1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পেন পুরস্কার পেলেন টুটুল

১৪ অক্টোবর ২০১৬

জঙ্গি হামলায় আহত প্রকাশক ও লেখক আহমেদুর রশীদ টুটুল ‘পেন ইন্টারন্যাশনাল রাইটার অব কারেজ' পুরস্কার পেয়েছেন৷ টুটুল জানিয়েছেন, অনলাইনে লেখা প্রকাশের কাজ তিনি চালিয়ে যাবেন৷

https://p.dw.com/p/2RDYP
নেদারল্যান্ডসে এক অনুষ্ঠানে টুটুল
গত ফেব্রুয়ারিতে নেদারল্যান্ডসে এক অনুষ্ঠানে আহমেদুর রশীদ টুটুলছবি: DW/A. Islam

‘দ্য গার্ডিয়ান'-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার ক্যানাডার জনপ্রিয় লেখিকা মার্গারেট অ্যাটউড পেন ইন্টারন্যাশনাল রাইটার অব কারেজ পুরস্কারের জন্য আহমেদুর রশীদ টুটুলের নাম ঘোষণা করেছেন৷ চলতি বছরের শুরুতে অ্যাটউডও পেন প্রিন্টার প্রাইজ পেয়েছিলেন৷ বাংলাদেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘শুদ্ধস্বর'-এর কর্ণধার টুটুল জঙ্গি হামলায় আহত হওয়ার পর থেকে দেশ ছাড়েন৷ এখন তিনি নরওয়েতে আছেন৷

মার্গারেট অ্যাটউড বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশি একজন প্রকাশককে এই পুরস্কার দিতে পারায় সম্মানিত বোধ করছি৷ ভয়াবহ বিপদের মধ্যে টুটুল শুধু ব্যক্তিগত সাহসই দেখাননি, সহিংসতার কারণে যাঁরা নিশ্চুপ হয়ে যাওয়ার হুমকির মধ্যে রয়েছেন, এমন অনেক বাংলাদেশির মুখে স্বর ফোটানোর ঝুঁকি নিতে সব কাজই করেছেন৷ এমন এক সময় টুটুলকে এই পুরস্কার দেওয়া হলো, যখন আমাদের কিছু বন্ধু কাগজে স্রেফ দু কথা লিখে প্রাণ খোয়ানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন৷ তাঁদের এই চলমান দুর্দশা তুলে ধরতেই এই পুরস্কার প্রদানকে যৌক্তিক বলে মনে করি৷''

পুরস্কার পাওয়ার পর টুটুল তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘বাস্তবতা হলো, আমাকে বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে এবং বর্তমানে শুদ্ধস্বর তার কাজ চালিয়ে যেতে পারছে না৷ আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কীভাবে বিকল্প উপায়ে এটিকে চালিয়ে নেয়া যায়৷ তাই ই-বুক বের করার উপায় খুঁজছি৷ এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে বাংলা বই প্রকাশ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি৷ বাংলাদেশে দিন দিন সন্ত্রাসবাদ বাড়ছে৷ তাই যেসব তরুণ এর বিরুদ্ধে নিজেদের মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটাতে চান, তাদের লেখাগুলো ছাপানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ বাংলা ভাষায় অসাধারণ কিছু সাহিত্য লেখা হয়েছে এবং হচ্ছে৷''

সুদীর্ঘ স্ট্যাটাসটিতে টুটুল আরো লিখেছেন,‘‘ বাংলাদেশি লেখককরাও অসাধারণ কাজ করছেন৷ আমার মনে হয়, বাংলা সাহিত্য যদি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়, তবে বিশ্বব্যাপী পাঠকদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে৷ তাই আমি বেশ কিছু লেখা ভাষান্তরের উদ্যোগ নিয়েছি৷ বাংলাদেশি তরুণ লেখকদের ঈশ্বরে বিশ্বাসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা বইগুলো অন্য ভাষায় অনুবাদ করার ইচ্ছে আছে আমার৷ প্রকাশনা আমার কাছে কেবল ব্যবসা নয়, বরং এটা আমার জন্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন৷ শুদ্ধস্বরের শ্লোগানই হলো, উৎসাহিত করা, ইমপ্রেস করা নয়৷ আমি আমার এই কাজ অব্যাহত রাখবো৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার হাতে এসব লেখা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করবো৷ আমার একার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়৷ তাই আমার অনেক সমর্থন দরকার৷ ''

গার্ডিয়ানকে টুটুল বলেছেন, ‘‘এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমাকে উৎসাহ দেবে৷ ভবিষ্যতে আমার লেখালেখি ও প্রকাশনায় তা শক্তি হয়ে দাঁড়াবে৷''

তাঁর এই অর্জনে বাংলাদেশের সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর লিখেছেন, ‘‘অভিনন্দন টুটুল ভাই, এক সমুদ্র ভালোবাসা৷''

এছাড়া টুইটারেও অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকে৷ ব্রায়ানি উলফ লিখেছেন, ‘‘যেসব বাংলাদেশি জীবনের ভয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করতে ভয় পায়, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের ভাবনা প্রকাশ করছেন তিনি৷''

সাহিত্যে নোবেলজয়ী প্রয়াত হ্যারল্ড পিন্টারের সম্মানে ২০০৯ সাল থেকে পেন ইন্টারন্যাশনাল রাইটার অব কারেজ পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়৷ এটি ‘পেন পিন্টার প্রাইজ' নামেও পরিচিত৷ এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন সাহিত্যিক সালমান রুশদি, ক্যারল অ্যান ডাফি, সৌদি ব্লগার রাইফ বাদাওয়ি৷

এপিবি/এসিবি (দ্য গার্ডিয়ান)

প্রিয় পাঠক, আপনার কী কিছু বলার আছে? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য