1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বরফের গ্রামে অভিনব হোটেল

৯ মার্চ ২০১৮

ফিনল্যান্ডের ল্যাপল্যান্ড অঞ্চলে বরফে ঢাকা বনপ্রান্তরের মাঝখানে রয়েছে মানুষের তৈরি একটি ‘বরফের গ্রাম,' বরফ কুঁদে তৈরি৷ সেখানকার হোটেল, খাটপালঙ্ক, পানশালা বা গির্জা, এমনকি পানপাত্র, সবই বরফের৷

https://p.dw.com/p/2twQs
Serie Kühle Kunst: Das Schneedorf
ছবি: DW

মেরুবৃত্তের ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে ফিনল্যান্ডের ল্যাপল্যান্ড অঞ্চল৷ বরফে সাদা বনজঙ্গলের মধ্যে ঘন তুষারের আস্তরণে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে একটি ছোট্ট গ্রাম: বিশ হাজার বর্গমিটার জুড়ে বিরাজ করছে এই ‘স্নো ভিলেজ' বা বরফের গ্রাম৷

‘স্নো ভিলেজ'-এর উদ্যোক্তাদের একজন হলেন ‘তুষার শিল্পী' রামি কুর্টাকো৷ তিনি আজও অভিভূত: ‘‘ল্যাপল্যান্ডে আমি যেন আমার স্বপ্নের দেশে পৌঁছে গেছি৷ চারদিকে মুক্ত প্রকৃতি আর আমি এমন একটা পদার্থ নিয়ে কাজ করছি, যা আমাকে প্রকৃতির আরো কাছে নিয়ে যাচ্ছে৷ ‘স্নো ভিলেজ'-এর অতিথিদের সঙ্গে এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার অনুভূতিটাও দারুণ৷''

এ বছর ‘স্নো ভিলেজ'-এর মটো হলো ‘গেম অফ থ্রোন্স'৷ ঐ নামের টিভি-সিরিয়ালটির নানা দৃশ্য ও চরিত্রকে বরফে খুড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ রাত্রিবাস করারও সুযোগ আছে এই বরফের গ্রামে৷

এস্কিমোদের বরফের তাঁবুর অনুকরণে তৈরি দশটি ‘ইগলু' সুইটে রাত কাটানো যায় – গেম অফ থ্রোন্স-এর এক ‘হোয়াইট ওয়াকার'-এর সঙ্গে৷ দুই অতিথির দেহের উত্তাপের ফলে ইগলুর ভিতরের তাপমাত্রা মাইনাস পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শূন্য ডিগ্রিতে ওঠে বটে – তা সত্ত্বেও উদ্যোক্তারা এই ‘হোটেলে' এক রাত্রির বেশি না কাটানোর পরামর্শ দেন৷ দু'জন অতিথিকে এক রাত্রি ইগলু-বাসের জন্য ৩৫০ ইউরো ভাড়া দিতে হয়৷

বরফ গ্রামে মজার হোটেল

মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাত্রিবাস!

স্টেফেন মার ও তাঁর সঙ্গিনী লিনা সাইডেল ইগলুতে রাত্রি কাটিয়েছেন মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডার ধাক্কা সামলাতে পারে, এমন দু'টি স্লিপিং ব্যাগে; সেই সঙ্গে ছিল ভেড়ার লোমের আরো দু'টো স্লিপিং ব্যাগ৷ তাতেও শীত কাটেনি! স্টেফেন বললেন, ‘‘সেই কারণেই তো এটা একটা অ্যাডভেঞ্চার৷ এই সব সুন্দর বরফের ফুল – হিমঠান্ডা রাত্রির পর চোখ খুলে এই সব সুন্দর ছবি দেখা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা৷''

গত ১৭ বছর ধরে প্রতি বছর একটা নতুন ‘আইস হোটেল' বা বরফের হোটেল সৃষ্টি করা হয়৷ সেজন্য সারা পৃথিবী থেকে ডজন ডজন তুষার শিল্পী ও তুষার স্থপতি এসে এক মাস ধরে কাজ করে এই বরফের গ্রাম গড়ে তোলেন৷

‘স্নো ভিলেজ' গড়ার কাজে দু'কোটি কিলোগ্রাম কাঁচা বরফ আর সাড়ে তিন লাখ কিলোগ্রাম জমা বরফ ব্যবহার করা হয়৷

তুষার শিল্পী রামি কুর্টাকোর মতে ‘‘লাইটিং বা আলোকসজ্জা এই শিল্পের একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ বরফ থেকে মূর্তি তৈরি করা তুষার শিল্পের অংশ বটে, কিন্তু ঠিকমতো আলো ফেলে তাকে ফুটিয়ে তোলা এই অভিজ্ঞতার বাকি অংশ৷ তবেই শিল্পকর্মটি জীবন্ত হয়ে ওঠে৷''

বরফ কোঁদার ওয়ার্কশপ

রামি কুর্টাকো বরফ কুঁদে মূর্তি তৈরির প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকেন – এখানে যার নাম ওয়ার্কশপ৷ স্টেফেন মার ও তাঁর সঙ্গিনী শিল্পীর সহায়তায় বরফের চাঁই থেকে একটি শুভ্র পল্লব তৈরি করেছেন৷

‘স্নো ভিলেজ'-এর অতিথি স্টেফেন মার সেই ওয়ার্কশপে যোগ দিয়েছিলেন৷ তাঁর মন্তব্য হল,

‘‘ব্যাপারটা আরো কঠিন হবে বলে আমার ধারণা ছিল৷ এক ঘণ্টার মধ্যে যে এরকম খুঁটিনাটি নক্সার একটা পাতা তৈরি করা সম্ভব, তা আমি ভাবিনি৷''

বরফ সহজেই ভেঙে যায়৷ কিন্তু ছোটখাটো ত্রুটি সহজেই ঠিক করে নেওয়া যায়৷ ভাঙা বরফের টুকরো শরীরের উত্তাপে একটু গলিয়ে নিয়ে ভাঙা জায়গাটায় চেপে দিলেই তা আবার জুড়ে যায়৷

স্টেফেনের সঙ্গিনী লিনা সাইডেলের অভিজ্ঞতা হলো: ‘‘বরফের মূর্তি গড়া সম্পর্কে ধারণাটাই বদলে যায়, কেননা আরো অনেক কিছু জানা হয়ে যায়: যে সব যন্ত্র দিয়ে বরফ কোঁদা হয়, সেগুলো নিজের হাতে নিয়ে বরফ কুঁদে দেখার অভিজ্ঞতা৷ এ সবের ফলে মানুষ নতুন চোখ দিয়ে বরফের মূর্তিগুলোকে দেখে৷''

বারো টন বরফ দিয়ে তৈরি ড্র্যাগনটার প্রতিটি দাঁত একটি একটি করে তৈরি করে ঠিক জায়গায় লাগানো হয়েছে৷ ড্র্যাগনটিকে দিয়ে তথাকথিত ‘আইস বার' সাজানো হয়েছে৷ ‘স্নো ভিলেজের' সারা পৃথিবী থেকে আসা অতিথিরা এই বারে বসে বরফের তৈরি গ্লাসে করে ড্রিঙ্কস নিতে পারেন – ‘অন দ্য রকস' আর বলে কাকে!

মাইনাস তাপমাত্রায় বিয়ে করতেই বা আপত্তি কী? বরফের তৈরি গির্জায় প্রায়ই দম্পতিরা শুভপরিণয়ে আবদ্ধ হন – তবে সে বন্ধন নিশ্চয় বরফের মতো অতো সহজে গলে যায় না?

টেওডোরা মাভরোপোলুস/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান