই চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী এক দশকের মধ্যে বায়ু, সৌর এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য উৎস থেকে মোট চাহিদার ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের৷ এর মধ্য দিয়ে ২০৫০ সালের মধ্যে জার্মানির ৮০ শতাংশ জ্বালানি পরিবেশ বান্ধব নবায়নযোগ্য উৎস থেকে এবং পদ্ধতিতে উৎপাদনের লক্ষ্যে পৌঁছতে চায় তারা৷ একইসাথে আরো কর্মের সংস্থান করা, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন হ্রাসের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে চায় দেশটি৷ তবে জার্মানির এই লক্ষ্যকে বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এবং ব্যয়বহুল উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে জাপান পর্যন্ত দেশগুলো চেয়ে রয়েছে এক্ষেত্রে জার্মানির সাফল্য ও ব্যর্থতার দিকে৷

Windrad Windräder Erneuerbare Energien Windpark Flash-Galerie
ছবি: AP

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন এমন একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ জেরেমি রিফকিন তাই বললেন, ‘‘এক্ষেত্রে জার্মানির ব্যর্থতার কোন সুযোগ নেই৷ কারণ সারা বিশ্ব জার্মানির কাজের দিকে তাকিয়ে রয়েছে এবং জানতে চাচ্ছে যে, জার্মানি কি আমাদের নতুন পন্থা এবং নতুন অবকাঠামোর দিকে চালিত করতে পারবে?'' অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট এবং জাপান উভয় দেশই নবায়নযোগ্য উৎস থেকে মাত্র নয় শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে৷ ফলে জার্মানি তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হলে বিশ্বের অন্যান্য দেশও সেই পথ ধরে চলার ক্ষেত্রে উৎসাহিত হবে বলা আশা করা হচ্ছে৷

অবশ্য জার্মানিকে পারমাণবিক উৎস পরিহার করে সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির পথে এগুতে নতুন অবকাঠামো দাঁড় করাতে এখন নাগরিকদের উপর প্রতি ঘণ্টায় এক কিলোওয়াট বিদ্যুতের জন্য অতিরিক্ত ৩.৫ সেন্ট কর বসাতে হয়েছে৷ ফলে চার সদস্যের একটি সাধারণ পরিবারকে বছরে গুণতে হচ্ছে প্রায় ১৫৭ ইউরো অতিরিক্ত কর৷ ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংস্থা ‘এনার্জি রিসার্চ' অবশ্য এই অতিরিক্ত কর আদায়কে ‘অন্যায্য' বলে এর সমালোচনা করেছে৷ এছাড়া ব্যাপকভাবে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি উৎপাদনে জার্মানিকে কোটি কোটি ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি৷

তবে জার্মান নাগরিকদের কাছ থেকে এই অতিরিক্ত কর আদায়ের একটি সুফল দেখা গেছে ফেল্ডহাইমের গ্রামেই৷ সেখানে এক জন মানুষও বেকার নেই৷ অথচ ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের অন্যান্য গ্রামগুলোতে বেকারত্বের হার প্রায় ৩০ শতাংশ৷ ফলে এখন জার্মানরা কিছু বেশি কর দেওয়ার মধ্য দিয়ে যে তাদের আগামী প্রজন্মের জন্য অনেক বেশি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ রচনা করছে তার প্রমাণ ফেল্ডহাইম৷ তবে ফেল্ডহাইম গ্রামই জার্মানির একমাত্র উদাহরণ নয়৷ ইতিমধ্যে রাজধানী বার্লিনে চালু করা হয়েছে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি এবং বাইসাইকেল৷ এগুলো আবার বাড়িতে তৈরি সৌরবিদ্যুৎ থেকেই রিচার্জ করা হচ্ছে রাতে বিরতির সময়৷ ফলে বলা যায়, নানাভাবেই পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি উৎপাদন ও ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জার্মানির সরকার এবং সাধারণ মানুষ৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য