1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সোশ্যাল মিডিয়া নিরাপদ নয়!

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

প্রায় ৯০ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্কদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তত একটি প্রোফাইল আছে৷ অপরদিকে প্রত্যেক পঞ্চম কিশোর বা কিশোরী কোনো না কোনো ভাবে ‘সাইবার মবিং'-এর শিকার হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2YF6t
প্রতীকী ছবি
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Kahnert

‘‘তোকে দেখতে পারি না! তুই মর!'' বা ‘‘তোকে দেখতে যা বিচ্ছিরি...৷'' – ইন্টারনেটে এ ধরনের গালিগালাজ নাকি প্রতি পাঁচজন জার্মান কিশোর-কিশোরীর মধ্যে একজন অন্তত শুনেছে৷ নয়ত জার্মান কিশোর-কিশোরীদের প্রায় ৮০ ভাগ প্রতিদিন বা সপ্তাহে একাধিকবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে থাকে: তাদের গন্তব্য হল হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, গুগল+, টুইটার, টাম্বলর, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি৷ এই কিশোর-কিশোরীরা হলো ‘ওয়েব ২.০' প্রজন্ম: এরা শুধু ইন্টারনেটের গ্রাহক নয়, এরা ইন্টারনেটের কন্টেন্টও সৃষ্টি করে থাকে – যেমন টেক্স্ট, ফটো বা ভিডিও৷ ফেসবুকই তাদের প্রিয় মিডিয়াম, তার পরেই আসছে ইনস্টাগ্রাম৷

সোশ্যাল মিডিয়ার মজা

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও বা ফটো পোস্ট অথবা শেয়ার করা যায়; যোগাযোগ খোঁজা যায়; বন্ধুবান্ধবদের প্রোফাইল দেখা যায়; নানা ধরনের উৎসব-অনুষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া যায়; চ্যাট করা যায়; মেসেজ পাঠানো যায়; গেমস খেলা যায়৷ সবচেয়ে বড় কথা, বাস্তব জীবনে বন্ধুবান্ধব খুঁজতে যতো সময় লাগে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলোয় তার চেয়ে অনেক সহজে একটা বড় ‘ফ্রেন্ডস সার্কল' গড়ে তোলা যায়৷ জার্মানিতে যেমন কিশোর-কিশোরীদের এক তৃতীয়াংশের সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বন্ধু'-র সংখ্যা ৩০০-র বেশি৷

সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলির ভার্চুয়াল দুনিয়ায় কিশোর-কিশোরীরা ঠিক তাই খোঁজে, বাস্তব জীবনেও তাদের যা প্রয়োজন: বন্ধুবান্ধব, কোনো একটি দল বা গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনুভূতি; অন্যদের সামনে নিজেকে, নিজের ব্যক্তিত্বকে পরিবেশন করা ও তাদের প্রতিক্রিয়া দেখা – এভাবেই একজন কিশোর বা কিশোরীর সত্তা গড়ে ওঠে, সে তরুণ বা তরুণীতে পরিণত হয়৷

আরো মজা লাগে, ইন্টারনেটে নিজের কৌতূহল ও আগ্রহ অনুযায়ী বিশ্বের সর্বত্র অন্যান্য অনুরাগীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে৷ ইন্টারনেটে যোগাযোগ স্থাপন করতে গিয়ে মুখচোরা হওয়ার সম্ভাবনা কম – কাজেই এক ধরনের ফাস্ট ট্র্যাক সামাজিক সাফল্যের আস্বাদ পাওয়া যায়৷ ওদিকে আবার সোশ্যাল মিডিয়ার জগৎটায় অভিভাবক ও বয়োজ্যেষ্ঠদের আনাগোনা ও নজরদারি প্রায় নেই বললেই চলে – যা অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়৷

সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ

সোশ্যাল মবিং-এর কথা আগেই বলা হয়েছে৷ কিন্তু বর্তমানে যে বিষয়টি নিয়ে কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবক বা শিক্ষক-শিক্ষিকা, এমনকি সমাজতাত্ত্বিক ও রাজনীতিকরাও চিন্তিত, সেটি হল ইন্টারনেটে আত্মপ্রদর্শনের প্রবণতা, বিশেষ করে ফটো ও ভিডিও-র মাধ্যমে৷

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
অরুণ শঙ্কর চৌধুরী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

‘এক্সহিবিশনিজম' বা নিজেকে অশালীনভাবে দেখানোর আগ্রহ বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি৷ তারাই সবচেয়ে বেশি এ ধরনের ছবি পোস্ট করে থাকে, একবারও না ভেবে, এর ফল কতো মারাত্মক হতে পারে৷ আজকের বয়ফ্রেন্ড কাল বয়ফ্রেন্ড নাও থাকতে পারে আর তাকে ভালোবেসে পাঠানো ছবিগুলো প্রতিশোধ নেওয়ার মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে৷ বলতে কি, ইন্টারনেটে একবার যে ছবি গিয়ে পড়েছে, তাকে মুছে দেওয়া প্রায় অসম্ভব৷ আর সব ছবিই আজকাল ফটোশপ করা সম্ভব...

কিশোর-কিশোরীদের আরেকটি বিপদ হলো ইন্টারনেটে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক যৌন অপব্যবহারকারীর খপ্পরে পড়া৷ এ সবের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে কিশোর-কিশোরীদের নেট জগতের কিছু বুনিয়াদি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে...

গোল্ডেন রুলস

(১) নিজের ব্যক্তিগত পরিধিকে চিনতে ও রক্ষা করতে শেখো;

(২) নিজের সম্পর্কে ফটো বা তথ্য প্রকাশ করার আগে তার গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্য ফলশ্রুতি নিয়ে চিন্তা করো;

(৩) পরের ফটো বা ভিডিও তাদের অনুমতি ছাড়া আপলোড কোরো না;

(৪) ফটো পুরো নাম দিয়ে ট্যাগ কোরো না আর ছবি তোলার সময় তোমার স্মার্টফোনের জিওলোকেশন বাটনটি ‘অফ' করে রেখো;

(৫) ‘বন্ধু' হিসেবে শুধু তাকেই তালিকায় তুলো, যাকে তুমি ব্যক্তিগতভাবে চেনো;

(৬) নিরাপদ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করো৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চান? তাহলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখতে পারেন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য