1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেখাতে হবে ছেলেদেরই

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২০ অক্টোবর ২০১৭

হ্যাশট্যাগ ‘‌মি টু'‌, যার অর্থ, আমিও আছি নির্যাতিতের দলে৷ সোশাল মিডিয়ায় এই স্বীকারোক্তির প্রতিক্রিয়ায় অসাধারণ এক উদ্যোগ নিলো কলকাতা পুলিশ৷

https://p.dw.com/p/2mEL7
Deutschland Berlin Protest in Berlin gegen TTIP
ছবি: DWL. Ellis

শুরু হয়েছিল হলিউডের এক প্রযোজকের বিরুদ্ধে এক অভিনেত্রীর আনা যৌন হেনস্থার অভিযোগের প্রেক্ষিতে৷ এমন ঘটনা যে আকছারই ঘটে, সে অশ্লীল ইঙ্গিত বা মন্তব্যই হোক, বা সরাসরি শারীরিক হামলা, মেয়েরা যে ঘরে -বাইরে নিয়মিত, লাগাতার যৌন হেনস্থার শিকার হন— সেটা বোঝাতেই চালু হয়েছিল হ্যাশট্যাগ ‘‌মি টু'‌ প্রচার, স্রেফ এই সামাজিক সমস্যার ব্যাপকতা বোঝাতে৷ পরের কয়েকদিনে সোশাল মিডিয়া ভরে গিয়েছিল মি টু হ্যাশট্যাগ দিয়ে মেয়েদের স্বীকারোক্তিতে৷ অনেকেই খোলাখুলি বলেছেন, বাড়িতে, পথে-ঘাটে, স্কুল-কলেজে, কাজের জায়গায় কীভাবে যৌন লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে তাঁদের৷ অনেকে বলেননি, কিন্তু সেই না বলা কথায় তাঁদের ভেতরের যন্ত্রণাই আরও বেশি প্রকাশ পেয়েছে৷ কলকাতা শহরের অসংখ্য মেয়ে শামিল হয়েছেন এই প্রচারে৷ সত্যিই লোকে সচকিত হয়েছে, গভীর অস্বস্তিতে পড়েছে স্রেফ এটা জেনে যে, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত সমাজেও কত গভীরে শিকড় ছড়িয়েছে যৌন বিকৃতি এবং নিগ্রহের প্রবণতা৷

USA Schauspielerin Alyssa Milano Protest in New York City
নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে প্রতিবাদে নেমেছেন পশ্চিমা অভিনেত্রী আলিসা মিলানোছবি: Reuters/C. Allegri

এই প্রেক্ষিতে অনেক মেয়েই লিখেছিলেন, তাঁরাও নিগৃহিত হয়েছেন কোনও না কোনও সময়ে, এই স্বীকারোক্তির থেকেও বোধহয় বেশি জরুরি ছিল ছেলেদের কবুল করা যে, তাঁরা কখনও কোনও মেয়ের যৌন হেনস্থা করেননি৷ বা যদি করেও থাকেন, তা হলে এই ‘হ্যাশট্যাগমি টু' প্রচার যদি তাঁদের একটুও অন্যভাবে ভাবিয়ে থাকে, তাহলে তাঁরা এটাও প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন যে, ভবিষ্যতে তাঁরা আর অমনটা করবেন না৷ সোজা কথায়, নিগৃহিতা মেয়েদের সহমর্মিতার মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার যতটা জরুরি, তার থেকেও বেশি জরুরি, যে সব ছেলেরা হয়ত নিজেদের নোংরা আচরণের গুরুত্ব না বুঝেই যৌনলাঞ্ছনার সহজ শিকার হিসেবে মেয়েদের বেছে নেয়, তাদের শেখানো, তাদের বোঝানো৷

শ্রাবণী খাঁ

ঠিক সেই কাজটাই করতে এগিয়ে এসেছে কলকাতা পুলিশ৷ হ্যাশট্যাগ মি টু–তে মেয়েদের মন্তব্যের ঢল দেখে কলকাতা পুলিশ তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, ‘‌ডিয়ার বয়েজ'‌ নামে একটি সচেতনতা কর্মসূচি চালু করার কথা, যেখানে ছেলেদেরই বোঝানো হবে, কোন ইয়ার্কিটা চলতে পারে, কোনটা যৌন হেনস্থার শামিল৷ কোন আচরণ রসিকতা নয়, বরং শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ কলকাতার ১০টি ছেলেদের স্কুলে গত এক সপ্তাহে ‘‌ক্লাস'‌ নিতে গেছেন পুলিশের আধিকারিকরা৷ আরও বেশি স্কুলকে খুব শিগগিরই এই ডিয়ার বয়েজ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে৷ খুব যুক্তিসঙ্গতভাবেই প্রচারটা হবে উল্টো দিক থেকে৷ মেয়েদের সাবধান থাকতে বলা নয়, বরং ছেলেদেরই আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠতে শেখানো হবে৷

যদিও ‘হ্যাশট্যাগ মি টু'র বিরুদ্ধ মতও আছে৷ কলকাতার একটি এফ এম রেডিও চ্যানেলে কাজ করেন শ্রাবণী খাঁ৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বললেন, মেয়েদের যৌন হেনস্থা যে হয়, এটা নতুন করে জানানোর কিছু নেই৷ এটা হয়, সব সময়ই হয়ে চলেছে৷ কেউ কেউ এমন ভাব করছেন, যেন তাঁরা প্রথম এমনটা শুনলেন৷ শ্রাবণীর বক্তব্য, এর থেকে অনেক বেশি জরুরি, ঠিক সময়ে প্রতিবাদের সাহসটা মেয়েদের মধ্যে তৈরি করে দেওয়া৷ যাতে তাঁরা বুঝতে পারেন, কোনও হেনস্থার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদটাই একমাত্র পথ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান