1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বপ্ন এবং জার্মানি, পর্ব ৫

ফারজানা কবীর খান২৩ জানুয়ারি ২০০৯

কোলনের ভুবনখ্যাত গীর্জার আরেকদিকে গেলাম আমি যেখানে তিনজন রাজার হাড় রাখা আছে৷ সেই তিনজন রাজা যারা যীশুর জন্মের পর মা মেরীর সামনে অনেক উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন৷

https://p.dw.com/p/Gelt
কোলনের ভুবনখ্যাত গীর্জাছবি: AP

একই ঘরে রাখা আছে অনেক পোপের দেহ যাঁরা খ্রিষ্টান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন৷

চার্চের চারদিকে রঙবেরঙয়ের কাঁচের উপর রয়েছে পেইন্টিং৷ যেখানে যীশুখ্রিষ্টের ‘লাষ্ট সাপার' এর বর্ণনা মেলে৷এতো ভাস্কর্য আর চারুশিল্প ছড়িয়ে আছে চারদিকে যে একদিনে দেখে শেষ করা সম্ভব নয়৷

ভীষণ ঠান্ডা চারিদিকে৷ কানটুপি, হাতমোজা পরা অবস্থায় চার্চের ভিতর ঘুরে বেড়াচ্ছি এমন সময় চার্চে অবস্থানরত একজন ফাদার আমার কাছে এসে বললেন ‘দয়া করে তোমার মাথার টুপি খুলে ফেল, ঈশ্বরের সামনে কেউ মাথায় টুপি পরবে না'৷ আমি মাথার টুপি খুলে ফেললাম৷

এবার আমার খোঁজার পালা কোলন ডোমের ইতিহাস৷ মনের ইচ্ছার কথা জানালাম সেই ফাদারের কাছে৷ তাঁর কাছ থেকে জানলাম৷ঐ ফাদারের সাথে আলাপচারিতায় জানতে পারলাম কোলন ডোম স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছিল ১২৪৮ সালে আর এর কাজ শেষ হয় ১৮৮০ সালে৷ অর্থাৎ ছয়শত বছরের বেশি সময় লেগেছে এই কোলন ডোম গড়ে তুলতে৷এটি ইউরোপ- আমেরিকায় সবচেয়ে বড় এবং অন্যতম ক্যাথলিক চার্চ৷ ১৯৯৬ সাল থেকে এই চার্চটির দেখাশোনার ভার পড়েছে ইউনেস্কোর কাছে৷ এটি বর্তমানে জার্মানির অন্যতম হেরিটেজ সাইট৷ প্রতিদিন প্রায় বিশ হাজার লোক পরিদর্শন করে কোলন ডোম৷ একসাথে চার হাজার লোক ভিতরে ঢুকতে পারে৷ দুই হাজার ৮০০ মানুষ একসাথে দাঁড়িয়ে এবং ১২০০ মানুষ একসাথে বসে থাকতে পারে৷ এখানে জানলাম কোলন ডোম তৈরি করতে একসময় টাকার অভাব দেখা দিয়েছিল৷ তাই অনেক বছর এটি গুদামঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে৷কোলন ডোম তৈরির পিছনে অনেক অবদান আছে ওই অঞ্চলের মানুষের৷ এর ফান্ড তৈরিতে অর্থের জোগান হয়েছিল রাশিয়া এবং কোলনের অধিবাসীদের কাছ থেকে৷ডোমের ভিতর বারোটি ঘন্টা রয়েছে৷এর মধ্যে চারটি ঘন্টা অনেক গুরুত্ব বহন করে৷

এখন কোলন ডোম যেখানে, সেখানে ৮৭০ সালে আরেকটি চার্চ ছিল৷ কোন এক কারণে ওই চার্চ পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় একই স্থানে কোলন ডোম তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চৌদ্দটি বোমার আঘাতে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল কোলন ডোম৷ কিন্তু অবাক ব্যাপার ভেঙ্গে গুড়িয়ে পড়েনি এই কোলন ডোম৷ তবে কিছু কিছু জায়গার পুনর্নির্মান করতে হয়েছিল৷এখনো প্রতিদিন চলছে এর মেরামতের কাজ৷ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোলন ডোমের এই রূপ সারা জীবন ধরে রাখার৷যখনই কোন পাথর বা অন্য কোন ক্ষতি হয় ঠিক তখনই তারা সেখানে একই ধরনের পাথর বসানোর চেষ্টা করে৷ তারা চায় কোলন ডোমের প্রাচীন রূপ ধরে রাখতে৷