1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বৃহস্পতিবার ইরানে আরও বিক্ষোভের সম্ভাবনা

১৮ জুন ২০০৯

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মির হোসেন মুসাভি তাঁর অনুগামীদের শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় শোক দিবস পালনের ডাক দিয়েছেন৷ মার্কিন প্রশাসন ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷

https://p.dw.com/p/ISSA
খাতামি ও মুসাভি শনিবার এক সমাবেশের আয়োজন করতে চানছবি: AP

বিক্ষোভের নতুন মাত্রা

বৃহস্পতিবার ইরানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন হতে পারে৷ গত কয়েক দিনের বিক্ষোভে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের স্মরণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মির হোসেন মুসাভি এদিন জাতীয় শোক দিবস পালনের ডাক দিয়েছেন৷ নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মুসাভি বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে যাঁরা প্রতিবাদ দেখিয়েছেন, গত কয়েক দিনে তাঁদের সঙ্গে বে-আইনীভাবে হিংসাত্মক সংঘর্ষ চালানো হয়েছে, যার ফলে অনেক দেশবাসী আহত বা শহিদ হয়েছেন৷ আমি জনগণের উদ্দেশ্যে মসজিদে গিয়ে অথবা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে তাঁদের পরিবারের প্রতি সংহতি দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছি৷’’ – বলেন মুসাভি৷ মুসাভির ওয়েবসাইটে শনিবার আরও এক সমাবেশের উল্লেখ করা হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, সংস্কারপন্থী ধর্মীয় নেতারা তেহেরান শহরের গভর্নরের কাছে ঐ সমাবেশ আয়োজনের অনুমতি চেয়েছেন, যাতে মুসাভি এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ খাতামি অংশ নিতে চান৷ তাঁরা দুজনেই এক যৌথ বিবৃতিতে মুসাভির গ্রেফতার হওয়া অনুগামীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন৷

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী গত কয়েক দিনের বিক্ষোভ চলাকালীন ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ তবে দেশী-বিদেশী সংবাদ-মাধ্যমের কাজকর্মের উপর নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রায় কোনো খবরই সঠিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না৷

বৃহস্পতিবারের পরিকল্পিত বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের নেতৃত্ব দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে – এমন কিছু আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ সম্পর্কে বার বার সতর্ক করে দিলেও আয়াতুল্লাহ হোসেইন আলী মোন্তাসেরি তাঁর ওয়েবসাইটে মন্তব্য করেছেন, যে প্রতারণার কারণে দেশের বর্তমান ইসলামী শাসন ব্যবস্থা তার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বৈধতা হারিয়েছে৷

মার্কিন হস্তক্ষেপ অবাঞ্ছনীয়, না কাম্য?

এদিকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ইরানের নির্বাচন সম্পর্কে মার্কিন বিবৃতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ ইরানের মতে, এই সব বিবৃতির মাধ্যমে সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, ইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় সুইজারল্যান্ড সেদেশে মার্কিন স্বার্থের দেখাশোনা করে৷ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য ইরানের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে৷ ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে ইরানের মানুষের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখানোর অধিকারের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সমর্থন জানিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস৷

ইরান একদিকে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ করছে – অন্যদিকে ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইরানের প্রশ্নে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা পালন না করার অভিযোগও উঠছে৷ ওবামা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, যে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত বিতর্কের নিষ্পত্তি সেদেশের মধ্যেই ঘটতে হবে৷ অযথা মার্কিন হস্তক্ষেপ ঘটলে হিতে বিপরিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে অতীতে মার্কিন ভূমিকার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ক্ষমতাসীন ধর্মীয় নেতৃত্ব নতুন করে মার্কিন বিরোধিতা ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষকের ধারনা৷ বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের পর প্রেসিডেন্ট ওবামা সেদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক পথে বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি সহ বাকি বিষয়গুলি নিয়ে দ্রুত সংলাপ শুরু করতে আগ্রহী৷ ইরানকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অতীত মার্কিন নীতির বদলে অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়ে সরাসরি ইরানের সঙ্গে এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায় ওবামা প্রশাসন৷

প্রতিবেদক: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম