1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গি তৎপরতা রোধে জার্মানি যা করছে

ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম মূলত রাজনীতি, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, শরণার্থী এবং অভিবাসন সম্পর্কিত ইস্যু কভার করেন৷ পাশাপাশি জার্মানি ও ইউরোপে জীবনযাপনের নানা দিকও তুলে ধরেন তিনি৷
আরাফাতুল ইসলাম
১৭ আগস্ট ২০১৬

জার্মানিতে সম্প্রতি কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এর মধ্যে দু’টি হামলার সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেটের’ সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে৷ ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নতুন করে মূল্যায়ন করছে জার্মানি, যা অন্যদের জন্যও উদাহরণ হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/1JjZe
Deutschland neue Spezialeinheit der Bundespolizei BFE+
ছবি: Reuters/H. Hanschke

জার্মানির ভ্যুর্ৎসবুর্গে গত মাসে ট্রেনের মধ্যে এক ব্যক্তি চাকু দিয়ে কুপিয়ে পাঁচ ব্যক্তিকে আহত করে৷ শরণার্থী হিসেবে গত বছর জার্মানিতে আসা সেই তরুণকে তখন গুলি করে হত্যা করে পুলিশ৷ আরেক ঘটনায়, সিরিয়া থেকে জার্মানিতে আসা এক শরণার্থী, যার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হয়েছিল, আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় জার্মানির আন্সবাখে৷ হামলায় সে নিজে নিহত হয়, আহত হয় বেশ কয়েকজন৷ উভয় ঘটনার আগে হামলাকারীরা তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে ভিডিও প্রকাশ করেছিল৷ মিউনিখে আরেক ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিহত হলেও সেটির সঙ্গে আইএসের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি৷

তবে এসব হামলার পর নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে নতুন কিছু উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে জার্মানি৷ এগুলো হচ্ছে:

১. নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো৷

২. ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ দমনে একটি কেন্দ্রীয় ক্রাইম ইউনিট গঠন৷

৩. অপরাধে জড়িয়ে পড়া অভিবাসীদের জার্মানি থেকে দ্রুত বিতাড়ন করা৷

৪. দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে এমন কেউ জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়লে তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া৷

নতুন এসব উদ্যোগের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে আরো জোর পদক্ষেপ৷ জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন,কেননা, গত কয়েকবছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠী তরুণ প্রজন্মের ‘ব্রেইন ওয়াশে' অনলাইন প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করছে৷ এই প্রক্রিয়াটি বেশ লম্বা কিন্তু জঙ্গিদের জন্য কার্যকর হয়ে ওঠে, যখন কাউকে ‘লোন উল্ফ' হিসেবে আক্রমণে ব্যবহার করা যায়৷ এ ধরনের ক্ষেত্রে কোনো একজন ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে কোথাও জঙ্গি হামলা চালায় এবং হামলার আগে জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি নিজের আনুগত্য প্রকাশ করে বার্তা রেখে যায়৷

‘লোন উল্ফ' ধরতে উদ্যোগ

গোয়েন্দাদের পক্ষে সংগঠিত অপরাধী চক্রের প্রতি নজর রাখা যতটা সহজ, ‘লোন উল্ফ' বা হঠাৎ জঙ্গিতে রুপ নেয়াদের প্রতি নজর রাখা ততটাই কঠিন৷ ভ্যুর্ৎসবুর্গে হামলায় জড়িত শরণার্থী গতবছর জার্মানিতে আসার পর বেশ উদার মনোভাব দেখিয়েছিল৷ জার্মান ভাষাও শিখতে শুরু করেছিল৷ কিন্তু তারপরই সে হঠাৎ জঙ্গিবাদের পথ ধরে৷ এ ধরণের ঘটনা প্রতিরোধে জার্মানি তাই অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতার দিকে নজর রাখতে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে নতুন টিম গঠন করছে৷ সামগ্রিকভাবে পুলিশের জন্য বরাদ্দও দুই বিলিয়ন ইউরো বাড়ানো হয়েছে৷

DW Bengali Arafatul Islam
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

বাংলাদেশে গুলশান হামলার আগ পর্যন্ত জঙ্গি তৎপরতা রোধে পুলিশ এবং সরকারের মধ্যে কিছুটা উদাসীনতা থাকলেও বর্তমানে বিষয়টি বেশ গুরুত্ব সহকারেই নেয়া হচ্ছে৷ গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে তারা৷ এছাড়া পুলিশের গুলিতে মারাও গেছে কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গি৷ তবে বাংলাদেশ পুলিশের অনলাইন তৎপরতায় এখনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে৷ এক্ষেত্রে জার্মানির মতো বাংলাদেশেরও বিনিয়োগ করা উচিত৷ বিশেষে করে জঙ্গিদের অনলাইন তৎপরতা রোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতে কাজ করতে হবে৷ পাশাপাশি ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম এবং স্মার্টফোন অ্যাপ নির্মাতাদের সঙ্গে সরকারের সখ্য বাড়াতে হবে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া যায়৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য