1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাইবার হামলার দায়ীদের খোঁজে

১৫ মে ২০১৭

গত শুক্রবার থেকে এই শব্দটি বিশ্ব গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে৷ বিশ্বের কমপক্ষে দুই লক্ষ কম্পিউটারের র‍্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি ওয়ানাক্রাই হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2czgr
Cyber Angriff
আক্রান্ত একটি কম্পিউটারছবি: picture-alliance/empics/Yui Mok

বিশ্বের প্রায় দেড়শোটি দেশের কম্পিউটার ব্যবহারকারী ওয়ানাক্রাইয়ের মুখোমুখি হয়েছেন৷ এর মধ্যে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে সরকারি, বেসরকারি সংস্থাও রয়েছে৷ মার্কিন প্যাকেজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফেডেক্স, ইউরোপের গাড়ি নির্মাতা, স্পেনের টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান, ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা, রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জার্মানির রেল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান – এ সবই ওয়ানাক্রাইয়ের শিকার হয়েছে৷ ফলে হাসপাতালে রোগীদের সেবাদানে বিঘ্ন ঘটা থেকে গাড়ি উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যহত, ইত্যাদি ঘটনা ঘটেছে৷ চীনের সিকিউরিটি সফটওয়্যার প্রোভাইডার কিহু ৩৬০ বলছে, সরকারি সংস্থা সহ চীনের প্রায় ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠান ওয়ানাক্রাইয়ের শিকার হয়েছে৷ বাংলাদেশও এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ‘ম্যালওয়্যার টেক’ জানিয়েছে৷

সোমবার অফিস খোলার পর হামলার মাত্রা আরও বেশি হতে পারে বলে সপ্তাহান্তে আশংকা করেছিলেন বিশ্লেষকরা৷ তবে কিছু হামলার ঘটনা ঘটলেও সেটি আশংকাজনক পর্যায়ে নয় বলে জানা গেছে৷

যেভাবে শুরু

মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমের একটি নিরাপত্তা ত্রুটিকে পুঁজি করে হ্যাকাররা একে একে সাইবার হামলা শুরু করে৷ এতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ-র ডেভেলপ করা একটি ডিজিটাল কোড ব্যবহার করা হয়েছে বলে রবিবার জানান মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান আইন কর্মকর্তা ব্র্যাড স্মিথ৷ মস্কো ভিত্তিক কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি ল্যাবের গবেষকরা বলছেন, ডকুমেন্ট ডাম্পের অংশ হিসেবে এই কোড ফাঁস হয়ে গিয়েছিল৷

হামলা দেখতে এরকম: ক্ষতিগ্রস্ত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মনিটরে একটি ইমেজ ফুটে ওঠে৷ সেখানে লেখা আছে, ‘‘ওহ, আপনার ফাইলগুলো এনক্রিপ্টেড হয়ে গেছে৷’’ ফাইল ফিরে পেতে বিটকয়েনের মাধ্যমে ৩০০ ডলার দাবি করা হয়৷ তিনদিনের মধ্যে না দিলে পরিমাণ দ্বিগুণ করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়৷ আর সাতদিনের মধ্যে অর্থ না পেলে ফাইল মুছে দেয়া হবে বলে জানানো হয়৷ দেখা গেছে, অনেক ব্যবহারকারীর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এনক্রিপ্টেড হয়ে গেছে৷ সেগুলো আর খোলা যাচ্ছে না৷ অর্থ না দিলে তথ্য মুছে যাওয়ার ভয়ে ইতিমধ্যে অনেকে টাকা দিয়েও দিয়েছেন৷ একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে, ফাইল ফিরে পেতে সোমবার এশীয় সময় বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৩৯ হাজার ডলার প্রদান করেছেন ব্যবহারকারীরা৷ তবে বিশেষজ্ঞরা এভাবে অর্থ না দিতে ক্ষতিগ্রস্তদের পরামর্শ দিয়েছেন৷ ক্যাসপারস্কি জানিয়েছে, তারা ফাইল খোলার ব্যবস্থা করতে একটি টুল বের করার চেষ্টা করছে৷

ওয়ানাক্রাই হামলাটি একটি অনন্য হামলা বলে জানিয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইউরোপোল৷ কারণ একজন ব্যবহারকারী ভুয়া ইমেল কিংবা কোনো ভুয়া অ্যাটাচমেন্ট খুললে তাঁর কম্পিউটার ছাড়াও একই নেটওয়ার্কে থাকা অন্য কম্পিউটারও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

ইউরোপোল সোমবার জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী এই সাইবার হামলার পেছনে কে বা কারা আছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু হয়েছে৷ সংস্থার মুখপাত্র বলছেন, হামলার জন্য কারা দায়ী তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷ তবে ফাইল ডিক্রিপ্ট করার টুল বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি৷

মাইক্রোসফটের উদ্যোগ

মাইক্রোসফট মার্চ মাসে উইন্ডোজ এক্সপি ও তার চেয়ে পুরনো অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সিকিউরিটি প্যাচ রিলিজ করেছিল৷ সেটি যারা ডাউনলোড করেননি তাদের কম্পিউটার হামলার শিকার হয়েছে৷ ঘটনা শুরু হওয়ার পরপরই মাইক্রোসফট জরুরি ভিত্তিতে আবারও ঐ সিকিউরিটি প্যাচ রিলিজ করেছে৷

জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...