1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘ভীষণ সাহসী গেরিলা, দুর্ধর্ষ যোদ্ধা আজম খান’’

৮ জুন ২০১১

বাংলাদেশের পপগুরু বা পপসম্রাট হিসেবে খ্যাত আজম খান৷ ১৯৫০ সালে জন্ম নেওয়া আজম খান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন৷ গত ৫ জুন, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্যান্সার আক্রান্ত এই শিল্পী, মুক্তিযোদ্ধা৷

https://p.dw.com/p/11WjS
Symbolbild Konzert
প্রতীকী ছবিছবি: Fotolia/photocreo

একাত্তরে যুদ্ধ শুরুর পর আজম খানের গন্তব্য ছিল আগরতলা৷ ঢাকা থেকে পুরো পথটাই তিনি পেরিয়েছেন, পায়ে হেঁটে, দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে৷ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে আজম খান গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভারতের মেলাঘর শিবিরে৷ সেই শিবিরেই তাঁকে দেখেছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বড় ছেলে রুমী৷ রুমী স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হন৷ তবে যুদ্ধকালীন সময়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করে আজম খানের কথা বলেছিলেন তিনি৷ জাহানারা ইমাম তাঁর ‘‘একাত্তরের দিনগুলি'' বইতে রুমী'র বলা মেলাঘরের গল্প তুলে ধরেন এভাবে,

‘‘সে রাতে টিলার মাথায় দাঁড়িয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি কি, একটা তাঁবুতে আলো জ্বলছে, আর সেখান থেকে ভেসে আসছে গানের সুর:

হিমালয় থেকে সুন্দরবন হঠাৎ বাংলাদেশ

বুঝলাম আজম খান গাইছে৷ আজম খানের সুন্দর গানের গলা৷ আবার অন্যদিকে ভীষণ সাহসী গেরিলা, দুর্ধর্ষ যোদ্ধা৷ সেদিন সেই রাতে চারদিক ভীষণ অন্ধকার, অন্যসব ব্যারাক আর তাঁবুর সবাই বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে গেছে৷ ন'টা-দশটাতেই মনে হচ্ছে নিশুতি রাত৷ ঐ একটা তাঁবুর ভেতর হারিকেনের আলো ছড়িয়ে সাদা রঙের পুরো তাঁবুটা যেন ফসফরাসের মতো জ্বলছে''৷

18.07.2006 projekt zukunft fragezeichen
এই ছবিটিকেই খুঁজছেন আপনি৷ ছবিটির তারিখ 08.06.2011 এবং কোড: 1032 পাঠিয়ে দিন bengali@dw-world.de ঠিকানায় অথবা এসএমএস করুন 0088 0173 030 2205, ভারত: 0091 98309 97232 নম্বরে৷ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিততে পারেন আকর্ষণীয় সারপ্রাইজ গিফট…ছবি: DW-TV

ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে আজম খান কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন৷ ঢাকায় একাধিক গেরিলা অভিযানের নায়ক ছিলেন এই পপগুরু৷ ঢাকায় অভিযান চালাতে গিয়ে আজম খান বাম কানে আঘাত পান৷ পরবর্তীতে এই আঘাত ভুগিয়েছিল তাঁকে৷

পপগুরু আজম খানের খুব কাছের বন্ধু গণসংগীত ও লোকসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর৷ তিনি বলেন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে একসঙ্গেই অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা দু'জন৷ গানের সুরে আন্দোলনকে জাগিয়ে তুলেছিলেন দুই বন্ধু৷

ফকির আলমগীর বলেন, আজম খানের মধ্যে একটা স্বাধীন চেতা, দ্রোহী মন ছিল৷ সেই চেতনা থেকেই তিনি যুদ্ধে গিয়েছিলেন৷

ক্যান্সারের সঙ্গে কয়েক মাস যুদ্ধের পর আজম খান গত পাঁচ জুন, সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন৷ ফকির আলমগীর জানান, পপগুরুর ইচ্ছা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখে যাওয়া৷ সংগীতের মধ্য দিয়ে একটি শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়তে চেয়েছিলেন আজম খান৷ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর সেই আন্দোলন থেমে যেতে পারে না, এমনটাই মনে করেন তাঁর ভক্ত, অনুরাগীরা৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক