1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হিন্দু অধিবাসীদের ওপর হামলা

২৩ মে ২০১৮

বুধবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, গত আগস্টে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের হিন্দু অধিবাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/2yB5D
২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মংডুর এক গ্রামে পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহের পাশে ক্রন্দনরত দুই হিন্দু নারীছবি: Getty Images/AFP

সংস্থাটির মতে, সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালায় গত বছরের ২৫ আগস্ট৷ একইদিনে তারা কয়েকটি পুলিশ পোস্টেও হামলা চালিয়েছিল, যেখান থেকে এবারের সংকট শুরু৷

এই ঘটনার পরই মিয়ানমারের সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুবই নিষ্ঠুরভাবে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে, যার ফলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন, যারা বহু বছর ধরে সে দেশে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার৷

জাতিসংঘ সেনাবাহিনীর এই ক্র্যাকডাউনকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে আখ্যায়িত করে৷ কিন্তু নানা অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গা জঙ্গিদেরও যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে, যার মধ্যে রাখাইনের উত্তরতম অঞ্চলে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনাও আছে৷

Myanmar - Hinduistische Dorfbewohner massakriert in Rakhine
২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের এই ছবিতে মিয়ানমারের এক পুলিশকে হিন্দুদের মৃতদেহ পাহারা দিতে দেখা যাচ্ছেছবি: Getty Images/AFP

গত সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সেনারা এএফপিসহ বেশ কিছু গণমাধ্যমকে সেখানে নিয়ে যায়, এবং কবর খুড়ে বের করে আনা পঁচা গলা মৃতদেহগুলো দেখায়৷ সে সময় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি৷

তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট বলছে, নতুন একটি তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে যে, উত্তর মংডুতে খ মওঙ সেইক গ্রামে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা ৫৩ জনকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু৷

‘‘এই নৃশংসতা ততটাই ভয়াবহ, যতটা মিয়ানমারের সেনা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালিয়েছে,’’ মন্তব্য করেছেন অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স ডিরেক্টর তিরানা হাসান৷

এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আটজনের জবানবন্দী থেকে মানবাধিকার সংস্থাটি যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তাতে বলা হয়, মাস্ক পরা অনেকগুলো লোক হিন্দু অধিবাসীদের চোখ বন্ধ করে হাঁটিয়ে শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়৷

‘‘তারা পুরুষদের জবাই করে৷ আমাদের বলা হচ্ছিল আমরা যেন সেদিকে না তাকাই৷ তাদের হাতে ছুরি ছিল৷ কারো কারো হাতে কোদাল ও লোহার রড ছিল,’’ ১৮ বছর বয়সি রাজ কুমারি এ সব কথা অ্যামনেস্টিকে জানায়৷

আরেকজন অভিযোগ করে বলেন যে, মানুষের যতটা আগ্রহ রোহিঙ্গা নিধনের বিষয়ে, ততটা আগ্রহ তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তাতে নেই৷

অন্যদিকে, মিয়ানমার সরকারেরও অভিযোগ, আন্তর্জাতিক অঙ্গন রোহিঙ্গাদেরই কেবল চোখে দেখছে, অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ যে কতটা সহিংসতার শিকার সেটি দেখছে না৷

ডেভিড ম্যাথিসন নামের এক বিশ্লেষক বলেছেন, যেহেতু এ ধরনের ঘটনাও ঘটেছে, তাহলে তো মিয়ানমার সরকারের অবশ্যই নিরপেক্ষ তদন্ত করতে দেয়া উচিত৷

এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘সাহায্যকারী সংস্থাগুলোকে, বিশ্লেষকদের ও সাংবাদিকদের না প্রবেশ করতে দিলে সবাই তো মিয়ানমারকেই দোষারোপ করবে৷’’

জেডএ/ডিজি (এএফপি)