1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রত্যক্ষদর্শীদের স্মৃতিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৮ মে ২০১০

এশিয়ায় প্রথম নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৪৯ তম জন্ম বার্ষিকী পালন করছে আজ বাংলাদেশ৷ কবির জন্ম জয়ন্তীর কর্মসূচিতে এবার প্রাধান্য পাচ্ছে শত বছর পেরিয়ে আসা কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি৷

https://p.dw.com/p/NJ8F

‘‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে, পার হয়ে যায় গরু পার হয় গাড়ী দুই ধার উঁচু তার ঢালু তার পাড়ি'' - রবীন্দ্রনাথের এই কবিতার সেই ছোট নদীর অস্তিত্ব নওগাঁর পতিসরে কিছুটা থাকলেও এখন বৈশাখে হাঁটুজল মেলা ভার এ নদীতে৷ সময় আর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে রবি ঠাকুরের নিজস্ব জমিদারির অনেক কিছুই আর নেই পতিসর কাছারিবাড়ির৷ তবে ওই এলাকায় এখনও বেঁছে আছেন ১০৫ বছর বয়সের ঝড়ু প্রামাণিক৷ অবসর জীবন কাটাচ্ছেন তিনি৷

কবির নৌকার একমাত্র মুসলমান বাবুর্চি কবেজ আলী মন্ডলের শ্যালক ঝড়ু প্রামাণিকের সুযোগ হয়েছিল কবির নৌকায় উঠে তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার৷ বয়সের কারণে তাঁর স্মৃতি থেকে অনেক কিছুই মুছে গেলেও রবি ঠাকুরকে তিনি ভুলতে পারেননি এখনও৷ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তিনি স্মৃতিচারণের এক পর্যায়ে বলেন, কবি ছিলেন তাঁর কাছে পিতার আসনে৷
পতিসর থেকে শেষ বারের মতো যাবার সময় কবি অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন, তাঁকে শেষ বিদায় জানাতে আসা প্রজারাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেনেনি৷ ছোট নদীর জলের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে অনেক প্রজার চোখের জল৷

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এবারের জন্ম জয়ন্তীতে বাংলাদেশে সরকারি কর্মসূচিতে প্রধান্য পাচ্ছে গীতাঞ্জলি, জানালেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর কাছারি বাড়ির কাষ্টডিয়ান নাহিদ সুলতানা৷ তিনি বলেন, এবার প্রধান্য দেয়া হচ্ছে গীতাঞ্জলি ভিত্তিক লেখা, আলাপ-আলোচনা, নাটক গান প্রবন্ধ ইত্যাদি৷

রবি ঠাকুরকে নিয়ে ওপার বাংলার মানুষের যে আগ্রহ তার ওপর টেলিভিশন প্রতিবেদন তৈরি করতে বাংলাদেশে আসেন ভারতীয় সাংবাদিক তপশ্রী গুপ্তা৷ তিনিই জানালেন এবার ভারতেও রবীন্দ্র জন্ম জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে গুরুত্ব পাচ্ছে গীতাঞ্জলি৷

দাদার হাত ধরে রবি ঠাকুর ছোট বেলায় এপার বাংলায় বেড়াতে এলেও পরে বাবার জমিদারি দেখতে হয়েছিল তাঁকেই৷ আর সে সুবাদেই তিনি বহু বার এসেছেন এপার বাংলায়৷ কুষ্টিয়ার শিলাইদহে এসেছেন৷ থেকেছেন শাহজাদপুর আর পতিসরে, জানালেন নাহিদ সুলতানা৷

যারা ছোট বেলায় রবি ঠাকুরকে দেখেছেন তাদের একজন শিলাইদহ কুঠিবাড়ি সংলগ্ন কসবা গ্রামের ১১৮ বছর বয়সের মো: আমিন শেখ৷ বয়সের কারণে তিনি কথা বলার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছেন তবে কানের কাছে মুখ নিয়ে জোরে কবির বিষয়ে জানতে চাইলে কেঁদে ওঠেন তিনি৷

কেমন মানুষ ছিলেন কবি এ প্রশ্নের জবাবে ওই এলাকার ৯৭ বছর বয়সের কিয়াম উদ্দিন স্মৃতিচারণ করলেন৷ বললেন তিনি খুব দয়ালু ছিলেন৷ প্রজাদের খাজনা মাফ করে দিতেন, তাদের জন্য বানিয়েছিলেন হাসপাতাল৷ কৃষির উন্নতির জন্য তিনি নোবেল প্রাইজের টাকায় নওগাঁর পতিসরে প্রতিষ্ঠিত করেন কৃষি ব্যাংক৷

প্রতিবেদন: হাসিবুর রহমান বিলু, বগুড়া

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক