1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোবাশ্বার কি সত্যিই ডিজিএফআই-র কাছে?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ নভেম্বর ২০১৭

ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মোবাশ্বার হাসানকে বাংলাদেশের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) তুলে নিয়ে গেছে৷ প্রতিবেদনের অন্যতম প্রতিবেদক তাসনিম খলিল বলেছেন, ‘‘মোবাশ্বার এখন ডিজিএফআই-র কাছে আছে৷’’

https://p.dw.com/p/2o4j2
মোবাশ্বার হাসান
মোবাশ্বার হাসানছবি: privat

‘দ্য অয়্যার’ নামের ওই অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ২২ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘বাংলাদেশ অ্যাকাডেমিক মোবাশ্বার হাসান হেল্ড বাই মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি’৷ প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন বাংলাদেশে কর্মরত ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিল৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ নভেম্বর আগারগাঁও আইডিবি ভবনে ইউএন অফিসে একটি মিটিং-এ যোগদান শেষে মোবাশ্বার হাসানকে ডিজিএফআই তুলে নিয়ে যায়৷ তাঁকে আটকের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়৷’’

সুইডেনে অবস্থানরত সুইডিস-বাংলাদেশি সাংবাদিক তাসনিম খলিল এ নিয়ে টেলিফোনে কথা বলেছেন ডয়চে ভেলের সঙ্গে৷ তিনি দাবি করেন, ‘‘তাকে ডিজিএফআই পিক করেছে৷ সে যখন আইডিবি ভবন থেকে বের হয়, তখন সে একটা উবার কল করে৷ তাকে ওখান থেকেই পিক করা হয়৷ তবে সে উবারে উঠতে পেরেছে কি পারে নাই, তা আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি৷ তবে তাকে ডিজিএফআই পিক করেছে এবং এখন সে তাদের কাছেই আছে৷ আমাদের দু'টি সোর্স এটা কনফার্ম করেছে৷’’

তুলে নেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তাসনিম খলিল বলেন, ‘‘আমাদের পলিটিক্যাল সোর্স কিছু কারণ বলেছে৷ যেহেতু ডিজিএফআই এবং সিভিলিয়ান গভর্নমেন্টের মধ্যে পার্থক্য আছে৷ আমরা ডিজিএফআই-র একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি অন দ্য রেকর্ড৷ তিনি বলেছেন, তারা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না৷ আমরা ধরে নিচ্ছি ওই কারণগুলো এখনো প্রতিষ্ঠিত না, তাই আমরা সেগুলো এখন বলতে চাইছি না৷’’

আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি আমাদের প্রথম এই তথ্য দেন: তাসনিম খলিল

মোবাশ্বার হাসান এখন কোথায়, কেমন আছেন – জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ডিজিএফআই-র কাছে যে এখন আছেন, এটা ঢাকার ওয়াকিবহাল মহল জানে৷ সে এখনো বেঁচে আছে৷ আমার ধারণা কোনো কিছু একটা নিয়ে তাকে ইন্টারোগেট করা হচ্ছ৷’’

তিনি বলেন, ‘‘মোবাশ্বারের বোনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে৷ তারা এ নিয়ে কিছু জানে না৷ তারা পুরোপুরি অন্ধকারে আছে৷’’ মোবাশ্বার ইউএন অফিসে কেন গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তাসনিম বলেন, ‘‘সে একজন স্কলার৷ সে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একটি প্রজেক্টে কাজ করে৷ সেই প্রজেক্টের ফান্ডিং করে ইউএনডিপি৷’’

মোবাশ্বারকে যে ডিজিএফআই তুলে নিয়েছে তা যে সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হলেন, তা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য – এই প্রশ্নের জবাবে তাসনিম বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি আমাদের প্রথম এই তথ্য দেন৷ এরপর আমরা ইন্ডিপেনডেন্টলি ভেরিফাই করেছি৷ সিকিউরিটি পার্সনের ম্যাধ্যমেও আমরা ভেরিফাই করেছি৷ তাকে আইডিবি ভবনের অল্প কিছু দূর থেকে যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই তথ্য বাংলাদেশের অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছেও আছে৷’’

সুইডেনে থেকে এসব তথ্য জানার উপায় সম্পর্কে তাসনিম খলিল বলেন, ‘‘আপনার সঙ্গেও তো আমি কথা বলছি৷ এখন তো যোগাযোগের নানা মাধ্যম আছে৷ আমার নিজস্ব সোর্স আছে৷ আমি এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে যা বলেছি, তা তো সঠিক প্রমাণ হয়েছে৷’’

আমার ভাইকে তুলে নেয়ার ব্যাপারে যাদের কথা বলা হচ্ছে, এ সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না: তামান্না তাসনিম

এদিকে মোবাশ্বারের ছোট বোন তামান্না তাসনিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি দ্য অয়্যার-এর ওই প্রতিবেদনটি পড়েছি৷ তবে আমার ভাইকে তুলে নেয়ার ব্যাপারে যাদের কথা বলা হচ্ছে, এ সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না৷ আমরা এখনো তার কোনো খোঁজ বা তার নিখোঁজের ব্যাপারে নতুন কোনো তথ্য পাইনি৷’’

এ বিষয়ে ডয়চে ভেলে ডিজিএফআই-এর কোনো বক্তব্য জানতে পারেনি৷ তবে দ্য অয়্যার-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘ডিজিএফআই-এর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মোবাশ্বারকে তুলে নেয়ার ব্যাপারে তারা কিছু জানে না৷ তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই৷’’

দ্য অয়্যার-এর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘‘একজন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা জানিয়েছেন, মোবাশ্বার বিডিপলিটিকোডটকম নামে একটা পোর্টাল চালান, যাতে সম্প্রতি বিতর্কিত কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়৷এটা তাকে আটকের কারণ হতে পারে৷’’

প্রসঙ্গত, মোবাশ্বার বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন৷ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মীয় সম্পৃক্ততাও তাঁর গবেষণার বিষয়৷ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্পের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন৷ সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন৷ এ কারণে সম্প্রতি নিজের বাসায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন তিনি৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...