1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুধা, সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা

১ এপ্রিল ২০১৪

বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমন যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা৷ এ কারণে এই শতকেই বিশ্বের অনেক মানুষ খাদ্যাভাবে পড়বে, বাড়বে স্বাস্থ্য ঝুঁকি৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানুষে মানুষে হানাহানি৷

https://p.dw.com/p/1BZ34
Dürre in Niger
ছবি: ABDELHAK SENNA/AFP/GettyImages

সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে৷ তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী যে জলবায়ু পরিবর্তন হবে, তার ফলে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে বলেও জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷ নীতি নির্ধারকরা বলেছেন, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের ফলে প্রাকৃতিক যে বিপর্যয় হবে তার রূপটা হবে ভয়াবহ৷ জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ আইপিসিসি-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে৷ ৩২ ভলিউমের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব এই অবস্থা মোকাবিলার জন্য মোটেও প্রস্তুত নয়৷

আইপিসিসি-র সভাপতি রাজেন্দ্র পাচৌরি বলেছেন, বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা যদি ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায় তবে ঝুঁকির পরিমাণও সেই অনুপাতে বাড়বে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব থেকে বিশ্বের কোনো মানুষই রেহাই পাবেন না৷

জাপানের ইয়োকোহামায় পাঁচ দিনের জলবায়ু সংক্রান্ত বৈঠকের পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়৷ এতে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণে দেখা দিয়েছে তারতম্য, ফলে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে এশিয়া ও ইউরোপে৷ শুধু তাই নয়, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে পানি সংকট এবং খরা দেখা দেবে বলেও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে৷ এর ফলে ফসল ভালোমত হবে না, দেখা দেবে খাদ্য ঘাটতি৷

যদিও প্রতি ১০ বছরে ফসলের উৎপাদন ১০ ভাগ বেড়েছে, কিছু জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় তা অপ্রতুল৷ বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের সৃষ্টি হবে এর ফলে মানুষের ক্ষুধা নিবৃত্তি কঠিন হয়ে পড়বে৷ বেড়ে যাবে খাদ্যদ্রব্যের দাম৷ দরিদ্র মানুষেরা চরম খাদ্যাভাবে পড়বেন৷ জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় খাদ্যের ঘাটতির কারণে শুরু হবে হানাহানি৷ এমনকি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মশার উৎপাত এবং পানিবাহিত রোগ ব্যাপক হারে ছড়াবে৷ ফলে দেখা দিবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি৷

বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে প্রবালসহ বেশ কিছু প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী নিশ্চিহ্ন হওয়া আশঙ্কা রয়েছে৷ এই প্যানেল গত বছরের সেপ্টেম্বরে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য প্রাথমিকভাবে দায়ী মানুষের কর্মকাণ্ড৷ তৃতীয় প্রতিবেদনটি এপ্রিলে প্রকাশিত হবে বার্লিনে৷ যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কত মানুষ উদ্বাস্তু হবে তার একটা পরিসংখ্যান তুলে ধরা হবে৷

Bildergalerie Wilderei
গলছে বরফ, হারিয়ে যাচ্ছে শ্বেত ভাল্লুকের মতো বহু জীবছবি: Fotolia/st__iv

তাপমাত্রা বৃদ্ধি

রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই শতকে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে ০.৩ থেকে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এমনকি শিল্পকারখানা যেখানে বেশি সেখানে গড়ে ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে৷ ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রে পানির উচ্চতা বাড়বে ২৬ থেকে ২৮ সেন্টিমিটার৷

সম্মেলনের উপ-সভাপতি ক্রিস ফিল্ড বলেছেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা মানুষকে সহিংস করে তুলবে৷ যার ফলাফল হবে ভয়াবহ৷ এইসব পরিস্থিতি এতই চরম রূপ ধারণ করবে যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না৷''

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ‘‘প্রতিবেদনে যেসব তথ্য উঠে এসেছে, তা আসলেই ভয়াবহ যা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই৷ তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্পও নেই৷''

রিপোর্টে অবশ্য এ কথাও বলা হয়েছে যে, গ্রিন হাউজের কার্বন নির্গমন যদি কমানো যায় তবে নাটকীয়ভাবে এই শতকের শেষ দিকে এসব ঝুঁকি কমে আসবে৷ ২০০৭ সালে আইপিসিসি-র প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ২০০৯ সালে কোপেনহেগেনে বিশ্বনেতারা একমত হন বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে তারা পদক্ষেপ নেবেন৷ কিন্তু কার্বন নিঃসরণ রোধের ব্যাপারে এখনও একমত হতে পারেনি বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো৷

এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য