ভারতের সমালোচিত ধর্মগুরুরা
ভারতে ধর্মগুরুদের কোনো কমতি নেই৷ কয়েকজন তো নিজেরাই নিজেদের ‘ঈশ্বর’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন৷ আবার কেউ কেউ আছেন, যাদের কথা আর কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই৷ ছবিঘরে থাকছে ভারতের সমালোচিত কিছু ধর্মগুরুর কথা৷
গুরমিত রাম রহিম সিং
ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিং নিজেকে ‘সব সম্প্রদায়ের ঈশ্বর’ বলে ঘোষণা করে৷ দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে ২০০২ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়৷ সেই মামলায় রাম রহিম সিংকে দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত৷ ২৫ আগস্ট আদালত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করলে তার ভক্তরা দুই রাজ্যজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়৷ নিহত হয় ৩৮ জন৷
জাকির নায়েক
জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ইসলামি জঙ্গিবাদে মদদ দেয়া অভিযোগ এনেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার৷ তাঁর বিষয়ে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশকে৷ গত বছরের জুলাইতে ঢাকায় হোলি আর্টিজেন ক্যাফেতে হামলাকারী জঙ্গিরা নায়েকের কথা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে৷ ঐ বছর থেকেই ভারতের বাইরে অবস্থান করছেন তিনি৷
রাধে মা
ভারতীয় সংস্কৃতিতে মা শব্দটি ভীষণ পবিত্র৷ কিন্তু কিছু ভণ্ড এর সুযোগ নেয়৷ রাধে মা তাদের একজন৷ গুজরাটে এক পরিবারের সাতজন সদস্যকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ এছাড়া পণ দিতে বাধ্য করা, আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ রয়েছে, যার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷
রামবৃক্ষ যাদব
২০১৬ সালে উত্তর প্রদেশের মথুরায় পুলিশের গুলিতে মারা যায় রামবৃক্ষ যাদব৷ সেখানকার প্রশাসন অবধ এর ভূমি তাদের দখল মুক্ত করতে গেলে রামবৃক্ষ যাদবের স্বাধীন ভারত সুভাষ সেনার সশস্ত্র গুণ্ডারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে৷
স্বয়ম্ভূ সন্ত রামপাল
নিজেকে সন্ন্যাসী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু তার বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র, পেট্রোল বোমা বানানো, অস্ত্র রাখার অভিযোগ রয়েছে৷ তার আশ্রমে নাকি নারীদের টয়লেটে ক্যামেরাও পাওয়া গিয়েছিল৷
আসারাম বাপু
নামটা কেউ এখনও ভুলে যায়নি৷ বিপুল ক্ষমতার অধিকারী৷ ২০১৩ সালে ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ে৷ ‘বাবার’ বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে গোটা দেশ তোলপাড় হয়৷ জল গড়ায় আদালতে৷ আসারাম এবং তার সুপুত্র, দু'জনেই গ্রেপ্তার হয়ে জেলে গেলেন এবং শেষ পর্যন্ত বিচারে আসারাম দোষীও প্রমাণিত হলেন৷ তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হলো৷
স্বামী নিত্যানন্দ
ইনিও এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু৷ ২০১০ সালে স্টিং অপারেশে টিভির পর্দায় ফাঁস হয় তাঁর কীর্তি৷ দক্ষিণের এক অভিনেত্রীর সঙ্গে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখা যায় বাবাকে৷ সেই ভিডিও সম্প্রচারিত হতেই হুলস্থূল পড়ে যায়৷ সিআইডি তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বাবাকে৷ বাবার গ্রেপ্তারিতে ভক্তকূল আকুল হয়ে প্রতিবাদ জানায়৷
জয়েন্দ্র সরস্বতী
কাঞ্চি কামকোঠী পিঠের জয়েন্দ্র সরস্বতীকে ২০০৪ সালের নভেম্বরে সেখানকার ম্যানেজার শংকর রামণকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ২০০৫ সালের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলা তামিলনাড়ু থেকে সরিয়ে পন্ডিচেরি পাঠিয়ে দেয়৷ যদিও পরে সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়৷
নির্মল বাবা
২০১২ সালে উত্তর প্রদেশের নির্মল বাবার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও ধান্দাবাজির অভিযোগ আনা হয়৷ টেলিভিশনে মানুষকে অদ্ভুত সব পরামর্শ দিতে দেখা যেত তাকে৷ যেমন সিঙ্গারার সাথে ঝাল না খেয়ে মিষ্টি চাটনি খেলে দুঃখ দূর হয়৷
সন্ত সাঁই বাবা
২০০৫ সালে সন্ত সাঁই বাবার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা করা হয়৷ ২৭ বছর বয়সি এক যুবক তার বিরুদ্ধে যৌন নীপিড়নের অভিযোগে মামলাটি করে৷ এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে৷ তবে পরের বছরই রাম তার মামলা উঠিয়ে নেয়৷
বিক্রম চৌধুরী
হট যোগ বিখ্যাত হয়েছিল বিক্রম চৌধুরির কল্যাণে৷ একাধিক যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে তার নামে৷