1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংলাপের জন্য প্রস্তুত ট্রাম্প

৩১ জুলাই ২০১৮

পরমাণু চুক্তি ত্যাগ, তর্জনগর্জন সত্ত্বেও ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ইরান এখনো সরাসরি সংলাপের ডাকে সাড়া দেয়নি৷

https://p.dw.com/p/32MJJ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি

গোটা বিশ্বের স্বৈরাচারী শাসকদের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক অদ্ভুত আকর্ষণ অনুভব করেন বলে তাঁর অনেক সমালোচক মনে করেন৷ প্রথমে তাঁদের উদ্দেশ্যে তর্জনগর্জন, বিষাদগার, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ দেখিয়ে তারপর সরাসরি সাক্ষাতের প্রচেষ্টা শুরু হয়৷ সাক্ষাৎ হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিচক্ষণ ‘স্টেটসম্যান'-এর মতো তাঁদের প্রতি সৌজন্য দেখান এবং নিজের কৃতিত্ব জাহির করেন৷ সেই সাক্ষাৎ ফলপ্রসূ হলো কিনা, সেই বিষয়টি তাঁর কাছে গৌণ হয়ে পড়ে৷ উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন-এর সঙ্গে ঠিক এমনটাই করেছিলেন ট্রাম্প৷ এবার তিনি ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷

ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজের পরমাণু চুক্তি বাতিল করে সে দেশের উপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ বাকি বিশ্বের উপরেও একই পথে চলার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে অ্যামেরিকা৷ এমন উত্তেজনার মধ্যে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে বিনা শর্তে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুত৷ অথচ কয়েক দিন আগেও তাঁদের মধ্যে টুইট-যুদ্ধ চলছিল৷ হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যুদ্ধের আশঙ্কা এড়াতে তিনি যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুত৷ তবে ইরান সংলাপের জন্য প্রস্তুত কিনা, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন৷

উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি৷ ২০১৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টেলিফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট রোহানির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন৷ তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে ট্রাম্প সংলাপের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তাঁর প্রশাসনের ইরান সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন ঘটছে না৷ মধ্যপ্রাচ্যে কিছু জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি মদত বন্ধ করার মতো কিছু পদক্ষেপ নেবার জন্য ওয়াশিংটন ইরানের উপর চাপ বজায় রাখতে চায়৷ তেহরান তার নীতি বদলালে মার্কিন প্রশাসনও ছাড় দিতে প্রস্তুত৷ 

সংলাপের এই প্রস্তাব সম্পর্কে ইরান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ তাদের মতে, সংলাপের পথে যেতে হলে ওয়াশিংটনকে পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে হবে৷ প্রেসিডেন্ট রোহানির অন্যতম উপদেষ্টা হামিদ আবুতালেবি বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে ইরানের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, বৈরি মনোভাব কমানো এবং পরমাণু চুক্তিতে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে সংলাপের পথে বাধা দূর হতে পারে৷ তবে গত কয়েক সপ্তাহের টুইট যুদ্ধ সত্ত্বেও ইরান কূটনৈতিক সমাধানসূত্রের পথ খোলা রেখেছে৷ রোহানি গত সপ্তাহে বলেন, ইরানের সঙ্গে শান্তি ‘মাদার অফ অল পিস' হতে পারে বলে৷ ওয়াশিংটনের চাপের মুখে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও মুদ্রার পড়তি বিনিময় মূল্য রুখতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনেই সম্ভবত অ্যামেরিকার সঙ্গে সংলাপের ছাড়পত্র দিতে পারেন বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন৷ তবে সে ক্ষেত্রে দু'পক্ষের মুখরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে৷ ২০১৫ সালে অর্থনৈতিক দৈন্য এড়াতে খামেনেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরমাণু চুক্তির প্রতি সম্মতি জানিয়েছিলেন৷

এসবি/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি)