1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিউনিখের আনাচেকানাচে রহস্যের গন্ধ

২ জুন ২০২২

জার্মানির বাভেরিয়া রাজ্যের রাজধানী মিউনিখ পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এক গন্তব্য৷ কিন্তু দৃষ্টব্যগুলির অনেক রহস্য এমনকি শহরের মানুষেরও অজানা৷ এক গাইড সেই সব রহস্য উন্মোচন করে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/4C9xL
Deutschland Coronavirus Zweiter Shutdown München
ছবি: Sachelle Babbar/Zumapress/picture alliance

করোনা মহামারি ভ্রমণ কঠিন করে না তুললে প্রতি বছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ জার্মানির দক্ষিণে মিউনিখে আসেন৷ শহরের কেন্দ্রস্থলে মারিয়েনপ্লাৎস ও ৮৫ মিটার টাওয়ারসহ নতুন টাউন হল কিছুতেই চোখ এড়িয়ে যাবার জো নেই৷ সেখানেই প্রথম রহস্য লুকিয়ে রয়েছে৷ এমনকি সব স্থানীয় মানুষও এই সব রহস্যের কথা জানেন না৷শহরের গাইড স্টেফানি সিমারমান জানালেন, ‘‘অনেকেই যেটা জানেন না, সেটা হলো এই নতুন টাউন হলের মূল আকর্ষণই হলো আইন বিষয়ের লাইব্রেরি৷ আর্ট নুভো শৈলির অপূর্ব নিদর্শন৷ আমি আজ সেটা দেখাবো৷''

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে নতুন এই টাউন হল গড়ে তোলা হয়েছিল৷ নিও গথিক শৈলিতে ডিজাইন করা হলেও একটি ব্যতিক্রম রাখা হয়েছিল৷ ১৯০৬ সালে ১০ মিটার উঁচু এই ঘরে আইন বিষয়ক গ্রন্থাগার চালু করা হয়৷ আজও সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ স্টেফানি জানালেন, ‘‘মিউনিখ শহরের নতুন টাউন হল ভবন ঘুরিয়ে দেখানোর সময় জুরিডিক্যাল লাইব্রেরি অবশ্যই একটা বড় আকর্ষণ৷ সেখানে নিয়মিত চলচ্চিত্রের শুটিং হয় জেনে অনেক অতিথি অবাক হন৷ ‘ক্যাবারে' চলচ্চিত্রে লাইজা মিনেলি এই সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসেছিলেন৷ অনেকেই সেটা ভাবতে পারেন না৷''

জার্মান ফুটবলের সব অনুরাগী এই বারান্দাটি চেনেন৷ জার্মানির সবচেয়ে সফল ফুটবল ক্লাব কোনো টুর্নামেন্ট জিতলেই সেখানে উৎসবে মেতে ওঠে৷ স্টেফানি সিমারমান বলেন, ‘‘আসলে বেশিরভাগ মানুষই জানেন, যে এফসি বায়ার্ন ক্লাবের খেলোয়াড়রা সাধারণত এখানে দাঁড়ান৷ প্রায় চার বছর ধরে সেখানে সত্যি মৌমাছির পছন্দের গাছ বেড়ে উঠছে৷ সেগুলি এত বড় হয়, যে উপরে দাঁড়ালোও ভালো করে নীচে তাকানো যায় না এবং অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করা যায় না৷''

রহস্য আর সৌন্দর্যে ভরা মিউনিখ

১৯৭০-এর দশকের শুরুতে জায়গাটি শুধু পথচারিদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল৷ তখন থেকেই ইউরোপের দক্ষিণ অংশের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে৷ স্টেফানি বলেন, ‘‘নতুন টাউন হলের কাছেই মেরির স্তম্ভ রয়েছে৷ অনেকেই জানেন, এটির জন্যই চত্বরের নাম মারিয়েনপ্লাৎস রাখা হয়েছে৷ কিন্তু আরও একটি রহস্য রয়েছে, যা এবার আমি দেখাবো৷''

উল্লেখ্য, ১৬৩৮ সালে ১১ মিটারেরও বেশি উঁচু মেরির স্তম্ভ গড়ে তোলা হয়েছিল৷ স্টেফানি সিমারমান বলেন, ‘‘অনেকেই যেটা জানে না, সেটা হলো মারিয়ার মুকুটের নীচে সত্যি এক রিলিকুয়ারি ক্যাপসুল লুকিয়ে রয়েছে৷ সেটি সব রকম পরিস্থিতিতেই নিরাপদ রয়েছে৷ আমাদের শহরের পৃষ্ঠপোষক হোলি বেনোর একটি হাড় সেখানে রয়েছে৷ আরও এমন নমুনা রয়েছে৷ ফলে মেরির স্তম্ভ খোলা আকাশের নীচে গির্জার বেদির মতো৷ প্রতি রোববার সকাল সাতটায় সেখানে গোলাপের স্তবক রেখে প্রার্থনা করা হয়৷ যে কেউ সেই প্রার্থনায় অংশ নিতে পারে৷''

মাছের ফোয়ারা নামটির পেছনেও অতীতে হাটের দিনে মাছ বিক্রির রীতির প্রতিফলন ঘটছে৷ আজ মারিয়েনপ্লাৎস এলাকায় দেখাসাক্ষাৎ করতে হলে মিটিং পয়েন্ট হিসেবে স্থানীয় মানুষ সেই ফোয়ারাটিকেই বেছে নেন৷ স্টেফানি সিমারমান বলেন, ‘‘মিউনিখেরও অনেক মানুষ যেটা জানেন না, সেটা হলো সেখানে নতুন কসাইদের স্নান করানো হয়৷ সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রশিক্ষণের শেষে শিক্ষানবিশদের কসাই হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ তবে শীতের কারণে প্রতি তিন বছর অন্তর সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষানবিশরা পশুর চামড়া গায়ে জড়িয়ে ফোয়ারার পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং দর্শকদের গায়ে পানি ছিটিয়ে দেন৷''

শেষের রহস্যটি সবার কাছেই দৃশ্যমান৷ তা সত্ত্বেও অনেকেই লিন্ডওয়ার্মের পাশ কাটিয়ে চলে যান৷ স্টেফানি বলেন, ‘‘অতীতকালে সেটি নাকি সত্যি মারিয়েনপ্লাৎস এলাকার চারিদিকে ঘুরে বেড়াতো৷ আরও গভীরে প্রবেশ করতো এবং অবশেষে এই জায়গায় পৌঁছয়৷ বিষাক্ত নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস ছড়িয়ে দিয়ে সেটি মিউনিখে প্লেগ এনেছিল বলেও অপবাদ রয়েছে৷''

সৌভাগ্যবশত মিউনিখে এখন আর প্লেগ নেই৷ জার্মানির দক্ষিণের এই শহর ভ্রমণের যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷

ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি