1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বিএনপি কি ন্যাপের মতোই ভাঙবে?'

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের মধ্যে এইচ এম এরশাদের পর খালেদা জিয়াকেই দুর্নীতির দায় নিয়ে কারাগারে যেতে হলো৷ আদালত তাঁকে ৫ বছরের সাজা দিয়েছে৷ এ রায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হলো এখানে৷

https://p.dw.com/p/2sKeO
খালেদা জিয়া
ছবি: bdnews24.com

সাব্বির রহমান তানিম লিখেছেন, ‘‘যাক বিএনপি তাহলে পুরাপুরি মরে নাই! তবে এটাই ওদের সবচাইতে বড় ব্যর্থতা৷ দেশের স্বার্থের চাইতে ম্যাডাম ইস্যুতেই ওরা বেশি সোচ্চার৷ আজকের আগে এই সরকারের আমলে একবারই বিএনপি ইস্যুভিত্তিক মাঠ গরম করেছিল, যখন খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছিল৷''

রুহুল মাহফুজ জয় দাবি করেছেন যাতে হলমার্ক, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ফার্মার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বিচারও শিগগির হয়৷

ফেসবুক পাতায় রোমান রহমান লিখেছেন, তিনি এমনই সাজা প্রত্যাশা করেছিলেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘দুর্নীতি মামলায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়ে আদালত যে নজির সৃষ্টি করেছে, ভবিষ্যতে দুর্নীতিবাজদের,হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যাংক লুটপাটকারীদের এমন কঠোর সাজা হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা৷''

তারেক সুমন অবশ্য লিখেছেন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘১৯৯১ সালে এরশাদ গেলেন জেলে৷ ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া গেলেন জেলে৷ তারপর কার সিরিয়াল আসছে? এই কালো রাজনীতির গ্রাস থেকে আমরা সাধারণ জনগণ মুক্তি চাই৷''

মনিরুজ্জামান ফাহিম লিখেছেন, বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে৷ তাঁর বক্তব্য- বিএনপির আন্দোলন ঈদের আগে হবে না৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘খালেদা জেলে তাঁর নেতারা কর্মসূচি দিচ্ছেন৷ শুক্রবার বিক্ষোভ, শনিবার প্রতিবাদ সমাবেশ৷ এসব নেতা দিয়ে বিএনপির আগামী ১০০ বছরেও কিছু হবে না৷ বিএনপি ঈদের পর আন্দলোনের ডাক দিতে পারে, পাঁচ বছর পর যে কোনো ঈদের পর৷''

রেজওয়ান শুভ লিখেছেন নেতাকর্মীদের ভোল পাল্টানোর কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘পাঁচ বছর আগেও দেখেছি অবস্থা বেগতিক দেখে কিছু পরিচিত মুখ ছাত্রদল থেকে ভোল পাল্টে ছাত্রলীগ হয়েছিল, তাদের কেউ কেউ আজ বুকে মুজিবের ছবি লাগিয়ে বড় মাপের পাতি নেতাও হয়ে গেছে৷ আমার বিশ্বাস, বছর কয়েক পর যদি শেখ হাসিনাকেও কোনো কারণে জেলে ভরা হয়, তাহলে তারা আবারও ভোল পাল্টে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে গলা ফাটাবে৷ এটাই বাংলাদেশ৷''

মামলার রায়ের পর ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় পাঠক ও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷

তৌহিদুজ্জামান তুলে ধরেছেন অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতির কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন প্রয়োজন হয়, যা জিয়া অরফানেজের নেই৷ কমপক্ষে ১০ জন এতিম থাকতে হয়, যা জিয়া অরফানেজের নেই বা ছিল না৷ ব্যাক্তিগত ঠিকানায় এতিমখানার ঠিকানা দেয়া যায় না, কিন্তু জিয়া এতিমখানার ঠিকানা দেয়া ছিল ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের খালেদা জিয়ার বাসভবন৷ সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলো, ১৯৯৩ সালে এতিমখানার নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাতের প্রায় ২৫ বছর পরও ২০১৮ সালে সারা দেশে এতিমখানার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা পরবর্তীতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ সংবাদমাধ্যমে নিজের মুখে স্বীকার করেন৷''

মো. শাহিন মিয়া লিখেছেন, ‘‘জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের বিকল্প নেই৷ অবশ্যই জাতির কল্যাণে জনমত তৈরি করতে হবে! যদি খালেদা জিয়া অবিচারের শিকার হতে পারে, তাহলে সাধারণ জনগণের অবস্থা কী হবে!''

শাখাওয়াত বাবন লিখেছেন, তিনি বিএনপির সমর্থক নন৷ তবে এই রায়ে তিনি মর্মাহত৷ কারণ হিসেবে লিখেছেন, ‘‘খালেদা জিয়া কিংবা শেখ হাসিনা উভয়েই বাংলাদেশের দু'টি বৃহৎ দলের নেত্রী৷ এই রায়ের ফলে বাংলাদেশে অপ-রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হলো৷ এর ফলে দুর্নীতিবাজেরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় লুটেপুটে খাওয়ার মহা সুযোগ পেয়ে যাবে৷ যারা ইতিমধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে, ব্যাংক লুট করেছে, শেয়ার বাজার ধ্বংস করে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে, তাদের শাস্তি কি কোনোদিন হবে ''

নাজিম উদ্দিন আদালতের এই রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘একইসঙ্গে যে সকল সরকারি আমলা, মন্ত্রী, এমপি, তাদের স্ত্রী,সন্তান এবং দলীয় নেতারা সীমাহীন দুর্নীতি করে অবৈধ বিত্ত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাদেরও এরকম দৃষ্টান্তমূলক বিচার স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা দেখতে চাই৷ তাহলে মানুষ আর দুর্নীতি করার দুঃসাহস পাবে না!''

তবে ভিন্নমত হামিদ হোসেনের৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘যে রায় হওয়ার আগেই ক্ষমতাসীনরা বলে দিতে পারে কী রায় আসছে, তখন আদালতের উপর জনগণের আস্থা কী হতে পারে? কথায় আছে, আইন সবার জন্য সমান, এই কথা মিথ্যা, বানোয়াট প্রমাণ হয়ে গেছে৷ আইন ক্ষমতাহীনদের জন্য, ক্ষমতাসীনদের জন্য নয়৷''

এদিকে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য বিএনপির বিক্ষোভ থেকে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাংচুর চালানো হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গেও অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফেসবুকে৷

অজন্তা দেব রায় লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ হাই কমিশনে ঢুকে ভাঙচুর করা, বঙ্গবন্ধুর ছবি বের করে এনে জুতা দিয়ে মাড়ানোই প্রমাণ করে আপনাদের রাজনৈতিক কুশিক্ষা কোন স্তরের! কী করে পারেন আপনারা? আপনাদেরকে এখন নিজ দেশের মানুষ বলতেও লজ্জা লাগছে৷''

এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পরই বিএনপিতে ভাঙন শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে৷ সাংবাদিক আরিফ রেজা মাহমুদ লিখেছেন, ‘‘বিএনপির কী হবে?? ন্যাপের মতোই ভাঙবে? সম্ভাব্য বিভাজনগুলো হলো: ১. তারেক নেতৃত্বাধীন ভুইফোঁড় নেতাদের দল৷ রিজভি হবেন এর সমন্বয়ক৷ ২. ফখরুল-মোশাররফসহ সাবেক বামরা মিলে একটা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দল হবে৷ ৩. ৮০-র দশকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল করা নেতারা মিলে একটা দল হবে৷ ৪. একটা অংশ জামায়াতের সঙ্গে নতুন দল গঠনে নামবে৷''
 

 

আকরামুল হক লিখেছেন, ‘‘জামাত-শিবির ও হেফাজতের ভেতরে ধর এবং মস্তিষ্ক নিয়ে ঢুকে যাওয়া বিএনপি এখন হাত পা ছোঁড়াছুড়ি করছে৷ বিএনপি কর্তৃক ইংল্যান্ডের দূতাবাসে হামলা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর প্রমাণ করে, বিএনপিতে জামাতীকরণ সুসম্পন্ন হয়েছে৷ বিএনপি কর্তৃক আওয়ামী লীগ বিরোধিতা শেষ বিচারে দেশ বিরোধিতায় গিয়ে ঠেকলো৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান