1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধু

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের পাঠ নেবেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীরা৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা ও মতাদর্শ৷

https://p.dw.com/p/4NMYs
Bangladesch Mujibur Rahman 1972
ছবি: picture-alliance/AP Photo

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ নানা ওঠাপড়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন৷ সেই বর্ণাঢ্য সফর বাঙালি জাতির ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়৷ বদলাতে থাকা আন্দোলনের গতিপথ, মতাদর্শগত সংগ্রাম তাতে অন্য মাত্রা জুড়েছে৷ তারই পাঠ নেবেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আগে ১৯৫৬ সালে৷ এই বিভাগে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে পঠনপাঠন চালু রয়েছে৷ এবার তাতে বিশেষভাবে জুড়ছে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন অর্থাৎ মুজিবুর রহমানের মতবাদ৷

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুকে শুধু বাংলার গণ্ডীতে আটকে রাখলে হবে না৷ এশিয়া ও বিশ্ব রাজনীতিতে তার যে ভূমিকা, সে সম্পর্কে নতুন সিলেবাসে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা৷’’

বৃহস্পতিবার এই বিভাগে উন্মোচন করা হয় মৈত্রী ফলকের৷ ভারতের ৭৫ ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের স্বাধীনতা উপলক্ষ্যে ফলক উন্মোচন করেন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাই-কমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস৷ উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র প্রমুখ৷

শিক্ষাক্ষেত্রে দুই দেশের আদানপ্রদান আরো প্রসারিত করতে উপ হাইকমিশন উদ্যোগী বলে জানান ইলিয়াস৷ তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর চেয়ার স্থাপনের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে৷ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিনিময় ব্যাপকভাবে শুরু করার চেষ্টা চলছে৷’’

যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন ওমপ্রকাশ৷ তার বক্তব্য, ‘‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে৷ বাংলাদেশের কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে৷ মৈত্রী সম্পর্কের মতো কর্মসূচি উভয় দেশের ঐক্যের ভিতকে শক্তিশালী করবে৷’’

মুসলিম লিগের উদারপন্থী অংশ হিসেবে পরিচিত ছিলেন শহিদ সোহরাওয়ার্দি৷ ভারত বিভাজনের অনেক আগে কলকাতায় এসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তরুণ মুজিব৷ এই শহরের মৌলানা আজাদ কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি৷ থেকেছেন কলেজের ছাত্রাবাসে৷ বেকার হোস্টেলের যে ঘরে তিনি থাকতেন, সেটি স্মৃতিকক্ষ হিসেবে সংরক্ষিত রয়েছে৷

বঙ্গবন্ধুকে শুধু বাংলার গণ্ডীতে আটকে রাখলে হবে না: ইমনকল্যাণ লাহিড়ী

সেই অর্থে মুজিবুর রহমান দুই দেশের মধ্যে যোগসূত্র হয়েই রয়েছেন৷ তার চূড়ান্ত পরিণতি পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে ভারতের সমর্থন৷ তরুণ রাজনৈতিক কর্মী থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠার নেপথ্যে যে মতাদর্শগত সংগ্রাম, তার অধ্যয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নিবিড়ভাবে জানতে পারবেন বঙ্গবন্ধুকে৷

ইমনকল্যাণ জানিয়েছেন, পাঠ্যসূচিতে কী কী থাকবে তা চূড়ান্ত হবে সিলেবাস নির্ধারক কমিটির আলোচনায়৷ তারপর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের পাঠদান শুরু হবে৷ যদিও একে ‘মুজিববাদ' শব্দবন্ধের তকমা দিতে রাজি নন এই অধ্যাপক৷ তার ভাষায়, ‘‘মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দর্শন ও ভাবনা তুলে ধরা হবে পাঠ্যে৷ যাদবপুরের বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকরাই পড়াবেন ছাত্রছাত্রীদের৷’’

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে৷ ৪৬তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আকর্ষণের কেন্দ্রে মুজিবের জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ৷ কলকাতা থেকেও এ বিষয়ে বই প্রকাশিত হয়েছে৷ এবার তার রাজনৈতিক জীবন ঘিরে গভীর অধ্যয়নের সুযোগ তৈরি হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে৷

শুধু পশ্চিমবঙ্গেই এই কৌতূহল সীমাবদ্ধ নয়৷ ভারত ও তার বাইরেও একই ধরনের চেষ্টা চলছে৷ বাংলাদেশ উপ হাই-কমিশনের প্রেস সচিব রঞ্জন সেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে কথা চলছে৷ আশা করছি খুব শীঘ্রই শুরু করা যাবে৷ ইতিমধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে৷ আরো কয়েকটি দেশে বাংলাদেশ সরকার বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপনের জন্য কাজ করছে৷’’

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত গবেষণা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকেই প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে যে এই প্রতিষ্ঠানে যদি বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টার করা যায়৷ আমরা মনে করছি এটা ভালো প্রস্তাব৷ মন্ত্রণালয়ের কাছে উপস্থাপনা করা যেতে পারে৷’’

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য