1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইরান

ইরানে প্রাচীন এলামাইট লিপির পাঠোদ্ধারের দাবি

২৩ আগস্ট ২০২২

গত প্রায় ১২০ বছর এলামাইট লিখনপদ্ধতিকে কেউ বলেছেন অপাঠ্য, কেউবা বলেছেন দুর্বোধ্য৷ একদল প্রত্নতাত্ত্বিকের দাবি, ইরানে তারা সেই বর্ণলিপির পাঠোদ্ধার করেছেন৷

https://p.dw.com/p/4FuxK
Archäologie-Studie Entzifferung der elamitischen Linearschrift
ছবি: Louvre Museum

ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সুসায় ফরাসি প্রত্নতাত্ত্বিকরা এলামাইট লিপির প্রথম দেখা পান ১১৯ বছর আগে, অর্থাৎ সেই ১৯০৩ সালে৷ কিছু হীরা এবং বর্গক্ষেত্রের গায়ে ড্যাশ চিহ্ন (-)  এবং ফুটকি- কম কথায় এই হলো এলামাইট লিপি৷ ১৯০৩ সালে উদ্ভাবনের সময় এর নাম দেয়া হয় ‘লিনিয়ার এলামাইট'৷ গবেষকদের মতে, ‘লিনিয়ার এলামাইট' বিশ্বের চারটি প্রাচীনতম লিখনশৈলীর একটি৷ মেসোপোটেমিয়ার কিউনিফর্ম, মিশরের হিয়েরোগ্লিফিক্স এবং  সিন্ধু লিপির মতো প্রাচীন এই রৈখিক লিপি খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় মিলেনিয়ার শুরুর দিক থেকে তৃতীয় মিলেনিয়ার শেষ সময় পর্যন্ত বিস্তৃত তাম্র যুগে প্রচলিত ছিল৷ তবে গবেষকরা এতদিন বহু চেষ্টা করেও এলামাইট লিপির ওই হীরা এবং বর্গক্ষেত্রগুলোর কোনো মানে খুঁজে পাননি৷ হাতে গোণা কয়েকটা ‘ক্যারেক্টারের'ই শুধু ব্যাখ্যা বুঝতে পেরেছেন বলে ধারণা ছিল তাদের৷

তবে ফ্রান্সের প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্রাসোয়াঁ দেসেঁ এবং তার দলের দাবি, এলামাইট লিপির ওপর থেকে শত বছরের দুর্বোধ্যতার জাল এবার অল্প অল্প করে সরতে শুরু করেছে৷ তারা বলছেন, আটটি প্রাচীন রূপার কাপের সহায়তায় এলামাইট লিপির রহস্য অনেকখানি উন্মোচন করে ফেলেছেন৷ ইরানের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ফ্রান্সের লিওঁ শহরের আর্কিওরিয়েন্ট রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষক দেসেঁ বলেন, ‘‘এই ধরনের পেয়ালা দীর্ঘদিন ধরে শুধু ব্যক্তিগত সংগ্রাহকদের কাছে ছিল৷ খুব সম্প্রতি আমরা গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য এগুলো সংগ্রহ করি৷''

Ein Becher mit Elamite Schrift
ছবি: François Desset/Mahboubian collection

সংগ্রহ করার পর ওই কাপগুলোর সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে এলাইট লিপির পাঠোদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন দেসেঁ ও তার দল৷ লিপিগুলো বিশ্লেষণ করে দেসেঁর মনে হয়েছে, ‘‘এলামাইট লিখন রীতি পুরোপুরি ফোনোগ্রাফিক লিপি৷''

তবে ডেসেল ও তার সতীর্থদের উদ্ভাবনকে এখনই স্বীকৃতি দিতে রাজি নন অনেকে৷ বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিদ এবং সুইস অ্যালিস কোবার সোসাইটির বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক মিশায়েল ম্যাডেরও তাদের একজন৷ তিনি বলেছেন, ‘‘যতক্ষণ না পরিষ্কার প্রমান পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত লিনিয়ার এলামাইটের পুরোপুরি পাঠোদ্ধার হয়েছে- এমনটি কোনোভাবেই বলা যাবে না৷'' তিনি জানান, এ পর্যন্ত সঠিক উচ্চারণ জানা গেছে মাত্র ১৫টি ক্যারেক্টারের আর ১৯টি ক্যারেক্টার সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া গেছে যা হয়ত বিশ্বাসযোগ্য৷  ম্যাডের আরো বলেন, ‘‘এমনও হতে পারে যে দেসেঁর কাজ হয়ত প্রস্তাবনার তালিকায় আরো ক্যারেক্টার যোগ করবে৷ কিন্তু অক্ষর বা চিহ্নগুলোর কাজ এবং উচ্চারণ সম্পর্কে বিশদ না জানা পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারবো না৷''

কাতরিন এভার্ট/ এসিবি