1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুদের নিয়ে সাগরের ঝুঁকিপূর্ণ পথে রোহিঙ্গারা

২৭ নভেম্বর ২০২৩

বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাদের মতে, বাংলাদেশ থেকে নৌকাপথে দেশান্তরী হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/4ZUzX
ইন্দোনেশিয়ার আচেহর একটি উপকূলে নৌকায় আসা রোহিঙ্গারা
নভেম্বরে এক হাজার ৮৪জন রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ অঞ্চলে এসে পৌঁছানছবি: Rahmat Mirza/AP/dpa

মিয়ানমার ও বাংলাদেশ, দুই দেশেই, রোহিঙ্গারা কোনো নিরাপদ ভবিষ্যতের সম্ভাবনা নেই বলে এমনটি হচ্ছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার ও সাহায্য সংস্থা মনে করছে৷

২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সহিংসতা থেকে বাঁচতে বহু রোহিঙ্গাদেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আসেন৷ বর্তমানে, প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা বাস করেন বাংলাদেশের কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে৷

আরাকান প্রজেক্ট এই শরণার্থীদের সহায়তার জন্য কাজ করে৷ তার পরিচালক ক্রিস লেওয়ার মতে, ‘‘কিছু বছর আগে পর্যন্তও এসব নৌকায় যেতেন তরুণ পুরুষেরা৷ আজকাল এই নৌকার যাত্রী হয় গোটা পরিবার, বাবা-মা, সন্তান, এমনকি বাকি আত্মীয়রাও৷''

সাধারণত, বর্ষার শেষে অক্টোবর মাস থেকে নৌকায় চেপে এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় রওয়ানা দিয়ে থাকেন রোহিঙ্গারা৷ এমন যাত্রায় নৌকায় ভিড় বেশি হওয়া, পর্যাপ্ত পানীয় জল না থাকা, নৌকা ডুবে যাওয়া বা মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ার মতো ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়

পরিসংখ্যানে প্রকৃত চিত্র

চলতি মাসে, ইন্দোনেশিয়ার আচেহ অঞ্চলে এসে পৌঁছেছেন মোট এক হাজার ৮৪জন রোহিঙ্গা, যার মধ্যে ৩৬০টি শিশুসহ ২৯২জন নারী ও ২৩৮জন পুরুষ ছিলেন৷ এই পরিসংখ্যান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক তথ্য৷

এ বছর নৌকায় চেপে দেশ ছেড়েছেন মোট তিন হাজার ৫৭২জন রোহিঙ্গা৷ পরিসংখ্যান বলছে, এর ৩১ শতাংশই শিশু৷ এছাড়া, এবছর মোট যতজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে নৌকায় যাত্রা শুরু করেছেন, সেই সংখ্যারও ৬৫শতাংশ যাত্রী শিশু৷ এই সংখ্যা গত বছর ছিল ২৭শতাংশ৷

২০২২ বছরটি নৌকাপথে রোহিঙ্গা যাত্রীদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল৷ মোট তিন হাজার ৭০৫জন যাত্রীর মধ্যে প্রায় ৭৫০ যাত্রীই ছিল শিশু৷

যাত্রার ক্লান্ত এক রোহিঙ্গা নারী
নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা শেষে আচেহ উপকূলে পৌঁছানোর পর এক রোহিঙ্গা নারীছবি: Riska Munawarah/Reuters

বাঁচার শেষ চেষ্টায়...

কক্সবাজারে কর্মরত বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘নৌকাপথে শিশুদের যাওয়ার এই চল আগে ছিল না৷’’

রহমানের মতে, বাংলাদেশ বা মিয়ানমারে কোনো আশার আলো না দেখায় বাধ্য হয়ে নৌকার পথ বেছে নেন রোহিঙ্গারা৷ তিনি বলেন, ‘‘যখন একটা গোটা গোষ্ঠী রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ে, ফিরে যাবার কোন উপায় দেখে না, বা যে দেশে আছে, তার সাথে ভালোভাবে মিশতে পারে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই তারা চিন্তিত হয়ে পড়েন পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে৷’’

সাহায্য কর্মীদের মতে, এর সাথে আরেকটি কারণও থাকতে পারে৷ বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরগুলিতে জীবনযাপনের মান অনুন্নত হওয়ার ফলেও অনেক রোহিঙ্গা দেশ ছাড়তে উদ্যোগী হন, বলে তাদের মত৷

এবছর, রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ খাদ্য সাহায্যের অর্থের পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ কমিয়েছে জাতিসংঘ৷ শিবিরের বাসিন্দা সন্তানের বাবামায়েরা তাই নিজেরা আধপেটা খেয়ে থাকছেন৷ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওই টাকা দিয়ে ডিমও কেনা যায় না৷''

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাবার সম্ভাবনাও ক্ষীণ৷ কর্তৃপক্ষ একাধিক বার মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবার কথা বললেও বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগোয়নি৷

কক্সবাজারের বাসিন্দা রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘‘এখন ফিরে যাবার কথা কেউ ভাবছে না৷ কেউ কেউ যে কোনো মূল্যে পালাতে প্রস্তুত৷ মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অনেকে নৌকায় চেপে বিপদে ভরা সাগরের পথে রওয়ানা দেন৷''

এসএস/এসিবি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান