1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ব ব্যাংককে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

হারুন উর রশীদ স্বপন
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ ক্যানাডার আদালতে খারিজ হওয়ার পর বাংলাদেশে চলছে তুমুল আলোচনা৷ সংসদ সদস্যরা বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলার দাবি তুলেছেন৷ তবে প্রধানমন্ত্রী কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি৷

https://p.dw.com/p/2XU5N
USA Wirtschaft Washington DC Zentrale der Weltbank Gebäude Logo
ছবি: ullstein bild - Fotoagentur imo

শুক্রবার ক্যানাডার সংবাদ মাধ্যম জানায়, সেখানকার আদালত পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগকে ‘গুজব ও অনুমান নির্ভর' হিসেবে অভিহিত করেছে৷ মামলার বিচারক নরডেইমার চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই রায় দিলেও শুক্রবার পর্যন্ত তা প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ছিল৷

ক্যানাডার আদালত দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের সব উন্নয়ন প্রকল্পে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ক্যানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন৷ ওই রায়ে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশ-ক্যানাডার দ্বৈত নাগরিক, ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূইয়াকেও অব্যাহতি দেয়া হয়৷

তখন অভিযোগ করা হয়েছিল, ‘‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তারা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের সেতু কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন৷''

ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রীত্ব ছাড়তে হয়, যোগাযোগ সচিব মোশারফ হোসেনকে জেলে যেতে হয়৷ তারপরও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে পদ্মা সেতুতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ চুক্তি বাতিল করে৷ তারপর অবশ্য সরকার নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে৷

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনও পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করে৷ তারা কোনো দুর্নীতির প্রমাণ না পওয়ার প্রতিবেদন দিলেও বিশ্বব্যাংক তা গ্রহণ করেনি৷ কিন্তু এবার ক্যানডার আদালতও দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিল৷

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ আর সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এক বিৃবতিতে বলেছেন, ‘‘বিশ্বব্যাংকের আনা দুর্নীতির অভিযোগটি পদ্মা সেতু ও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছিল৷''

রবিবার রাতে সংসদে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার দাবি তুলেছেন সংসদ সদস্যরা৷ বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে রাষ্ট্রের মর্যদাহানি হয়েছে৷ তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা উচিত৷ রাষ্ট্রের মর্যাদা পুনরুদ্ধারে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা করতে হবে৷'' তিনি সরকারকে বাদী হয়ে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেন৷

বিশ্বব্যাংক অভিযোগ তোলার পর ‘দুর্নীতি' নিয়ে সোচ্চার ছিল তখনকার বিরোধী দল বিএনপি৷ তবে ক্যানাডার আদালতের রায়ের পর বিএনপির মাহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে ক্যানাডার আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা বিএনপির বিবেচনার বিষয় নয়৷ পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক তাদের অর্থ বন্ধ করে দিয়েছিল, এটাই বাস্তবতা৷''

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-ও তখন বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চেয়েছিল৷ ক্যানাডার আদালতের রায়ের পর টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমাদের কথামতো তখন নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তখনই সত্য বেরিয়ে আসতো, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতো না৷ এখন সরকারের উচিৎ বিশ্ব ব্যাংকের আছে জবাবহিতা চওয়া৷ আর এটা একটি প্রক্রিয়ার মাধমে চাইতে পারে বাংলাদেশ৷''

তখন দুদক তদন্ত করেছিল এবং তারা দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি৷ সেই প্রেক্ষাপটে সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘দুদকের তদন্ত তো বিশ্বব্যাংক গ্রহণ করেনি৷ তাই আমরা বলেছিলাম, সবারকাছে গ্রহণযোগ্য একটা তদন্তের কথা৷''

ক্যানাডার আদালতের রায়ের কোনো  আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিশ্বব্যাংক৷ তবে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জিমিয়াও ফান-এর পক্ষে ই-মেইলে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বব্যাংক তার অর্থায়িত প্রকল্পে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে থাকে৷ যখন বিশ্বব্যাংকের একটি তদন্ত শেষ হয়, তখন সেই তদন্তের অনুসন্ধান পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট দেশকে৷ যেন তারা বিবেচনায় নিতে পারে যে, এর মধ্য দিয়ে তাদের জাতীয় আইন ক্ষুন্ন হয়েছে কিনা৷ পরবর্তীতে সেই সংশ্লিষ্ট দেশের পর্যবেক্ষণ বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়৷ প্রকাশিত পর্যবেক্ষণ সেই দেশকেই দেওয়া হয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য